ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সাকুরা পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়ক থেকে খাদে পড়ায় একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ যাত্রী।

বুধবার বিকেলে দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো. রোকিবুজ্জামান। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের চুমুরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালায়। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহতদের মধ্যে এক নারীকে ঢাকায় পাঠানো হলে পথে গভীররাতে মৃত্যু হয় তার।

নিহত ফরিদা বেগম (৫৮) পিরোজপুর জেলার নিছারাবাদের সুতিয়াকাঠি গ্রামের মোহাম্মদ আমির হোসেনের স্ত্রী। আহতরা ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেন।

ওসি রোকিবুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনার পর আহতদের মধ্যে একজন নারী যাত্রী নিহত হয়েছেন। তবে বুধবার সারাদিনেও দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করা যায়নি। কারণ, হাইওয়ে থানায় যে রেকার আছে তা দিয়ে দুর্ঘটনাস্থল (খাদ) থেকে বাসটি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। তবে পুলিশের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

ওসি আরও জানান, ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপার পলাতক থাকায় তাদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে চুমুরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে লাকড়ি বোঝাই করছিল একটি ট্রাক। এ সময় ভাঙ্গা থেকে বরিশালমুখী দ্রুতগতির সাকুরা পরিবহনটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটিকে অতিক্রম করতে গেলে ট্রাকটির পেছনে ধাক্কা মারে। 
এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে যায় পরিবহনটি। এতে ঘটনাস্থলে প্রায় ১০-১২ জন যাত্রী আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠায়। আহতদের মধ্যে এক নারীযাত্রীর পা কেটে যায়। পরে তাকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকায় পাঠানোর হলে পথিমধ্যে গভীর রাতে মারা যান ওই নারী যাত্রী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আরো পড়ুন:

সখীপুরে মেয়েকে হত্যার পর নিজেকে শেষ করলেন মা

নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই

সাক্ষীরা হলেন, জবি শিক্ষার্থী সৈকত হোসেন এবং সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদুর রহমান। সৈকত নিহত জোবায়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই এবং ডা. ওয়াহিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বর্ষার মামা।

‎মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন।

‎জবানবন্দিতে সৈকত বলেন, “আমি জবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও জোবায়েদ ভার্সিটির বড় ভাই। আমি জোবায়েদ ভাইয়ের ক্লোজ ছোট ভাই হওয়াতে বর্ষা আমার নাম্বার জোবায়েদ ভাই থেকে নেয়। মাঝে মাঝে হোয়াটসঅ্যাপ হাই, হ্যালো কথাবার্তা হত। ২-৩ মাস আগে বর্ষা আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। তখন থেকে বর্ষার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ হয়নি। জোবায়েদ ভাই প্রায় ১ বছর ধরে বর্ষাকে বাসায় টিউশন পড়াত।”

‎তিনি বলেন, “ভার্সিটি এলাকায় থাকাকালে গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটের দিকে বর্ষা তাকে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দেয়, ‘ভাইয়া কই তুমি?’ আমি জানাই ক্যাম্পাসে। বর্ষা বলে, ‘স্যারের আম্মুর নাম্বার আছে?’ কারণ জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘লাগবে।’ ভাইয়ের কিছু হয়ছে কি না জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘ভাইরে (জোবায়দে) কে জানি মাইরা ফেলছে।’ আমি বলি, মাইরা ফেলছে বলতে? বর্ষা বলে, ‘খুন করে ফেলছে।’ তখন বর্ষাকে কল দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এরপর বিষয়টি বড় ভাইদের জানাই।”

‎ডা. ওয়াহিদুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, “গত ১৯ অক্টোবর সাপ্তাহিক নৈশ্যকালীন ডিউটি থাকায় বাসায় অবস্থান করছিলাম এবং ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ আমার স্ত্রীকে দ্বিতীয় তলার চাচাতো ভাই ফোন করে জানায়, সিঁড়িতে কোনো একজন লোক পড়ে আছে। আমরা তখন সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে দেখি সিঁড়ির মাঝামাঝি একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।”

তিনি বলেন, “তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ির লোকজন জড় হয়ে যায় এবং সেখানে শনাক্ত হয় যে, আমার ভাগ্নি বর্ষার প্রাইভেট টিউটর জুবায়েদের মরদেহ। তাৎক্ষণিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে অবহিত করি।”

বর্ষার মামা জানান, পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তার ভাগ্নি বর্ষার সঙ্গে মাহির নামক এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং জোবায়েদ মাস্টারের সঙ্গেও বর্ষার প্রেম ছিল। এই দ্বন্দ্বের কারণে মাহির রহমান, জোবায়েদ মাস্টারকে হত্যা করে ঘটনার দিন দৌড়ে পালিয়ে যায়।

‎মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মো. জোবায়েদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বংশাল থানাধীন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নুর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রৌশান ভিলায় বর্ষাকে পড়ানোর জন্য যান।

সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রী জোবায়েদ হোসেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই সৈকতকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে জানায়, “জোবায়েদ স্যার, খুন হয়ে গেছে। কে বা কারা জোবায়েদ স্যারকে খুন করে ফেলছে।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. কামরুল হাসান ৭টার দিকে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্যটি জানান। এনায়েত তার শ্যালক শরীফ মোহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল রৌশান ভিলায় পৌঁছান। ভবনের নিচতলা থেকে ওপরে ওঠার সময় সিঁড়ি এবং দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পান। ওই ভবনের তৃতীয় তলার রুমের পূর্ব পার্শ্বে সিঁড়িতে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উপুড় অবস্থায় দেখতে পান।

‎ঘটনার দুইদিন পর ২১ অক্টোবর জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন বংশাল থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জোবায়েদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যা করেছে।

‎মামলায় বর্ষা, তার প্রেমিক মো. মাহির রহমান, মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান ২১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে প্রাইভেট কার ছিটকে পড়ে একজনের মৃত্যু
  • ফেনীতে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু
  • কামাল সিদ্দিকী: আমলাতন্ত্রের ঘেরাটোপ ভাঙা একজন দেশপ্রেমী
  • চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু
  • গাজার ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি আসলে কারা চালাচ্ছে
  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব, জমি ছাড়তে হবে ইউক্রেনকে
  • এলোমেলো শিক্ষা খাত, বাড়ছে সংকট
  • সৌদি যুবরাজের সমালোচক জামাল খাশোগি যেভাবে মারা হয়েছিলো
  • সলিলের গানের ভেতরেই ছিল মিছিলের স্লোগান
  • জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ