কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়োগ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত
Published: 26th, October 2025 GMT
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করেছে নিয়োগ কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে কমিটির সভার সিদ্ধান্তের তথ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকাশ করেন সিভিল সার্জন ও নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে আজ রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সিভিল সার্জন শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান সহকারী আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে নিয়োগ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিতের বিজ্ঞপ্তিটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় কার্যালয়ে নিয়োগ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রেজল্যুশন তৈরি করা হয়। জানানো হয়, অনিবার্য কারণবশত নিয়োগ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হল। পরবর্তী কার্যক্রমের বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হবে। রাত ১০টার পর বিজ্ঞপ্তিটি আমাদের ওয়েবসাইটে (সিভিল সার্জন) আপলোড করা হয়েছে।’
এর আগে নিয়োগ পরীক্ষার অনিয়মের অভিযোগে চাকরিপ্রত্যাশীরা গতকাল সকালে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। সাত ঘণ্টা পর সেই তালা খোলা দেখতে পাওয়া যায়। সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের লোকজন বলছেন, কে বা কারা তালা খুলে নিয়ে গেছেন। আর আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁরা তালা খোলেননি। সিভিল সার্জনের লোকজন হয়তো তালা ভেঙেছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১১৫টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিভিল সার্জন কার্যালয়। সে সময় ওই নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। স্বাস্থ্য সহকারী পদে ৯৭ জন, পরিসংখ্যানবিদ ৩, কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ান ১, স্টোরকিপার ৪, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর ১, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ৫ ও চালক পদে ৪ জন নিয়োগ করা হবে। শুক্রবার সকাল ১০টায় শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় আট হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী অংশ নেন।
অভিযোগ উঠেছে, বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাত ও শুক্রবার ভোরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হোসেন ইমামের শহরের বাড়ি ও হাসপাতালের সামনে তাঁর পরিচালিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে জড়ো হন। তাঁদের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এতে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করা হয়েছে। এর সঙ্গে সিভিল সার্জনসহ অনেকে জড়িত রয়েছেন। শুক্রবার ভোরে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার বাড়ি ও ক্লিনিক থেকে চাকরিপ্রার্থী নারী–পুরুষদের বের হতে দেখা গেছে। এমন কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে শহরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুননিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ, কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ে তালা১৬ ঘণ্টা আগেগতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া কয়েকজনসহ চাকরিপ্রার্থী ও তাঁদের কয়েকজন অভিভাবক শহরের এন এস রোডে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। তাঁরা পরীক্ষা বাতিল করে আবার পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা বেলা ১টা ৩৩ মিনিটের দিকে নতুন দুটি তালা এনে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান ফটকে লাগিয়ে দেন।
বিক্ষোভকারীরা তালা দেওয়ার আগে দুপুর ১২টার দিকে সিভিল সার্জন শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিয়োগের প্রক্রিয়ায় পাঁচ সদস্যের কমিটি আছে। সেখানে তিনি সদস্যসচিব। পরীক্ষার আগের রাতে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি কক্ষে সব সদস্য মিলে প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। প্রশ্নপত্র ফটোকপিসহ বিভিন্ন কাজে আরও কয়েকজন ছিলেন। যাঁরা প্রশ্নপত্র তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের সবার ফোন বন্ধ করে রাখা হয়। প্রশ্নপত্র বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শুক্রবার সকাল আটটার পর প্রশ্নপত্র কেন্দ্রগুলোয় পাঠানো হয়। আর আরএমও নিয়োগ–সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে জড়িত নন। যে অভিযোগ আসছে, তা পুলিশ তদন্ত করতে পারে।
আরও পড়ুনখুলে দেওয়া হলো কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তালা১২ ঘণ্টা আগেএদিকে নিয়োগপ্রক্রিয়ার সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় থাকা কমিটির এক সদস্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার রাতেই বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ঘটনার তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হোক। তদন্ত শেষে যদি অনিয়মের কোনো সত্যতা না পাওয়া যায় তবে খাতা দেখা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ চালাবেন। তার আগে সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর প র র থ শ ক রব র প রক র য় পর ক ষ কম ট র সদস য গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
নয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে ৩৯.৩৬ শতাংশ
পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, ২০২৫) ও নয় মাসের (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর, ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী আলোচ্য নয় মাসের প্রান্তিকে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ৩৯.৩৬ শতাংশ।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
নয় মাসে সিঙ্গারের বড় লোকসান
শেষ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২.৫৩ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১.৭৫ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ০.৭৮ টাকা বা ৪৪.৫৭ শতাংশ।
এদিকে, চলতি হিসাববছরের নয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৬.০৯ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ৪.৩৭ টাকা। সে হিসেবে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ১.৭২ টাকা বা ৩৯.৩৬ শতাংশ।
এছাড়া, চলতি হিসাববছরের নয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৬৩.০৩ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ৪৪.০১ টাকা।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫১.৭৩ টাকায়।
ঢাকা/এনটি/রফিক