‘চায়না দুয়ারি’ জাল নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন
Published: 26th, October 2025 GMT
দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ‘চায়না দুয়ারি’ জাল নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন স্থানীয় জেলেরা। বরেন্দ্র অঞ্চলের নদ–নদী, খাল–বিল ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার আহ্বান জানিয়ে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে সবুজ সংহতি ও উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বারসিকের যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে চায়না দুয়ারি জাল নিষিদ্ধের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি–সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলেরা ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার সরঞ্জাম—খোরা জাল, পলো, চাঁই, খলই, বিনকি ইত্যাদি হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘চায়না দুয়ারি জাল বন্ধ করো, দেশীয় মাছ রক্ষা করো।’
কর্মসূচিতে বারসিকের গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো.
গোকুল-মথুরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের বিলকুমারী বিলে আগে কত জাতের মাছ ছিল। এখন আর কিছুই নেই। চায়না জালের কারণে আমরা মৌসুমেও মাছ পাই না।’ বিলকুমারী বিলপারের আরেক জেলে আফাজ উদ্দিন কবিরাজ বিলের হারিয়ে যাওয়া মাছের নাম স্মরণ করে এই জাল বন্ধের দাবি জানান।
সবুজ সংহতি রাজশাহীর আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, আইন থাকলেও মাঠপর্যায়ে এর কোনো কার্যকর প্রয়োগ নেই। অবিলম্বে চায়না দুয়ারি জালের আমদানি, তৈরি ও বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। এর কারখানাগুলোও বন্ধের আওতায় আনতে হবে।
মানববন্ধনে বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিকের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পবা উপজেলার নওহাটা মৎস্যজীবী সমবায়ের সাধারণ সম্পাদক আবু সামা, জেলে রঘুনাথ হালদার, সামাজিক কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সম্রাট রায়হান, আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি উপেন রবিদাস, জুলাই ৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শহর বন্দর ভাগ হলে, ভাগ হয়ে যাবে নারায়ণগঞ্জের ভাগ্য : তরিকুল সুজন
কদম রসুল সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বন্দরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় বন্দর উন্নয়ন ফোরাম এর উদ্যোগে বন্দরের একরামপুরে সিএসডি গেট এলাকায় এই আয়োজন করা হয়।
বন্দর উন্নয়ন ফোরামের সদস্য সচিব আব্দুল লতিফ ফোরামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন হাফেজ মোহাম্মদ কবির হোসেন।
মানববন্ধনে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, আমি কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন। কদম রসুল সেতুকে কেন্দ্র করে শহর বন্দর ভাগ হলে, ভাগ হয়ে যাবে নারায়ণগঞ্জের ভাগ্য। এই কদম রসুল সেতু নিয়ে আমরা কোনো রকম বিভাজন চাই না। ঐক্যবদ্ধ নারায়ণগঞ্জই আমাদের প্রধান শক্তি।
আমরা যদি পূর্ব-পশ্চিম, এপার-ওপার বলে নিজেদের মধ্যে বিভাজন করি, তাহলে এই বিভাজনের কারণে নারায়ণগঞ্জই বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই বিভাজন ছাড়াই গত ৫৪ বছরে প্রশাসনিকভাবে নারায়ণগঞ্জ বঞ্চিত এবং অবহেলিত হয়েছে। বরং ঢাকার প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জকে সবসময় ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কদম রসুল সেতু নিয়ে কেউ বিরোধিতা করছে না। সকলেই চাচ্ছেন, সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন। সেতুর ল্যান্ডিং মুখ পরিবর্তন নিয়ে যারা দাবি তুলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই বন্দরবাসী যদি সেতুর জন্য নিজেদের পৈতৃক ভিটা মাটি ছেড়ে দিতে পারেন তাহলে সেতুর ল্যান্ডিং মুখে যারা দোকানপাট করছে, সরকারি জায়গা দখল করে আছে, রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছে, কেন তাদের অপসারণ করে রাস্তা বৃদ্ধি করা হবে না?
কদম রসুল সেতুর সুবিধাভোগী দুই পারের লোকজন হলেও প্রধান সুবিধাভোগী হচ্ছে বন্দরবাসী। এই সেতুর মাধ্যমে কেবল বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থারই আমূল পরিবর্তন হবে না, বদলে যাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ অর্থনৈতিক চালচিত্র।
সুতরাং কদম রসুল সেতু হতে হবে বন্দরের মানুষের প্রয়োজন অনুসারে এবং সেতুর ল্যান্ডিং মুখ সেখানেই দিতে হবে যেখানে দিলে বন্দরবাসী উপকৃত হয়। যারা বলছেন, বর্তমান নকশায় সেতুর ল্যান্ডিং মুখ হলে শহরে যানযট বাড়বে।
তারা নিশ্চয় জানেন, যানজট নিরোসনের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসন যদি যানজট নিরসনে ব্যার্থ হয়,তাহলে তারা কিসের প্রশাসন? কেনো বিকেএমই,চেম্বার, কিংবা মডেল গ্রুপের টাকায় যানজট নিরসন করতে হবে? যানজট নিরসনের কাজ প্রশাসনের।
প্রশাসনের যানজট নিরোসনে ব্যর্থতার দায় কেন বন্দরবাসী দিবে? কারো ওপরে দায় না চাপিয়ে, ব্যবসায়ী সহযোগিতা ছাড়া প্রশাসনকে যানজট নিরোসন করতে পারতে হবে। শহর-বন্দরের বিভাজন আমাদের রক্তের উপর দিয়ে যাবে। আমরা কোনো বিভাজন চাই না। আমি কদম রসুল সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী নুরুদ্দিন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাগর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তা বেগম, বন্দর প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা জিএম মাসুদ, ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ আহমেদ রবি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, এডভোকেট শরিফুল ইসলাম শিপলু, কাজী সাঈদ ও আশিফুজ্জামান দুর্লভ, নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল্লাহ মাহমুদ টিটু, বন্দর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ জাহিদ, সাংবাদিক সাব্বির আহমেদ সেন্টু, শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, কদম রসুল কলেজের সদস্য সোহেল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান জসিম প্রমূখ।