আগামী ৪ নভেম্বরের মধ্যেই ২০২৬ সালের অমর একুশের বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই আয়োজনের স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ। এই সময়ের মধ্যে ঘোষণা না এলে ৫ নভেম্বর শাহবাগে সমাবেশ করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা করে তাঁর কাছে স্মারকলিপি পেশ করার কর্মসূচি দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ এই দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) সভাপতি আবুল বাসার ফিরোজ শেখ। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগ্রাম পরিষদের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম পরিষদের নির্বাহী সদস্য খন্দকার শাহ আলম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর অমর একুশে বইমেলা যথাসময়ে অনুষ্ঠানের দাবি করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করতে হচ্ছে, এর মতো দুঃখজনক ঘটনা হয় না। সরকার ২০২৬ সালের বইমেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। এ ধরনের ঘোষণা পতিত ফ্যাসিস্ট শাসকের আমলের কর্মপদ্ধতি। দেশের হাজারো লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সাধারণ মানুষ এ ধরনের ফ্যাসিস্ট সিদ্ধান্তে অত্যন্ত হতাশ ও ক্ষুব্ধ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সারা বছরের সবচেয়ে বেশি বই প্রকাশিত হয় একুশের বইমেলায়। দেশের সাহিত্য, শিল্প–সংস্কৃতির বিকাশে এর ভূমিকা অপরিসীম। কেবল দেশেই নয়, প্রবাসী বাঙালিরাও মেলাকে কেন্দ্র করে দেশে আসার জন্য তাঁদের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা করে থাকেন। এসব কারণে যথাসময়ে বইমেলা না হলে একটা বড় রকমের বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।

বইমেলা যথাসময়ে অনুষ্ঠানের দাবিতে এর আগে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য ৫ অক্টোবর বাংলা একাডেমির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২৫ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সংস্কৃতিকর্মীসহ অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সেখানে সবাই যথাসময়ে মেলা অনুষ্ঠানের পক্ষে জোরালো মত দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বইমেলা স্থগিতের কারণ হিসেবে জাতীয় নির্বাচন ও নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অতীতে নির্বাচন ও রমজান মাসে একাধিকবার বইমেলা করার নজির রয়েছে। কাজেই নিরাপত্তাসংক্রান্ত অজুহাত ধোপে টেকে না। এখনো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাই করা হয়নি। মেলার মধ্যে নির্বাচনের তারিখ পড়লে সেই দিন এবং প্রয়োজনে আগের ও পরের দিনে মেলা বন্ধ রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুনডিসেম্বরে অমর একুশে বইমেলা হচ্ছে না২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বইমেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে লেজেগোবরে অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এমনকি তাদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন ও কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও ধরন নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। মন্ত্রণালয় অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা–পরামর্শ না করে বইমেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা অত্যন্ত দুর্ভাগ্য ও হতাশার।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বইমেলা যথাসময়ে অনুষ্ঠানের দাবিতে এর আগে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য ৫ অক্টোবর বাংলা একাডেমির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২৫ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সংস্কৃতিকর্মীসহ অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সেখানে সবাই যথাসময়ে মেলা অনুষ্ঠানের পক্ষে জোরালো মত দিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশে কোনো বিবেচনাতেই অমর একুশের বইমেলা স্থগিত রাখার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এই সরকার পরিকল্পিতভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। কিন্তু দেশের মুক্তচিন্তার, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন জনগণ কখনোই বইমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। প্রয়োজনে অমর একুশের বইমেলা অনুষ্ঠানের দাবি নিয়ে বৃহত্তর গণ–আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, অ্যাডর্ন প্রকাশনীর প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসাইন, উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার, কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রগতি লেখক সংঘের সহসভাপতি শামসুজ্জামান, বাপুসের সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার, মাওলানা ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি নিখিল দাস, কবি হাসান ফকরী, নার্গিস কৌমুদী প্রমুখ।

আরও পড়ুনঅমর একুশে বইমেলা এবার ডিসেম্বরে১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র দ ব এক ড ম র স ম গণত ন ত র ক প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর

আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।

সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।

আরো পড়ুন:

শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?

ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া

কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”

৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।

২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।

কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।

তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।

কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।

অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর
  • ষষ্ঠ কিস্তির অর্থ ছাড় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা শুরু
  • ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল মোমেনশাহীতে তিনটি শ্রেণিতে ভর্তি
  • ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২৬ সালে নার্সারিতে ভর্তি
  • সোনার দাম এবার কমছে বিশ্ববাজারে, এক সপ্তাহে ৮%
  • ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলতে চান মেসি
  • মেসি বললেন, আমি বিশ্বকাপে খেলতে চাই