আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে অধ্যাদেশ জারির দাবি
Published: 25th, October 2025 GMT
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসমূহ নিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ব্যাতীত ২৫ ক্যাডারের বৈষম্যের শিকার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও সুবিধা প্রদান এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে অধ্যাদেশ জারির দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ।
একইসঙ্গে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ৭ কলেজের স্বকীয়তা বজায় রেখে শিক্ষার মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল সংগঠনটির পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের বঞ্চনা লাঘবের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসন ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত ও প্রয়াত মিলে প্রায় ৭৭৮জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ বাকি ২৫টি ক্যাডারের বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত মাত্র ৭২জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়। যাচাই-বাছাইয়ের নামে প্রকৃতপক্ষে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা কোনো কারণ ছাড়াই বাদ পড়ে যান। অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাগণের পদোন্নতির আদেশেও বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
এ সময় তারা ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত সকল কর্মকর্তাদের আবেদন পুনর্বিবেচনা এবং প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো ভুতাপেক্ষ বেতন ভাতাসহ সকল আর্থিক সুবিধা প্রদানের জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ আড়াল করে, অত্যন্ত কম গুরুত্বপূর্ণ ও অযৌক্তিক কিছু বিষয় অন্তর্ভূক্ত করে জুলাই সনদকে দুর্বল করা হয়েছে। এর একটি হলো- সিভিল সার্ভিসে নিয়োগের জন্য তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন। [সরকারি কর্মকমিশন (সাধারণ); সরকারি কর্মকমিশন (শিক্ষা) ও সরকারি কর্মকমিশন (স্বাস্থ্য)] এবং অপরটি হলো- হিসাব বিভাগ থেকে নিরীক্ষা বিভাগ আলাদাকরণ। যদি হিসাব বিভাগকে নিরীক্ষা বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়, তবে প্রি-অডিট কার্যক্রম বিলুপ্ত হবে, যা আর্থিক জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করবে।
তারা বলেন, একটি মেধাভিত্তিক সিভিল সার্ভিস গঠনে উপসচিব পদে কোটা বাতিল করে সকল ক্যাডার থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে অনেকেই। কিন্তু জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পর্যায়ের মোট পদের প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০% এবং অবশিষ্ট ২৫ ক্যাডারের জন্য ৫০% পদ রাখার সুপারিশ করেছে, যা জুলাই বিপ্লবের সাথে সাংঘর্ষিক। জুলাই সনদেও এ বিষয়ের কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তারা বলেন, ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ নিয়ে শিক্ষাখাতে নতুন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। দেশসেরা কলেজগুলো বন্ধ করে অনুমান নির্ভর বা পরীক্ষামূলক কোর্স পরিচালনা সঠিক নয়। তাই, শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণের সুপারিশের আলোকে এবং অংশীজনদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সীমাহীন কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব সিভিল সার্ভিসের অভ্যন্তরে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে এবং একটি গণমুখী, সেবাধর্মী, জনবান্ধব জনপ্রশাসন গড়ে তোলার প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসমূহ নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করতে সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানান।
এ সময় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক ও বিসিএস ইনফরমেশন এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি স ম গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও বিসিএস জেনারেল এডুকেশন এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অধ্যক্ষ আই কে সেলিমুল্লাহ খন্দকার, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ কফিলউদ্দিন ও অধ্যাপক এম এ সামাদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাক্তন পরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস লাইভস্টক এসোসিয়েশনের সহসভাপতি ডা.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত দ র অবসরপ র প ত ত ২৫ ক য ড র র কর মকর ত র জন য ব স এস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান
অবসরপ্রাপ্ত শতাধিক সামরিক বাহিনীর সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ মঙ্গলবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক ছিলেন।
পূর্বনির্ধারিত এই বৈঠকে ১০১ জন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভা পরিচালনা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর।
অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সামনে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়ার পর তারেক রহমান বলেন, ‘স্ক্রিনে এখানে আমি একজনকে দেখতে চাচ্ছি। এটা একান্ত একটু পার্সোনাল ব্যাপার, তারপরেও আমি, সবাই আছেন, একান্ত পার্সোনাল ব্যাপার, তারপরে আমি একটু এখানে উল্লেখ করতে চাচ্ছি। আমাদের সামনে এখানে আম্মার (খালেদা জিয়া) সময় ছিলেন উনি ডিজিএফআইয়ে ছিলেন রুমি সাহেব ছিলেন। রুমি সাহেব উপস্থিত আছেন।’ তখন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সারিতে থাকা সাদিক হাসান রুমি জবাব দেন, ‘জি আছি।’
এরপর তারেক রহমান বলেন, ‘রুমি সাহেব আপনার নিশ্চয় মনে আছে যে একটা মিছিল হয়েছিল একবার, সেই পুরান ঢাকা থেকে আমিন বাজারে এবং পুরা মিছিলটা আমি হেঁটে এসেছিলাম, আম্মাও (খালেদা জিয়া) ছিলেন সেই মিছিলে। তো সেই মিছিলে অনেক ভিড় হট্টগোল। আপনি আমাকে একটা কোনো কিছু বলেছিলেন। আই অ্যাম ভেরি সরি, আমি সেদিন আপনার সাথে একটু রূঢ় ব্যবহার করেছিলাম। সবকিছু মিলে আই অ্যাম ভেরি সরি ফর দ্যাট। আমি অনেক দিন চেষ্টা করেছি আপনাকে রিচ করার জন্য। আই রিকোয়েস্ট মাই অ্যাপোলজি। আমি সুযোগ পাইনি। আজকে সুযোগ পেয়েছি। আই অ্যাম রিয়েলি সরি ফর দ্যাট।’
এ সময় জবাবে মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি বলেন, ‘আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। যেটা বলেছেন থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ, আই উইল রিমেম্বার ইট।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান, মেজর (অব.) রেজা করিম, মেজর (অব.) সামসুজ্জোহা, মেজর (অব.) জামাল হায়দার, মেজর (অব.) আজিজুল হক, কর্নেল (অব.) হারুনুর রশিদ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুজ্জোহা, এয়ার কমোডর (অব.) শফিক আহমেদ, রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোস্তাফিজ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, কর্নেল (অব.) জগলুল, লেফটেন্যান্ট (অব.) ইমরান কাজল, মেজর (অব.) গোলাম মান্নান চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) রেজাউর রহমান ও কর্নেল (অব.) হান্নান মৃধা।