ছাত্র-জনতার আন্দোলন গুলি চালানো ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মী কারাগারে
Published: 22nd, January 2025 GMT
চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানো ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে নগরের চান্দগাঁওয়ের বেপারিপাড়া শ্যামলী আবাসিক এলাকা থেকে ছাত্রলীগ কর্মী ঋভু মজুমদার ও যুবলীগ কর্মী মো. জামালকে গ্রেপ্তার তরা হয়। তারা নগরের চান্দগাঁও ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হকের অনুসারী।
পুলিশ জানায়, নগরের বহদ্দারহাটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানো তৌহিদুল ইসলাম ফরিদকে গত ২২ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঋভু ও জামালের নাম আসে। পরে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা যায়, দু’জন দুটি বিদেশি পিস্তল হাতে গুলি করছেন।
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, তৌহিদ, ঋভু, জামাল তিনজনই সাবেক কাউন্সিলর এসরারুলের সহযোগী। বহদ্দারহাটে হামলা চালানোর সময় তিনজন একসঙ্গে এসেছিলেন। তৌহিদের হাতে ছিল পাকিস্তানি শুটারগান। বাকি দু’জনের হাতে দুটি বিদেশি পিস্তল। আমরা অস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাঠক বাড়াতে বহুমুখী উদ্যোগ নিন
পাবনা শহরের আবদুল হামিদ সড়কে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ১৩৫ বছরের প্রাচীন অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি। ১৮৯০ সালে মাত্র দুটি কক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই জ্ঞানতীর্থ আজ বিশাল সাদা চারতলা ভবনে বিস্তৃত। ৩৮ হাজার বইয়ের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে এটি নিঃসন্দেহে জ্ঞানের এক অমূল্য ভান্ডার। দুঃখজনক হচ্ছে, এই লাইব্রেরিতে সেই অর্থে তেমন কোনো পাঠক নেই।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, লাইব্রেরিটিতে বাংলা, ইংরেজি, উর্দু ও ফারসি ভাষার অসংখ্য পুরোনো বই, কিংবদন্তি লেখকদের দুর্লভ বই ও তালপাতায় হাতে লেখা অসংখ্য পাণ্ডুলিপি সযত্নে সংরক্ষিত আছে। আছে নতুন বইও। দারুণ ব্যাপার হচ্ছে, শিশুতোষ বই দিয়ে সাজানো শিশুদের জন্য আলাদা পাঠকক্ষও রয়েছে। বলা যায়, আধুনিক ভবনে এমন সমৃদ্ধ লাইব্রেরি দেশে কমই আছে। তবে লাইব্রেরিটির মহাসচিব, প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল মতীন খান হতাশা নিয়ে বললেন, ‘দিন দিন পাঠক কমে যাচ্ছে। শিক্ষক-গবেষকেরা আসেন না বললেই চলে। পেশাজীবীদেরও দেখা পাওয়া যায় না। তরুণদের মধ্যে যাঁরা আসেন, তাঁরা চাকরির প্রস্তুতির বই পড়েন।’
পাঠক কমে যাওয়ার এই প্রবণতা শুধু অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির নয়, এই প্রবণতা এখন বিশ্বজুড়ে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার দাপটে তরুণ প্রজন্মের পাঠাভ্যাস আমূল পাল্টে গেছে। দীর্ঘ প্রবন্ধ বা গবেষণামূলক বইয়ের বদলে তারা দ্রুত তথ্য এবং বিনোদনের দিকে ঝুঁকছে। আর এ দেশে গ্রন্থাগার এখন অনেকের কাছে ‘নলেজ হাব’-এর চেয়ে ‘চাকরি প্রস্তুতির কেন্দ্র’ হয়ে উঠেছে।
পাবনার এ লাইব্রেরির অমূল্য সংগ্রহগুলোকে কেবল সংরক্ষণ করাই যথেষ্ট নয়, এগুলোকে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার চ্যালেঞ্জও নিতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগ। স্যামসন এইচ চৌধুরীর মতো শিল্পপতিরা অতীতে নতুন ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করলেও, এই বিশাল সংগ্রহের রক্ষণাবেক্ষণ, ডিজিটালাইজেশন এবং পাঠোদ্ধারের মতো বিশেষজ্ঞ কাজের জন্য নিয়মিত আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। সরকারের বার্ষিক ৫০ হাজার টাকার অনুদান, যার অর্ধেক বই কেনায় যায়, তা গ্রন্থাগারের মাসিক ১ দশমিক ৫ লাখ টাকার খরচের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।
পাঠক বৃদ্ধির জন্য চাকরি প্রস্তুতি বাদেও সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও বিতর্ক নিয়ে কর্মশালা এবং সেমিনারের আয়োজন করে তরুণদের আকৃষ্ট করতে হবে। স্থানীয় স্কুল-কলেজগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বছরজুড়ে কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্য জ্ঞানচর্চার প্রতি আগ্রহও তৈরি হবে। লাইব্রেরিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম উৎসাহিত করতে হবে। আশা করি, লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে।