সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন। জেলার ১৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও বাকি ১৭টি বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করছেন।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজশাহী অঞ্চলের সমন্বয়ক ও রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক শহীদুল্লাহ সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি পালন করছেন। সারা দেশেই একই কর্মসূচি চলছে। রাজশাহীর ১৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নতুন সরকারি হওয়া দুটি প্রতিষ্ঠান বাদে বাকি ১৭টিতে কর্মবিরতি চলছে। কোনো ধরনের পরীক্ষা হয়নি। বাকি দুটিতেও আগামীকাল থেকে কর্মবিরতি চলবে।

দুপুরে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে বড় করে ‘কর্মবিরতি’ লেখা ব্যানার টানানো রয়েছে। এর কিছুক্ষণ আগে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করে। শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের বার্ষিক পরীক্ষা চলছে এবং শিগগিরই পরীক্ষা শুরু হবে। ভেতরে গিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের ৬৫ জন শিক্ষকের মধ্যে মাধ্যমিক শাখার ৩৬ জন কর্মবিরতিতে রয়েছেন। কলেজের শিক্ষক দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই।

ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক ও তথ্য কর্মকর্তা সোহান রেজা বলেন, তাঁরা পরীক্ষা স্থগিতের কোনো নোটিশ দেননি। সকালে মাউশির পক্ষ থেকে চিঠিও পেয়েছেন। সকালে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা হয়েছে, দুপুর থেকে চলছে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা। বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

আজ দুপুরে সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকেরা মাঠে চেয়ার পেতে বসে আছেন। বিদ্যালয়ের অন্তত ৫০ জন শিক্ষক আজ কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেননি। এতে কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকেও দাবিদাওয়া–সংবলিত ব্যানার টানানো রয়েছে। বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জামিল আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি চলছে। এ কারণে তাঁরা কোনো কাজ করছেন না। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি মোতাবেক তাঁরা কর্মবিরতি পালন করে যাবেন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালকের কার্যালয়ের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহা.

আবদুর রশিদকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ করছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হংকংয়ে আবাসিক কমপ্লেক্সে লাগা আগুন ৪২ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, মৃতের সংখ্যা ১২৮

হংকং শহরে প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বিশাল আবাসিক ভবন কমপ্লেক্সে উদ্ধার অভিযান আজ শুক্রবার শেষ করার আশা করছে স্থানীয় দমকল কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৮ হয়েছে। এখনো নিখোঁজ প্রায় ২০০ জন। এ ছাড়া ৪২ ঘণ্টা পর এ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

আমরা সাতটি ভবনের সব ইউনিটে ঢুকে খুঁজে দেখব, যেন নিশ্চিত হতে পারি, আর কেউ ভেতরে আটকে নেই।ডেরেক চ্যান, হংকংয়ের দমকল বিভাগের উপপরিচালক

উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকায় অবস্থিত ‘ওয়াং ফুক কোর্ট’ আবাসন কমপ্লেক্সে ওই আগুন লাগার পর দমকল সদস্যরা আজ সকালেও কাজ করছিলেন। ৮টি ভবন নিয়ে গড়া এ কমপ্লেক্সে ৪ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ থাকতেন। ভবনগুলোতে সংস্কারকাজ চলছিল এবং পুরো কমপ্লেক্স বাঁশের মাচা ও সবুজ নিরাপত্তা জালে ঢাকা ছিল। ফলে গত বুধবার বিকেলের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ বলেছে, জানালায় দাহ্য ফোম বোর্ডসহ ভবনগুলোতে অনিরাপদ নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তাকে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দমকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজই তারা শেষবারের মতো অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা আজ সকালে ৯৪ বলে জানানো হলেও পরে তা বেড়ে ১২৮ হয়েছে। এটি আরও বাড়তে পারে। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৯ জন।

বৃহস্পতিবার ভোরে নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ২৭৯। আজ হালনাগাদ করে তা ২০০ জানানো হয়। গতকাল উৎকণ্ঠিত এক মা তাঁর মেয়ের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি হাতে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে মেয়েকে খুঁজছিলেন। আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ৯০০ জন রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আজ সকালে দমকল বিভাগের উপপরিচালক ডেরেক চ্যান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সাতটি ভবনের সব ইউনিটে ঢুকে খুঁজে দেখব, যেন নিশ্চিত হতে পারি, আর কেউ ভেতরে আটকে নেই।’

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ২৭৯। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা হালনাগাদ করে ২০০ বলে জানানো হয়। চ্যান বলেন, তাঁদের দপ্তরে সাহায্যের অনুরোধ জানিয়ে করা ২৫টি ফোনকল এখনো অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে সাম্প্রতিক তিনটি কলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনহংকংয়ের অগ্নিকাণ্ড ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৪৭ ঘণ্টা আগেওয়াং ফুক কোর্ট আবাসন কমপ্লেক্সে আগের দিন লাগা ভয়াবহ আগুনের স্থানের কাছে হাঁটছেন এক ব্যক্তি। গতকাল বৃহস্পতিবারও সেখানে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছিল। হংকং, চীন, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীতে ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যাংকের ব্যবস্থাপক গ্রেপ্তার
  • ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
  • হংকংয়ে আবাসিক কমপ্লেক্সে লাগা আগুন ৪২ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, মৃতের সংখ্যা ১২৮