Risingbd:
2025-10-14@11:13:51 GMT

পইলের মাছের মেলায় মানুষের ঢল

Published: 14th, January 2025 GMT

পইলের মাছের মেলায় মানুষের ঢল

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল এলাকায় শুরু হয়েছে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘মাছ মেলা’। পৌষ সংক্রান্তিতে এই মেলার আয়োজন এখানে দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। প্রতি বছরের মতো এবারও পইল গ্রামের ঈদগাহের পাশে বসেছে মেলা। এখানে ছোট থেকে বড় ব্যতিক্রম মাছেরও দেখা মিলছে। সচরাচর দেখা যায় না এমন মাছও এসেছে মেলায়। এটি স্থানীয়দের কাছে প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

পইল গ্রামে মাছ মেলার আয়োজন করে পইল ইউনিয়ন পরিষদ। তারা জানায়, এখানে বোয়াল, আইড়, পাবদা, রুই, কাতল, চিতল, কালীবাউস, টাকি, পুটি, মাগুরসহ শতাধিক প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। বেশিরভাগ মাছ হাওড় ও বিল থেকে সংগ্রহ করা।  হবিগঞ্জ ছাড়াও মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, এমনকি ঢাকা থেকেও এখানে লোকরা আসেন মাছ কিনতে।

মেলায় আসা মাছ বিক্রেতা ফজল মিয়া বলেন, “এবার বড় আকারের দুটি বোয়াল মাছ নিয়ে এসেছি। মাছগুলোর দাম চেয়েছি ৭০ হাজার টাকা।” 

আরো পড়ুন:

শতবর্ষী মাছের মেলা, কোটি টাকা বিক্রির আশা

টাঙ্গাইলে ফাইলা পাগলার মেলা যৌথবাহিনীর অভিযানে বন্ধ

মুদ্দত আলী নামে অপর মাছ বিক্রেতা বলেন, “হাওড় থেকে জীবিত বোয়াল ও আইড় মাছ এনেছি। বিক্রির জন্য বসে আছি। ক্রেতারা এসে দামদর করছেন।”

সাজু মিয়া নামে মাছ বিক্রেতা বলেন, “একটি রুই মাছ নিয়ে এসেছি। ৩৫ হাজার টাকা দাম চেয়েছি। জীবিত আইড় মাছও আছে। দাম চেয়েছি ৫০ হাজার টাকা।” 

মাছ কিনতে আসা আবুল হোসেন বলেন, “মেলায় প্রচুর মাছ এসেছে। আমরা মাছ ক্রয় করেছি। মাছগুলো দেশীয় নানা প্রজাতির। আমাদের মতো শত শত ক্রেতা মাছ কিনতে আসছেন। যুগের পর যুগ এ মেলা ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।” 

পইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ বলেন, পৌষ সংক্রান্তির দিন মেলা বসে। মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে আসার সুযোগ পান সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ মেলা এলাকার সাধারণ মানুষের প্রাণের উৎসব।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

‘হেনী কলেজের টেঁয়া লই চুদুরবুদুর চইলত নঅ’ স্লোগানটি কেন আবার প্রাসঙ্গিক

ফেনী কলেজের ফটক দিয়ে ঢুকতেই লম্বা মাঠ। মাঠের একদিকে অনার্স ভবনের পাশে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। সম্প্রতি কলেজটির শিক্ষার্থীদের ফি বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-অসন্তোষের বিষয়টি জানতেই কলেজে আসা। আড্ডারত শিক্ষার্থীদের কাছে ফি বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করলে একজন বললেন, ‘আমাদের কলেজের একটি স্লোগান নিয়ে সবাই হাসাহাসি করে। কিন্তু এখন এটাই আমাদের বাস্তবতা। দীর্ঘ দিনের লুটপাটের কারণে কলেজের ফান্ডের(তহবিল) অবস্থা খারাপ। তাই বাড়তি ফি চাপানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর।’

‘হেনী কলেজের টেঁয়া লই চুদুরবুদুর চইলতো নঅ’— জনপ্রিয় এই স্লোগানটি কথা শেষে যোগ করে কিছুক্ষণ হাসলেন মুহাইমিন তাজিম নামের ওই তরুণ। কলেজের গণিত বিভাগের এই শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কও। তাঁর কথার সঙ্গে একমত হলেন সেখানে বসে থাকা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের কথা, ফেনী কলেজের নানা অনিয়ম দুর্নীতি সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় স্লোগানটি আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফেনী কলেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ হয়। তাঁরা জানালেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা খাতে দুর্নীতির কারণে বর্তমান শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি ফি এর বোঝা চেপেছে। লুটপাটের কারণে কলেজের তহবিল সংকট পূরণ করতে বর্তমান অধ্যক্ষ শিক্ষার্থী প্রতি নতুন করে ১০০ টাকা ফি বাড়িয়েছেন।

কলেজটিতে চলতি বছর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার্থীর শাখায় ছাত্রদের ২ হাজার ৬৮০ টাকা, ছাত্রীদের ২ হাজার ৫৬০ টাকা এবং বিজ্ঞান শাখার ছাত্রদের ২ হাজার ৭৮০ ও ছাত্রীদের ২ হাজার ৬৬০ টাকা হারে ফি দিয়ে ভর্তি হতে হয়েছে। বিগত বছরের এই ফি ১০০ টাকা বেশি।

ফি বৃদ্ধির যে কারণ দেখাল কর্তৃপক্ষ

চলতি বছরের ১০ এপ্রিল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ফি বৃদ্ধি করা হয়। সভায় ‘অত্যাবশ্যকীয় নিরাপত্তা ফান্ড’ ৬৫০ টাকা স্থলে ৭৫০ টাকা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, কলেজের কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেতন ও বোনাস মিলিয়ে কর্মচারীদের পেছনে বছরে ব্যয় হয় ৭১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এই খাতে নতুন আরও আটজন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ায় বছর শেষে খরচ দাঁড়াচ্ছে ৭৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন-বোনাস ছাড়াও এই খাত থেকে টাকা ব্যয় করা হয় ভূমিসংক্রান্ত মামলার উকিলের ফি, কলেজ আঙিনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়। গড়ে বছরে ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু এই খাতে শিক্ষার্থীদের থেকে বছরে আদায় হচ্ছে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ফেনী কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবু হেনা আবদুল আউয়ালের সঙ্গে কলেজের নানা অনিয়ম নিয়ে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ফেনী কলেজ নিয়ে জনপ্রিয় হওয়া স্লোগানের একটা ইতিহাস আছে। ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় স্থানান্তরিত হয়। সেখানকার স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কলেজের অর্থ নিয়ে বিবাদ তৈরি হলে ছাত্ররা এমন স্লোগান দেয়। আর্থিক অনিয়মের প্রতিবাদ থেকেই এই স্লোগানের জন্ম। এই পরিস্থিতিতে স্লোগানটি ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

উৎসব-অনুষ্ঠানের অতিরিক্ত ব্যয়

কলেজের বিবিধ খাতের টাকা থেকে উৎসব ও অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিধান থাকলেও নিরাপত্তা খাত থেকে টাকা নিয়ে উৎসবে খরচ করা হয়েছে। কলেজের নথিপত্র বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্যয় করা হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৮ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার ৩০৪ টাকা। তবে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ব্যয় কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় হয় ৪৮ হাজার ১৫৪ টাকা।

২০২৪ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ব্যয় হয় ৪৮ হাজার ১৫৪ টাকা। তার আগের দুই বছর ২০২৩ সালে হয় ১ লাখ ২৯ হাজার ৯০৬ টাকা। ২০২২ সালে হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৮১১ টাকা।

বিগত কয়েক বছরে সরকারি দিবস কিংবা উৎসবে অস্বাভাবিক এমন খরচের পেছনে দুর্নীতিই মূল কারণ বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস কিংবা শহীদ দিবস দিবসগুলো সরকারি ছুটি হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তেমন থাকত না। রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীসহ সব মিলিয়ে গড়ে উপস্থিতি থাকত দুই শতাধিক। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য খরচ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক বলে মনে করেন তাঁরা।

শতবর্ষ পুরোনো এই কলেজে বিভিন্ন বিভাগে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। ফি বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব
  • ‘হেনী কলেজের টেঁয়া লই চুদুরবুদুর চইলত নঅ’ স্লোগানটি কেন আবার প্রাসঙ্গিক
  • বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে উৎসবের আমেজ, প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ
  • এবার দুর্গাপূজায় বড় অঘটন হয়নি, তবে সরকারের পদক্ষেপে আয়োজকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়
  • যুক্তরাষ্ট্রের উৎসবে পুরস্কার জিতল ‘নিশি’
  • ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মার্কেটিং ফেস্ট ৫.০ অনুষ্ঠিত
  • খেতুরে এবার ব্যাপক দর্শনার্থী সমাগম, দীর্ঘ যানজট