হংকংয়ের বেশ কয়েকটি সুউচ্চ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৬০ বছরের মধ্যে শহরটিতে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। খবর অনুযায়ী, এ ঘটনায় ২৭০ জনের বেশি মানুষ এখনো নিখোঁজ। হাজার হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এখনো বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন জ্বলছে। ঘন ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে চীনা ভূখণ্ডের আকাশসীমা ছেয়ে ফেলেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আগুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে ‘দায়িত্ব পালনকালে নিহত একজন ফায়ার ফাইটারও’ রয়েছেন।

আগুন লাগার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এ পর্যন্ত যা জানা গেল, সেটা দেখে নেওয়া যাক।

কোথায় এবং কখন আগুন লাগে

বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ৫১ মিনিটে হংকংয়ের তাই পো এলাকায় বৃহৎ আবাসন কমপ্লেক্স ওয়াং ফুক কোর্টে আগুন লাগে।

ওয়াং ফুক কোর্ট ৩১ তলা উচ্চতার আটটি ভবন নিয়ে গঠিত। তাই পো এলাকার কাউন্সিলর মুই সিউ-ফাং বিবিসি চায়নিজকে জানিয়েছেন, এর মধ্যে সাতটি ব্লক আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

১৯৮৩ সালে নির্মিত এসব ভবনে সংস্কারকাজ চলাকালে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।

তাই পো হলো হংকংয়ের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি আবাসিক এলাকা, যা মূল চীনের শেনজেন শহরের কাছাকাছি।

২০২১ সালের সরকারি শুমারি অনুযায়ী, এই কমপ্লেক্সে ১ হাজার ৯৮৪টি অ্যাপার্টমেন্টে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দা বসবাস করেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশের বয়স ৬৫ বা এর বেশি।

আগুন লাগার কারণ কী

আগুন লাগার কারণ অজানা। তবে হংকংয়ের নিরাপত্তা সচিব বৃহস্পতিবার ভোরে জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, আগুন অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে ছড়িয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ভবনের বাইরে জালযুক্ত কাপড় এবং প্লাস্টিকের শিট পাওয়া গেছে—যার কোনোটিই অগ্নিপ্রতিরোধী বলে মনে হচ্ছে না।

ভবনের জানালায় স্টাইরোফোমও পাওয়া গেছে। পুলিশ বলেছে, এসব নির্মাণসামগ্রীর কারণেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে যখন ধোঁয়া উড়ছে, তখন ওই এলাকায় আকাশে উড়োজাহাজ। ২৭ নভেম্বর ২০২৫, হংকং.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ন ল গ র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাট–প্যাড কিনতে পেছাচ্ছে বিপিএল

পিছিয়ে যাচ্ছে বিপিএল শুরুর দিনক্ষণ। ১৭ ডিসেম্বর মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হওয়ার হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা হবে ২৪ ডিসেম্বর। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ ১৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে হবে ২৬ ডিসেম্বর।

দলগুলোকে পর্যাপ্ত সময় দিতেই বিপিএল পিছিয়ে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সাখাওয়াৎ হোসেন কাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ব্যাট–প্যাডসহ ক্রিকেটের অনেক সরঞ্জাম কেনারও ব্যাপার থাকে। এসবের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যেন পর্যাপ্ত সময় পায়, সে জন্য আমরা এক সপ্তাহ বাড়তি সময় দিতে চেয়েছি।’

তবে বিপিএলের খেলোয়াড় নিলাম পূর্বনির্ধারিত ৩০ নভেম্বরই অনুষ্ঠিত হবে। নিলামের জন্য খেলোয়াড় তালিকাও মোটামুটি চূড়ান্ত। এবারের নিলামে একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে থাকবেন ২০১২ সালে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা পীযুষ চাওলা।

জাতীয় পর্যায়ে ভারতীয় কোনো দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন—বিপিএলে এর আগে এমন মাত্র একজন ক্রিকেটারই খেলেছেন। তবে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা সেই উন্মুক্ত চাঁদ ২০২২-২৩ মৌসুমের বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে। নিলামে কোনো দল কিনে নিলে এবারের বিপিএলেই প্রথম ভারতীয় হিসেবে খেলবেন চাওলা। ভারতের জাতীয় দলে খেলা প্রথম ক্রিকেটার হিসেবেও বিপিএলে নাম লেখাবেন সাবেক এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার।

বিপিএলের এবারের আসরের নিলামের জন্য নাম নিবন্ধন করেছেন পাঁচ শতাধিক বিদেশি ক্রিকেটার। তবে যাচাই-বাছাই করে তাঁদের মধ্য থেকে ২৫০ জনের মতো ক্রিকেটারকে নিলামে তোলা হবে। বিদেশিদের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ১৩ জন ক্রিকেটার আছেন শ্রীলঙ্কার, সব মিলিয়ে দেশটির ৫১ জন ক্রিকেটারের নাম থাকবে ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় বিপিএলের নিলামে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ জন ক্রিকেটার নিবন্ধন করেছেন পাকিস্তানের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার আছেন ৩০ জন।

নিলামের তালিকায় একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পীযূষ চাওলাও আছেন ‘এ’ ক্যাটাগরিতে। আছেন দাসুন শানাকা, দুষ্মন্ত চামিরা, জোনাথন চার্লস, শোয়েব মালিক, ওয়েইন পারনেল, মাতিশা পাতিরানার মতো ক্রিকেটাররাও। বিপিএলে একটি দল যত ইচ্ছা বিদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধন করাতে পারবে, তবে এক ম্যাচে খেলানো যাবে সর্বোচ্চ চারজনকে।

নিলাম তালিকার বাইরে থেকেও চাইলে যেকোনো সময় বিদেশি ক্রিকেটারদের দলে নেওয়া যাবে। তবে নিলাম থেকে অন্তত দুজন বিদেশি ক্রিকেটার নিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। স্থানীয় ক্রিকেটার সরাসরি চুক্তিতে ২ জন এবং নিলাম থেকে অন্তত ১২ জন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে—‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে অন্তত একজন, ‘বি’, ‘সি’ও ‘ডি’ ক্যাটাগরি থেকে তিনজন এবং ‘ই’ ক্যাটাগরি থেকে দুজন করে ক্রিকেটারকে দলে নিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে।

স্থানীয় ক্রিকেটারদের একটি খসড়া তালিকা পাওয়া গেলেও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের ৫০ লাখ, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের ৩৫ লাখ, ‘সি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের ২২ লাখ, ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের ১৮ লাখ, ‘ই’ ক্যাটাগরিতে ১৪ লাখ এবং ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে ১১ লাখ টাকা ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত সরাসরি চুক্তিতে মেহেদী হাসান মিরাজকে সিলেট টাইটানস, মোস্তাফিজুর রহমানকে রংপুর রাইডার্স এবং তাসকিন আহমেদকে ঢাকা ক্যাপিটালস দলে নিয়েছে। এই তিনজনের বাইরে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছেন জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস, ওপেনার তানজিদ হাসান ও নাঈম শেখ।

‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকা হাসান মাহমুদ ও সৌম্য সরকারকে নোয়াখালী এক্সপ্রেস, নুরুল হাসানকে রংপুর রাইডার্স, মেহেদী হাসান ও তানভীর ইসলামকে চট্টগ্রাম রয়্যালস, সাইফ হাসানকে ঢাকা ক্যাপিটালস এবং নাসুম আহমেদকে সিলেট টাইটানস সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে। এ ছাড়া নাজমুল হোসেন ও তানজিদ হাসানকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স।

সম্পর্কিত নিবন্ধ