আমাদের অনেকেই অনেক রাত পরযন্ত জেগে থাকি অথবা সারাদিন কাজ করার পর বাড়ি ফিরি, প্রায়শই রাত ৮টার পরে রাতের খাবার খাই। কিন্তু নিয়মিত রাতের খাবার দেরি করে খাওয়ার ফলে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি আরও অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

দেরি করে খাবার খেলে আপনার শরীর খাবার প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। ঘুমানোর আগে খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, চর্বি জমা এবং সার্কাডিয়ান ছন্দে প্রভাব পড়তে পারে, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি, ঘুমের ব্যাঘাত এবং কিছু বিপাকীয় সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুন:

গিউলিয়া তোফানা: যার বানানো বিষ খেয়ে মরেছে ৬০০ পুরুষ

সকালে মুখ ফুলে যায় যে পাঁচ কারণে

মাসের পর মাস, এই প্রভাবগুলো আরও জটিল হতে পারে, যা আপনার দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের ওপর এমনভাবে প্রভাব ফেলতে পারে যে আপনি তাৎক্ষণিকভাবে লক্ষ্য করবেন না। 

বেশির ভাগ খাবার চর্বি হিসেবে জমা হয়

ফিটনেস ডায়েটিশিয়ান এবং পুষ্টিবিদ আশলেশা জোশী বলেন, “গভীর রাতে খাবার গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক বিপাকীয় ছন্দ ব্যাহত হয়। সূর্যাস্তের পরে, আমাদের হজম ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। রক্তে গ্লুকোজ সহনশীলতা হ্রাস পায়। তাই যদি কেউ কয়েক মাস ধরে রাত ৮টার পরে নিয়মিত খায়, তাহলে সেই খাবার থেকে প্রাপ্ত শক্তির বেশির ভাগই পুড়ে যাওয়ার পরিবর্তে চর্বি হিসেবে জমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।”

সার্কাডিয়ান অ্যালাইনমেন্টকে ঠিক মতো কাজ করতে দেয় না 

গভীর রাতে খাবার গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি, রক্তে শর্করার বৃদ্ধি, এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি এবং এমনকি পেট ফাঁপা এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো হজমের অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে  এই অভ্যাস চরচা করলে এটি সার্কাডিয়ান অ্যালাইনমেন্টকে ব্যাহত করতে পারে।

অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়

রাতের বেলায় দেরিতে খাওয়ার ফলে হরমোনের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই রাতে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমে যায়, যার ফলে শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। লেপটিন, যে হরমোন পেট ভরা থাকার ইঙ্গিত দেয়, তাও কম সাড়া দেয়, যার ফলে অতিরিক্ত খাবার খেতে হতে পারে।

রাতের খাবারে বেশি পরিমাণে প্রোটিন, শাকসবজি এবং ফাইবারযুক্ত খাবার বেছে নেওয়ার পরামরশ দেন চিকিৎসকেরা।  

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ