আপনাদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত: দাগনভূঞায় আবদুল আউয়াল মিন্টু
Published: 27th, November 2025 GMT
ফেনী–৩ (দাগনভূঞা ও সোনাগাজী) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু আজ বৃহস্পতিবার নিজ এলাকা ফেনীর দাগনভূঞায় আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ শুরু করেছেন। নেতা–কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যর্থনায় আবেগাপ্লুত হয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘আমি এই প্রথম নির্বাচন করতে এসেছি। এর আগে আমি আমার বাবা ও ছোট ভাইয়ের জন্য নির্বাচন করেছি। আজ আপনাদের ভালোবাসা আমাকে অভিভূত করেছে।’
আজ সন্ধ্যায় ফেনী–নোয়াখালী মহাসড়কের দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টে আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে এ কথা বলেন। এর আগে আজ দুপুরে আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনী পৌঁছে শহরের মহাম্মদ আলী এলাকায় পথসভা করেন। সেখান থেকে দাগনভূঞা বিএনপির নেতা–কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। পরে দলীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে গাড়িবহর নিয়ে তিনি নিজ এলাকায় প্রবেশ করেন।
দলীয় মনোনয়ন লাভের পর এই প্রথম নিজ সংসদীয় এলাকায় যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। বর্ষীয়ান এই নেতাকে একনজর দেখতে ও শুভেচ্ছা জানাতে ভিড় করেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতা–কর্মী। নেতা–কর্মীরা হাতে ফুলের তোড়া ও মালা নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন পুরো এলাকা।
কর্মী–সমর্থকদের উদ্দেশে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘দেশের এই কঠিন সময়ে আপনারা যে সাহস ও ঐক্য ধরে রেখেছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে। ইনশা আল্লাহ, আপনাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করলে এলাকার উন্নয়নে আমি সর্বাত্মক কাজ করব।’
গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ
এদিকে দাগনভূঞা উপজেলায় ঢোকার সময় আবদুল আউয়াল মিন্টুর গাড়িবহরে হামলা হয়। বাজারের জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। এতে বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হন। তবে হামলা সত্ত্বেও ওই জায়গায় তিনি পথসভায় বক্তব্য দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সিনিয়র সহসভাপতি কাজী জামশেদ আলমের অনুসারীরা আজ বিকেলে ফেনী–নোয়াখালী মহাসড়কের দাগনভূঞা চৌরাস্তা এলাকায় কয়েকটি বালুবাহী ও খালি ট্রাক দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। এ সময় জিরো পয়েন্ট এলাকায় জামশেদ আলমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলছিল।
হামলা প্রসঙ্গে দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও প্রার্থী আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছোট ভাই আকবর হোসেন ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ‘ফেনী জেলা বিএনপির নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে আজ দাগনভূঞা বাজারে আবদুল আউয়াল মিন্টুর নির্বাচনী গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। আমি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’
এ প্রসঙ্গে কাজী জামশেদ আলম বলেন, আকবর হোসেনের অনুসারীদের মিথ্যা মামলায় গত কয়েক দিন তিনি কারাগারে বন্দী ছিলেন। বুধবার রাতে তিনি জামিনে বের হয়েছেন। তাঁর অনুসারীরা আজ দুপুরে তাঁর সংবর্ধনার আয়োজন করেন। এ জন্য দলীয় নেতা–কর্মীরা দুপুর থেকে তাঁকে বরণ করতে দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন। তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ধানের শীষের প্রার্থী আবদুল আউয়াল মিন্টুকেও বরণ করে নেওয়ার কর্মসূচি ছিল। কিন্তু মিন্টুর বহরে থাকা জেলা যুবদল নেতা মামুনের নেতৃত্বে বেশ কিছু নেতা–কর্মী প্রথমে তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তবে কেউ আবদুল আউয়াল মিন্টুর গাড়িবহরে হামলা কিংবা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেননি বলে দাবি করেন জামশেদ আলম।
হামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজ সন্ধ্যায় প্রার্থী আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত গণমাধ্যমের কর্মীদের বলেন, ‘আমার গাড়িবহরে হামলার তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। খুব শিগগির আপনারা এর উত্তরণ দেখবেন। আমি মনে করি, সব অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।’
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুর রহমান বলেন, দাগনভূঞায় প্রার্থীর গাড়িবহরে কোনো রকম হামলার ঘটনা ঘটেনি। কোনো আহতের খবরও পুলিশের কাছে জানা নেই। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কেউ কোনো ধরনের লিখিত অভিযোগ করেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর দায়িত্ব পালন করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল আউয় ল ম ন ট র গ ড় বহর কর ম দ র দ গনভ ঞ এল ক য় ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
হংকংয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৭৫, কেন এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ল
হংকংয়ের বেশ কয়েকটি সুউচ্চ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৬০ বছরের মধ্যে শহরটিতে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। খবর অনুযায়ী, এ ঘটনায় ২৭০ জনের বেশি মানুষ এখনো নিখোঁজ। হাজার হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এখনো বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন জ্বলছে। ঘন ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে চীনা ভূখণ্ডের আকাশসীমা ছেয়ে ফেলেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আগুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে ‘দায়িত্ব পালনকালে নিহত একজন ফায়ার ফাইটারও’ রয়েছেন।
আগুন লাগার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এ পর্যন্ত যা জানা গেল, সেটা দেখে নেওয়া যাক।
কোথায় এবং কখন আগুন লাগে
বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ৫১ মিনিটে হংকংয়ের তাই পো এলাকায় বৃহৎ আবাসন কমপ্লেক্স ওয়াং ফুক কোর্টে আগুন লাগে।
ওয়াং ফুক কোর্ট ৩১ তলা উচ্চতার আটটি ভবন নিয়ে গঠিত। তাই পো এলাকার কাউন্সিলর মুই সিউ-ফাং বিবিসি চায়নিজকে জানিয়েছেন, এর মধ্যে সাতটি ব্লক আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৯৮৩ সালে নির্মিত এসব ভবনে সংস্কারকাজ চলাকালে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
তাই পো হলো হংকংয়ের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি আবাসিক এলাকা, যা মূল চীনের শেনজেন শহরের কাছাকাছি।
২০২১ সালের সরকারি শুমারি অনুযায়ী, এই কমপ্লেক্সে ১ হাজার ৯৮৪টি অ্যাপার্টমেন্টে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দা বসবাস করেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশের বয়স ৬৫ বা এর বেশি।
আগুন লাগার কারণ কী
আগুন লাগার কারণ অজানা। তবে হংকংয়ের নিরাপত্তা সচিব বৃহস্পতিবার ভোরে জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, আগুন অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে ছড়িয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ভবনের বাইরে জালযুক্ত কাপড় এবং প্লাস্টিকের শিট পাওয়া গেছে—যার কোনোটিই অগ্নিপ্রতিরোধী বলে মনে হচ্ছে না।
ভবনের জানালায় স্টাইরোফোমও পাওয়া গেছে। পুলিশ বলেছে, এসব নির্মাণসামগ্রীর কারণেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে যখন ধোঁয়া উড়ছে, তখন ওই এলাকায় আকাশে উড়োজাহাজ। ২৭ নভেম্বর ২০২৫, হংকং