ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রেখে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা আয়োজনের দাবি
Published: 25th, October 2025 GMT
মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের স্মৃতিময় ফেব্রুয়ারি মাসেই আগামী ২০২৬ সালের বইমেলা আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন লেখক, কবি, প্রকাশক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। আজ শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনারকক্ষে বইমেলা নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানানো হয়।
সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোট ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য’ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এবার ফেব্রুয়ারি মাসে অমর একুশে বইমেলার আয়োজন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ আগামী বছর বাণিজ্য মেলা সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলা একাডেমির বইমেলা বন্ধের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের অগণিত পাঠক, প্রকাশক, লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও হতাশ।
***দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় একুশের বইমেলা আজ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। ***এর আগেও ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন ও বইমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার নজির রয়েছে।বক্তারা বলেন, একুশের বইমেলার উদ্দেশ্য শুধু বই বিক্রি নয়। এর সঙ্গে আমাদের মহান ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস–ঐতিহ্য জড়িত, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও স্বাধিকার-স্বাধীনতার চেতনা জড়িত। দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় একুশের বইমেলা আজ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। অমর একুশে বইমেলা বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ ও সৃজনশীল প্রকাশনাশিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। জাতীয় নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অজুহাতে কোনোভাবেই একুশে বইমেলা স্থগিত রাখা যৌক্তিক হবে না। এর আগেও ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন ও বইমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার নজির রয়েছে। নির্বাচনের কারণে বইমেলা স্থগিত রাখার কোনো ঘটনা আগে ঘটেনি। এবার প্রয়োজনে শুধু নির্বাচনের দিন বইমেলা বন্ধ রেখে বাকি দিনগুলোতে স্বচ্ছন্দে বইমেলা করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা দাবি করেন বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে মহান একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাসে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ত্যাগ করতে হবে। বইমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্তে সৃজনশীল কাজ, মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার ক্ষেত্রটি সংকুচিত করা হচ্ছে বলে জনমানসে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই মেলার ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হতে হবে।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) পরিচালক আবুল বাশার, প্রকাশক ও সংস্কৃতিকর্মী সৈয়দ জাকির হোসাইন, চাকসুর সাবেক ভিপি এবং প্রগতি লেখক সংঘের সহসভাপতি শামসুজ্জামান, কবি ও গীতিকার হাসান ফকরি, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, জাতীয় কবিতা পরিষদের সবুজ মনির, গবেষক আবু সাঈদ, লেখক ও অনুবাদক মনজুর শামস, সুষম নাট্য সম্প্রদায়ের হামজা আনোয়ার, নাট্যকর্মী শুভাশিস দত্ত, সংস্কৃতিকর্মী ও খাপড়া ওয়ার্ডখ্যাত আবদুল শহীদের কন্যা জয়া শহীদ, সমাজ চিন্তা ফোরামের কামাল হোসেন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহসভাপতি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, মানচিত্র প্রকাশনের প্রকাশক দাউদ উল ইসলাম, গ্রন্থিক প্রকাশনের প্রকাশক আবদুর রাজ্জাক, সঞ্চিতা প্রকাশনীর প্রকাশক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধ র ব হ কত অন ষ ঠ ত র বইম ল এক ড ম র প রক
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরের তিন উপজেলায় বিএনপির সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা
ফরিদপুরের বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গার উপজেলা ও পৌর বিএনপির ছয়টি সাংগঠনিক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা বিএনপি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ও সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ছয়টি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভা কমিটিতে আছেন ১০১ জন করে।
ঘোষিত কমিটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে প্রাধান্য পেয়েছেন ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামের পক্ষের নেতারা।
ফরিদপুর-১ আসনে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এই দুই নেতার নেতৃত্বে তিনটি উপজেলার বিএনপি বিভক্ত। বোয়ালমারী উপজেলা কমিটিতে শামসুদ্দিন মিয়াকে তিন নম্বর সহসভাপতি করা হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে তাঁর অনুসারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গায় সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০১৫ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে। প্রায় এক দশক পর এবার কোনো সম্মেলন ছাড়াই জেলা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের যৌথ স্বাক্ষরে নতুন কমিটিগুলো ঘোষণা করা হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে, আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহা। বোয়ালমারী পৌরসভা কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও পৌর কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুস শেখ এবং সাধারণ সম্পাদক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন।
মধুখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি করা হয়েছে পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে, আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আবদুল আলিম মানিক। মধুখালী পৌরসভা কমিটির সভাপতি হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছিন বিশ্বাসকে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছে যথাক্রমে আবদুল মান্নান মিয়া আব্বাস ও মো. নূরজামাল খসরু। আলফাডাঙ্গা পৌরসভা বিএনপির সভাপতি হয়েছেন মো. রবিউল হক রিপন ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে মো. হাসিবুল হাসান হাসীবকে।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং ঘোষিত কমিটির তিন নম্বর ভাইস চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির লোকজনদের নিয়ে প্রকৃত নিবেদিতপ্রাণ বিএনপির নেতা–কর্মীদের বঞ্চিত করে একপক্ষীয় কমিটি করা হয়েছে।
তবে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে কার্যকর কমিটি করার চেষ্টা করেছি। সম্মেলন করে কমিটি হয়নি এ কথা সত্য, তবে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। একাধিকবার কর্মী সম্মেলন করে সবার মতামতের ভিত্তিতে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কমিটিতে আছেন আবার তাঁদের আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টির পদ রয়েছে এবং তা যদি সঠিকভাবে প্রমাণ করা যায়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে সে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।’