আসামির জিজ্ঞাসাবাদে সব থানায় স্বচ্ছ কাঁচের ঘরের প্রস্তাব
Published: 15th, January 2025 GMT
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জন্য সব থানায় স্বচ্ছ কাঁচের ঘর নির্মাণের সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন বন্ধ হবে। এছাড়া বেআইনি সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের শক্তি প্রয়োগের সীমা নির্ধারণ, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার ও আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা চেয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।
সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পুলিশ সংস্কার কমিশন আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ রয়েছে।
পুলিশ বাহিনী সংস্কারের জন্য ২২টি আইনের সংশোধন ও পরিমার্জন চেয়েছে এই কমিশন।
কমিশন প্রধান বলেন, ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি পুলিশকে তিন হাজারের বেশি আইন নিয়ে কাজ করতে হয়। সব আইন খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে ২২টি আইনের হয় সংশোধন, পরিমার্জন বা কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতে হবে। ওই ২২টি আইনের কোন কোন ক্ষেত্র আমাদের আপত্তি আছে, বলে দিয়েছি; বলে সুপারিশ করেছি।
প্রসঙ্গত, সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে আজ এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের সরকারের দুজন উপদেষ্টা জানিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে প্রথমবার হলো ম্যারাথন
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথের একদিকে কাপ্তাই হ্রদের নীল আভা, অন্যদিকে পাহাড়ের সবুজ। দেখতে যতটা মনোরম, চলাচল ততটা নয়। উঁচু–নিচু রাস্তার কারণে ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না অনেকেই। তবে সেই চ্যালেঞ্জের মধ্যেই পাহাড়ি রাস্তায় ২৪ কিলোমিটার দৌড়ালেন ২৫০ দৌড়বিদ।
আজ শনিবার সকাল আটটায় জেলার কাপ্তাইয়ের বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে এ ম্যারাথন শুরু হয়। শেষ হয় রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে গিয়ে। জেলা পৌরসভা সূত্র জানায়, পাহাড়ে এবারই প্রথম এত দীর্ঘ দূরত্বে ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ২৫০ দৌড়বিদ অংশ নেন। এর মধ্যে বয়স ও লিঙ্গভেদে ১৩ জনকে পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ম্যারাথন শেষ করা দৌড়বিদদের সনদ ও মেডেল দেওয়া হয়।
দীর্ঘ এ উঁচু–নিচু, আঁকাবাঁকা রাস্তা জয় করেছেন নারীরাও। নারীদের মধ্যে এ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন ফরিদা আক্তার। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে ম্যারাথন ভালো লেগেছে। রাস্তাটি অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। হুট করে পাহাড়ে এসে এ রকম দৌড়ানো কঠিন, কিন্তু চারদিকে পানি, মাঝখানে রাস্তা, দেখতেও ভালো লেগেছে।’
নারীদের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন কাউখালী উপজেলার শিক্ষার্থী হলানুচিং মারমা। তিনি বলেন, ‘এই প্রথম ম্যারাথনে যোগ দিলাম। দ্বিতীয় হতে পেরে খুব খুশি।’ এ বিভাগে তৃতীয় থেকে পঞ্চম হয়েছেন হলানুচিং মারমা, পাইনুমা মারমা, মাথুইচিং মারমা ও সুইটি আক্তার।
অন্য বিভাগে বিজয়ী যাঁরা
প্রতিযোগিতাটিতে নারী বিভাগ ছাড়াও পুরুষ ও চল্লিশোর্ধ্ব—এ দুই বিভাগে সেরাদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরুষ বিভাগে প্রথম হওয়া ব্যক্তির নাম আশরাফুল আলম। এ ছাড়া পারভেজ পলাশ দ্বিতীয়, মো. জাকির হোসেন তৃতীয়, হানিফ হোসাইন চতুর্থ ও মো. আবদুল্লাহ আল নোমান পঞ্চম হয়েছেন।
এ ছাড়া চল্লিশোর্ধ্ব বিভাগে প্রথম খোন্দকার শওকত ওসমান, দ্বিতীয় আবু মোহাম্মদ জুলফিকার ও তৃতীয় হয়েছেন মো. শাহেদ শেখ।
ম্যারাথনের পর পৌরসভা প্রাঙ্গণে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়। এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পৌর প্রশাসক মো. মোবারক হোসেন। এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক নাজমা আশরাফী। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুর রকিব, সেনা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল একরামুল রাহাত পিএসসি ও সিভিল সার্জন নুয়েন খীসা।
পৌর প্রশাসক মো. মোবারক হোসেন বলেন, রাঙামাটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিকেরা এখনো সেই মানের সেবা পান না। এ সেবা নিশ্চিত করে তিনি কাজ করছেন। কাপ্তাই হ্রদ দূষণমুক্ত রাখতে আগামী দিনে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন নুয়েন খীসা ম্যারাথনের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ম্যারাথন দৌড়ের ইতিহাস শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯০ অব্দে। এই কিংবদন্তি ঘটনাকে স্মরণ করে ১৮৯৬ সালের অলিম্পিকে প্রথম ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়।