দুর্নীতি প্রতিরোধে ইসলামী শাসনের বিকল্প নেই : ইলিয়াস আহমদ
Published: 26th, November 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত এমপি প্রার্থী ইলিয়াস আহমদ বলেন, সমাজে চলমান দুর্নীতি ও অনাচার দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে ইসলামী শাসনের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, "আজ দেশের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি শিকড় গেড়ে বসেছে। সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত। এই দুর্নীতি শুধু আইন বা লোকদেখানো অভিযানের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী নৈতিক ভিত্তি এবং আল্লাহর প্রতি জবাবদিহিতার অনুভূতি।
"ইসলামী শাসনব্যবস্থা মানুষকে শুধুমাত্র আইনের ভয় দেখায় না, বরং আল্লাহর ভয় দেখিয়ে দুর্নীতি থেকে বিরত রাখে। এটাই দুর্নীতির মূল উৎপাটনের অধিক কার্যকরি পন্থা।
তিনি আরো বলেন, ইসলামী শাসনের অধীনে শাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত সবাই আল্লাহ এবং জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। সমাজের সকল মানুষের জন্য, ধনী-গরিব নির্বিশেষে, দ্রুত ও নিরপেক্ষ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
যাকাত ও ওশরের মতো সুষম অর্থনৈতিক নীতিমালার মাধ্যমে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা হবে এবং সমাজ থেকে অশ্লীলতা ও অনৈতিকতা দূর করে সৎ ও আদর্শিক মানুষ তৈরি করা হবে।
ইলিয়াস আহমদ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের জনগণের উদ্দেশে বলেন, "আমি আপনাদের মাঝে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে একটি কল্যাণমুখী ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে এসেছি। যেখানে জনগণের হক্ব রক্ষা করাই হবে আমার রাজনীতির মূল লক্ষ্য।"
তিনি সকলকে খেলাফত মজলিসের পতাকাতলে একত্রিত হয়ে দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায়পরায়ণ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ইলিয়াস আহমদ নিজ সংসদীয় এলাকায় ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৬ নভেম্বর-২০২৫, বুধবার বিকালে ফতুল্লা থানার কুতুবপুর ইউনিয়নে গণসংযোগ করেছেন।
ফতুল্লা তাবলীগী মার্কাজ মসজিদ থেকে শুরু করে লামাপাড়া, লাখিবাজার, কুতুবপুর, কায়েমপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে শিবু মার্কেট এসে শেষ করেন। এসময় নেতৃবৃন্দ জনসাধারণের মাঝে খেলাফত মজলিস ও দেওয়াল ঘড়ি মার্কার পক্ষে লিফলেট বিতরণ করেন।
গণসংযোগে এমপি প্রার্থী ইলিয়াস আহমদের সাথে খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শরীফ মিয়াজী, মহানগর সহ-সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ, জেলা সমাজকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল করীম মিন্টু, ফতুল্লা থানা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ মাহমুদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, ডাঃ সাইফুল ইসলাম ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ স আহমদ শ সন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রশাসন আমাদের কথায় উঠবে’: জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
প্রশাসন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) করেছে জামায়াতে ইসলামী। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাঁকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পেলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত নোটিশে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘বিগত ২২ নভেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে আপনি (শাহজাহান চৌধুরী) বক্তব্য প্রদান করেছেন যে, “নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়, যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।” আপনার এই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘আমরা বক্তব্যটি দেখেছি, যা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পেশাদারত্ব, নিরপেক্ষতা ও মূল স্পিরিট স্পষ্টভাবে ব্যাহত করেছে। আমরা মনে করি, প্রশাসন পূর্ণ পেশাদারত্বের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে, এখানে আমাদের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই।’
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শাহজাহান চৌধুরী সাংগঠনিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্নকারী ও শৃঙ্খলাবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য রেখেছেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ‘আপনাকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি আমিরে জামায়াতও আপনাকে ডেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন। এতদসত্ত্বেও আপনার মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে না।’
শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্যের পর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে নিন্দা ও উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিক মহল থেকে সরাসরি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, ‘একই সঙ্গে দেশ-বিদেশে আমাদের জনশক্তি এবং সাধারণ জনগণের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই বক্তব্যের কারণে ইতিমধ্যে সংগঠনের ভাবমর্যাদা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি, আদর্শ, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থী।’
আরও পড়ুনপ্রশাসন আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে: জামায়াত নেতা শাহজাহান২৩ নভেম্বর ২০২৫শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সাবেক আমির।
গত শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন’–এ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়...যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে। পুলিশকে আপনার পিছনে পিছনে হাঁটতে হবে। থানার ওসি সকালে আপনার অনুষ্ঠান জেনে নিয়ে আপনাকে প্রটোকল দেবে।’
আরও পড়ুনশাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, জামায়াত এটি সমর্থন করে না২৩ নভেম্বর ২০২৫শাহজাহান চৌধুরীর এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে শাহজাহান চৌধুরীর এ বক্তব্যকে তাঁর নিজস্ব এবং এই বক্তব্য জামায়াত সমর্থন করে না বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম জোনের প্রধান মুহাম্মদ শাহজাহান।
গত রোববার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘বক্তব্যটি আমরা দেখেছি। এটা একান্তই ওনার (শাহজাহান চৌধুরী) বক্তব্য। এটার ব্যাখ্যা উনি ভালো দিতে পারবেন। তাঁর এই বক্তব্য জামায়াত সমর্থন করে না। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এ ঘটনায় আমরা অভ্যন্তরীণভাবেও আমাদের মতো ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
গতকাল সোমবার শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এক প্রতিবাদলিপিতে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, এ ধরনের মন্তব্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের উসকানি দেয়।
আরও পড়ুনজামায়াত নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের২৪ নভেম্বর ২০২৫