রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুর পর আজ দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মেট্রোরেলের যাত্রীরা।

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ বিকেল তিনটার কিছু পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে উত্তরা অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেছে। বাকি অংশ চালু করতে একটু সময় লাগবে। কারণ ক্রেন আসতে হবে। আবার দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য মেরামতের পর পরীক্ষা করতে হবে।

দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালামের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আজ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) তাদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে কারিগরি ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে।

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ধৈর্যধারণের অনুরোধ জানিয়েছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি ত্রুটি মেরামতের চেষ্টা চলছে।

২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফার্মগেটে মেট্রোরেলে একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে মেট্রো ট্রেন চলাচল।

মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগের বার দুর্ঘটনার সময় প্রায় ১১ ঘণ্টা লেগেছিল মেট্রোরেল সচল করতে। এবার কত সময় লাগে, তা বলা যাচ্ছে না।

মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের বিয়ারিং প্যাড থাকে। ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, এগুলোর প্রতিটির ওজন আনুমানিক ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্যই মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

ফিরে যাচ্ছেন যাত্রীরা

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়। উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল চলাচল করে। ডিএমটিসিএলের তথ্য বলছে, উদ্বোধনের পর থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৫ কোটি ৭৫ লাখের মতো যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেছে।

মেট্রোরেল এখন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় গণপরিবহন। আজ দুপুরে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধের পর স্টেশন থেকে যাত্রীদের চলে যেতে দেখা যায়।

কারওয়ান বাজারের মেট্রো স্টেশনে চারটি প্রবেশপথ রয়েছে। রোববার দুপুরে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় আনসার ও পুলিশ সদস্যরা ভেতরে অবস্থান নিয়ে সব প্রবেশপথ বন্ধ করে রেখেছেন।

কারওয়ান বাজার মোড়ের বিএসইসি ভবন সংলগ্ন প্রবেশপথের মুখে অর্ধশতাধিক যাত্রী ভিড় দেখা গেল। যাত্রীরা কখন মেট্রোরেল চালু হবে জানতে চাইলে আনসার ও পুলিশ সদস্যদের কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।

এ সময় তোরাব হাসান নামের এক যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশন থেকে মতিঝিল যেতে এসেছিলাম। এসে দেখি প্রবেশপথ বন্ধ। শুনলাম দুর্ঘটনা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কখন মেট্রো চালু হবে। কেউ বলতে পারছেন না কবে চালু হবে।’

মেট্রো স্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্য জুয়েল আহমদ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন, ‘আজকে মেট্রোরেল চালু হবে না। আপনারা অপেক্ষা না করে চলে যান।’

জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফার্মগেটে দুর্ঘটনার পর সাড়ে ১২টার দিকে গেট বন্ধ করেছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই আমরা গেট খুলব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন মত ঝ ল বন ধ র সদস য আনস র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম বন্দরের বেসরকারি ডিপো মালিকদের কর্মসূচি স্থগিত

চট্টগ্রাম বন্দরে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোর মালিকদের ডাকা ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর কার্যালয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস এবং বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিদের যৌথ বৈঠকের পর এক মাসের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করার কথা জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

৯০০ মে. টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি, দাম কমছে

কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, বেড়েছে রাজস্ব আয়

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের অফডক মাশুল বাড়ানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সব কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিলেন বেসরকারি ডিপো মালিকরা। তাদের দাবি, বর্তমান মাশুল দিয়ে পরিচালনা সম্ভব নয়। নতুন মাশুল অনুমোদিত না হওয়ায় তারা রপ্তানিপণ্য লোড বা খালি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন।

এরই প্রেক্ষিতে গতকৃল বুধবার বন্দর কার্যালয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস এবং বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিদের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর বেসরকারি ডিপো মালিকরা আজ বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি থেকে সরে আসেন।  তারা এক মাসের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেন। 

ডিপো মালিকরা বলেন, ২০১৬ সালের পর থেকে ট্যারিফ অপরিবর্তিত। এই সময়ে শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে। ব্যয় বেড়েছে। পুরোনো হার ধরে কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্যই তারা কর্মসূচির ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ