হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল এলাকায় শুরু হয়েছে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘মাছ মেলা’। পৌষ সংক্রান্তিতে এই মেলার আয়োজন এখানে দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। প্রতি বছরের মতো এবারও পইল গ্রামের ঈদগাহের পাশে বসেছে মেলা। এখানে ছোট থেকে বড় ব্যতিক্রম মাছেরও দেখা মিলছে। সচরাচর দেখা যায় না এমন মাছও এসেছে মেলায়। এটি স্থানীয়দের কাছে প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
পইল গ্রামে মাছ মেলার আয়োজন করে পইল ইউনিয়ন পরিষদ। তারা জানায়, এখানে বোয়াল, আইড়, পাবদা, রুই, কাতল, চিতল, কালীবাউস, টাকি, পুটি, মাগুরসহ শতাধিক প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। বেশিরভাগ মাছ হাওড় ও বিল থেকে সংগ্রহ করা। হবিগঞ্জ ছাড়াও মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, এমনকি ঢাকা থেকেও এখানে লোকরা আসেন মাছ কিনতে।
মেলায় আসা মাছ বিক্রেতা ফজল মিয়া বলেন, “এবার বড় আকারের দুটি বোয়াল মাছ নিয়ে এসেছি। মাছগুলোর দাম চেয়েছি ৭০ হাজার টাকা।”
আরো পড়ুন:
শতবর্ষী মাছের মেলা, কোটি টাকা বিক্রির আশা
টাঙ্গাইলে ফাইলা পাগলার মেলা যৌথবাহিনীর অভিযানে বন্ধ
মুদ্দত আলী নামে অপর মাছ বিক্রেতা বলেন, “হাওড় থেকে জীবিত বোয়াল ও আইড় মাছ এনেছি। বিক্রির জন্য বসে আছি। ক্রেতারা এসে দামদর করছেন।”
সাজু মিয়া নামে মাছ বিক্রেতা বলেন, “একটি রুই মাছ নিয়ে এসেছি। ৩৫ হাজার টাকা দাম চেয়েছি। জীবিত আইড় মাছও আছে। দাম চেয়েছি ৫০ হাজার টাকা।”
মাছ কিনতে আসা আবুল হোসেন বলেন, “মেলায় প্রচুর মাছ এসেছে। আমরা মাছ ক্রয় করেছি। মাছগুলো দেশীয় নানা প্রজাতির। আমাদের মতো শত শত ক্রেতা মাছ কিনতে আসছেন। যুগের পর যুগ এ মেলা ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।”
পইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ বলেন, পৌষ সংক্রান্তির দিন মেলা বসে। মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে আসার সুযোগ পান সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ মেলা এলাকার সাধারণ মানুষের প্রাণের উৎসব।”
ঢাকা/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দিনভর ঘোরাঘুরি–সেলফি, শেষে গান–নাচ
সকালটা শুরু কিছুটা কড়া রোদে। ঘড়িতে ৯টা বাজতেই চট্টগ্রাম নগরের ফয়’স লেক অ্যানাউন্সমেন্ট পার্কের সামনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভিড়। নিবন্ধন বুথে নিবন্ধনের তথ্য যাচাই শেষে ব্যান্ড হাতে পার্কে প্রবেশের অপেক্ষা। ভেতরে ঢুকেই কেউ মেতে উঠেছেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ও সেলফি তোলায়, আবার কেউ ব্যস্ত হয়ে পড়েন রাইডে চড়ায়। প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি–প্রথম আলো কৃতী শিক্ষার্থী উৎসবের চিত্র ছিল এমন।
‘স্বপ্ন থেকে সাফল্যের পথে, একসাথে’ স্লোগান নিয়ে প্রথমবারের মতো আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হলো উচ্চমাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ‘প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি–প্রথম আলো কৃতী শিক্ষার্থী উৎসব–২০২৫’। প্রথম আলোর আয়োজনে ও প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজনের সহযোগী ছিল কনকর্ড গ্রুপ। অনুষ্ঠানে নিবন্ধন করেছেন ছয় হাজার শিক্ষার্থী।
পার্কে ঢুকেই শিক্ষার্থীরা হয়ে যান অনেকটা বাঁধনহারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং ও পড়াশোনার চাপ থেকে খানিক বিরতি পেয়ে মেতে ওঠেন আড্ডা, ঘোরাঘুরি ও সেলফি তোলার আনন্দে। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগেই পার্ক শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে যায়। তাঁদের কেউ কেউ আবার প্রথমবারের মতো ফয়’স লেকে এসেছেন। তাঁদের আনন্দ ছিল দ্বিগুণ।
পার্কের প্রবেশমুখে একটি সবুজ বোর্ড। তার সামনে বিশাল জটলা। কাছে যেতে জানা গেল, সেখানে নিজেদের তিনটি করে লক্ষ্য রঙিন কাগজে লিখে টানিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাসলিম উদ্দিন নিজের প্রথম লক্ষ্য হিসেবে লিখেছেন, নিজেকে ভিন্নভাবে তৈরি করা। তাসনিয়া তালুকদার লিখেছেন, একজন ভালো চিকিৎসক হতে চান তিনি। ফাতেমাতুজ জাহান চান একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে।
আরেকটু এগিয়ে গেলেই প্রথম আলো এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার। এখানে বিভিন্ন ধরনের অংশগ্রহণমূলক খেলাধুলা, ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটিসহ বিভিন্ন গেমের আয়োজন করা হয়েছে। পাশের সেলফি বুথ ও ৩৬০ ডিগ্রি ফটো বুথে সারা দিনই ছিল শিক্ষার্থীদের ভিড়। এর পাশে নিজেদের স্টলে ডার্ট গেমের আয়োজন করেছে প্রথম আলো বন্ধুসভা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সারাদিন আনন্দ–উচ্ছ্বাসে কাটে শিক্ষার্থীদের। আজ সকালে চট্টগ্রামের ফয়’স লেক অ্যামিউসমেন্ট পার্কে