যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে প্রাণ গেল নারীর, আহত ১০
Published: 15th, January 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সাকুরা পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়ক থেকে খাদে পড়ায় একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ যাত্রী।
বুধবার বিকেলে দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. রোকিবুজ্জামান। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের চুমুরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালায়। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহতদের মধ্যে এক নারীকে ঢাকায় পাঠানো হলে পথে গভীররাতে মৃত্যু হয় তার।
নিহত ফরিদা বেগম (৫৮) পিরোজপুর জেলার নিছারাবাদের সুতিয়াকাঠি গ্রামের মোহাম্মদ আমির হোসেনের স্ত্রী। আহতরা ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেন।
ওসি রোকিবুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনার পর আহতদের মধ্যে একজন নারী যাত্রী নিহত হয়েছেন। তবে বুধবার সারাদিনেও দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করা যায়নি। কারণ, হাইওয়ে থানায় যে রেকার আছে তা দিয়ে দুর্ঘটনাস্থল (খাদ) থেকে বাসটি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। তবে পুলিশের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
ওসি আরও জানান, ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপার পলাতক থাকায় তাদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে চুমুরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে লাকড়ি বোঝাই করছিল একটি ট্রাক। এ সময় ভাঙ্গা থেকে বরিশালমুখী দ্রুতগতির সাকুরা পরিবহনটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটিকে অতিক্রম করতে গেলে ট্রাকটির পেছনে ধাক্কা মারে।
এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে যায় পরিবহনটি। এতে ঘটনাস্থলে প্রায় ১০-১২ জন যাত্রী আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠায়। আহতদের মধ্যে এক নারীযাত্রীর পা কেটে যায়। পরে তাকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকায় পাঠানোর হলে পথিমধ্যে গভীর রাতে মারা যান ওই নারী যাত্রী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা ও কৌশলে নতুন তালেবানের ভিন্ন এক শাসন
দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের সীমান্ত প্রদেশ খোস্তের মানুষের এই মুহূর্তে নানা প্রশ্ন। তাঁদের প্রশ্নের কেন্দ্রে রয়েছেন একজন আফগান শরণার্থী—রহমানুল্লা লাকানয়াল। বলা হচ্ছে, খোস্তের লাকান জেলার বাসিন্দা রহমানুল্লা লাকানয়াল ওয়াশিংটনে দুই নিরাপত্তাকর্মীর ওপরে ২৬ নভেম্বর গুলি চালান। মৃত্যু হয় একজনের, আহত আরেকজন। আহত অবস্থায় হাসপাতালের বিছানা থেকে রহমানুল্লা লাকানয়াল জানিয়েছেন তিনি নির্দোষ।
কিন্তু মানুষ উদ্বিগ্ন। এর নানা কারণ আছে বলে মনে করেন খোস্ত শহরের বাসিন্দা এবং প্রদেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় শেখ জায়েদ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আহসান উল্লাহ। আফগানিস্তানে আমার হোটেলে পরিচয় হয় আহসানের সঙ্গে। বিশ্বরাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে গড়পড়তা আফগানের থেকে অনেক বেশি জানেন আহসান।
ওয়াশিংটনের ঘটনার কী প্রভাব খোস্তের ওপরে পড়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আহসান ডিসেম্বরের গোড়ায় ফোনে বললেন, ‘একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি। যে লোকটা (লাকানয়াল) গুলি চালাল, আমেরিকাই তাঁকে আফগানিস্তানে মানুষকে হত্যা করার প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এখন সে আমেরিকার রক্ষীদেরই মেরে বসল।’
আহসানের কথায়, এর ফলে বিপদে পড়ল সেই সব আফগান শরণার্থী, যাঁরা আমেরিকা বা ইউরোপে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের যেকোনো সময় ফেরত পাঠানো হতে পারে। তিনি আরও বললেন, ‘একই সঙ্গে এটাও ঠিক যে আমেরিকা যদি পেশাদার হত্যাকারী তৈরি না করত তাহলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। ফলে সব মিলিয়ে আফগানরা বিভ্রান্ত, একধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি।’
হিংসা অবশ্য আফগানিস্তানে বিশ বছরের যুদ্ধের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে, যা তালেবানের পক্ষেই যায়। ওয়াশিংটনে গুলি চললে যেমন বিষয়টি তালেবানের পক্ষের আখ্যান হিসেবে দাঁড় করানো যায়, পাকিস্তান কাবুলের ওপরে বোমা ফেললেও তেমনই যায়। এটা বুঝেছে নতুন তালেবান।
এটা স্পষ্ট যে নতুন তালেবান অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দলের মতোই যেকোনো হিংসার ঘটনা নিয়ে একটা ‘ন্যারেটিভ’ বা আখ্যান নির্মাণের গুরুত্ব বুঝেছে।অতীতের মুজাহিদরা বুঝেছেন, যুদ্ধের বা হিংসার স্মৃতি ফিরলে বা যুদ্ধ শুরু হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে তৈরি হওয়া প্রতিষ্ঠান–বিরোধিতার হাওয়া গতি হারায়। তাই তাঁরা বারবার বলছেন, ওয়াশিংটনের ঘটনার জন্য আদতে দায়ী আমেরিকাই। এমনকি তালেবান-বিরোধীদেরও অনেকটা সেই মত। তালেবানের অন্যতম সমালোচক এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সাবেক উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, লাকানয়ালের মতো মানুষের এ পর্যন্ত আসার ক্ষেত্রে দায় আমেরিকার।
ফলে এটা স্পষ্ট যে নতুন তালেবান অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দলের মতোই যেকোনো হিংসার ঘটনা নিয়ে একটা ‘ন্যারেটিভ’ বা আখ্যান নির্মাণের গুরুত্ব বুঝেছে। এটাকে তাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য বা বৈশিষ্ট্য বলে মনে করছেন অনেকে।
অধ্যাপক ফয়েজ জালান্দ