নার্সিংয়ে ভর্তি, আবেদনের সময় বাড়ল ৭দিন
Published: 13th, March 2025 GMT
সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত (সামরিক-বেসামরিক) ও বেসরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিতে আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত (সামরিক-বেসামরিক) ও বেসরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন নার্সিং, ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি এবং ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবেন।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অনলাইনে আবেদন করা যাবে ১৯ মার্চ রাত ১১.
আবেদনের শর্তাবলি—
*প্রার্থীকে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে
*আবেদনকারীকে ২০২২, ২০২৩ অথবা ২০২৪ সালের এইচএসসি/সমমান এবং ২০২০, ২০২১ অথবা ২০২২ সালের এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে
এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষার মধ্যে ব্যবধান কোনোভাবেই ৩ বছরের অধিক হতে পারবে না।
*ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট আসনের ১০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আসনের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থী ভর্তি করা যাবে। ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শুধু নারী প্রার্থী আবেদনের যোগ্য হবে।
(ক) চার বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং (বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স): প্রার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ন্যূনতম ৭.০০ থাকতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ–৩.০০–এর কম হবে না। প্রার্থীকে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে ন্যূনতম জিপিএ–২.৫০ থাকতে হবে
(খ) তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি: প্রার্থীকে যেকোনো বিভাগে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ন্যূনতম ৬.০০ থাকতে হবে। তবে কোনো একটি পরীক্ষায় জিপিএ–২.৫০–এর কম হবে না।
পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক নম্বর—
বিএসসি ও ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য পৃথক পৃথক প্রশ্নপত্রে ১ ঘণ্টার ১০০ (একশত) নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। (ক) বিএসসি ইন নার্সিং: বাংলা-২০, ইংরেজি-২০, গণিত-১০, বিজ্ঞান-৪০ (জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন) এবং সাধারণ জ্ঞান-১০। (খ) ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি: বাংলা-২০, ইংরেজি-২০, সাধারণ গণিত-১০, সাধারণ বিজ্ঞান-৩০ এবং সাধারণ জ্ঞান-২০।
আরও পড়ুনদেশের আরও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি হলো১১ মার্চ ২০২৫প্রার্থী নির্বাচন যেভাবে
এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এবং প্রার্থীর এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৫ গুণিতক = ২৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)। এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৫ গুণিতক = ২৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)। এমসিকিউ পরীক্ষা: ১০০ নম্বর, সর্বমোট = (২৫+২৫+১০০) = ১৫০ নম্বর। এ পরীক্ষায় ৪০ (চল্লিশ) বা তদূর্ধ্ব নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীরা উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে বিবেচিত হবেন। জাতীয় মেধার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীর নির্বাচনী পরীক্ষার মেধাক্রম ও প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত পছন্দের ক্রমানুসারে প্রার্থী কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে তা নির্ধারিত হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধাক্রম অনুসারে গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটি ভর্তির অনুমোদন প্রদান করবে।
ভর্তি পরীক্ষার ফি
বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের জন্য ৭০০/- (সাতশত) টাকা, ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা আবেদন ফি হিসেবে টেলিটক প্রিপেইড মুঠোফোনের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। অনলাইনে ফি জমা হলেই আবেদন চূড়ান্তভাবে গৃহীত হবে।
আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ
অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে: ১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার, দুপুর ১২.০০)
অনলাইনে আবেদনের শেষ: ১৯ মার্চ ২০২৫ (বুধবার, রাত ১১.৫৯)
অনলাইনে আবেদনের ফি জমার শেষ তারিখ: ২০ মার্চ ২০২৫ (বৃহস্পতিবার, রাত ১১.৫৯)
অনলাইন প্রবেশপত্র ডাউনলোড শুরু: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ (মঙ্গলবার, দুপুর ১২.০০)
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময়: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ (শুক্রবার, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত)
আরও পড়ুনআইইএলটিএস প্রস্তুতি, ইংরেজির স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য প্রতিদিন করণীয়২ ঘণ্টা আগেসংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে যা করণীয়
মুক্তিযোদ্ধা ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ প্রযোজ্য সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষার দিন কার্যকর সরকার কর্তৃক জারিকৃত সর্বশেষ বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে। তবে সংরক্ষিত আসনে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না গেলে সাধারণ মেধাক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
ফরম পূরণের নির্দেশিকা ও ভর্তির বিস্তারিত তথ্য
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তির জন্য অনলাইনে ফরম পূরণের নির্দেশিকা ও ভর্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এবং ভর্তির নীতিমালা স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ওয়েবসাইট , নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে জানা যাবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র চ ২০২৫ ও এইচএসস ইন ন র স পর ক ষ র ব সরক র র জন য র ত ১১ ব এসস বছর ম আসন র
এছাড়াও পড়ুন:
মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের
শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিয়ে মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্কের বন্ধনে নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয়ের মধ্যে এলো মহান মে দিবস; আজ ১ মে বিশ্ব শ্রমিক দিবস।
পুরো বিশ্বের সঙ্গে আজ বাংলাদেশে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয়, রাজনৈতিক ও সংগঠনিক বিভিন্ন পক্ষ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
মহান মে দিবসে এবার বাংলাদেশের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
আরো পড়ুন:
অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে হবে
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্থায়ী চাকরির নিশ্চয়তা ও সম্মান পাক
সভ্যতা নির্মাণের কারিগর শ্রমিকদের সম্মানে এবং ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনে আত্মহুতি দেওয়া শ্রমিকদের শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণে দিবসটিতে বিশ্বের ৮০টির বেশি দেশে জাতীয় ছুটি থাকে। বাংলাদেশেও আজ জাতীয় ছুটি। অনেক দেশে বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়।
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নেমে শ্রমিকেরা আত্মাহুতি দেন। দিনটির ঘটনা ইতিহাসে আজো অম্লান। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয় দিবসটি।
মহান মে দিবসের সবচেয়ে বড় অর্জন শ্রমশোষণ কমিয়ে আনার পথ সুগম করা। তবে শ্রমদাসত্ব বিলোপ হয়নি। আধুনিক শ্রমদাসত্বের শেকলে নতুন কায়দায় বন্দি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ উপযুক্ত শ্রমের বিনিময়ে ন্যায্য অধিকার চায়; যেখানে নিয়োগকারী ও শ্রমিক চোখে চোখ রেখে কথা বলবে, যে যার পাওনা ও অধিকার বুঝে নেবে।
বাংলাদেশে শ্রম ব্যবস্থা এখনো সেকেলে শোষণের ধারণায় পুষ্ট, যা থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার শ্রমিকের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের লক্ষ্যে গঠন করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এরই মধ্যে কমিশন তাদের সুপারিশমালা সরকারকে দিয়েছে; এখন চলছে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ। সরকার, রাজনৈতিক দল, নিয়োগকারী, শ্রমিক ও বিশেষজ্ঞ- সব অংশীজন মিলেই কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশে কী কী পরিবর্তন আসছে, জানতে চাইলে বুধবার (৩০ এপ্রিল) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “শ্রম আইনে অনেক পরিবর্তন আসছে।”
“এখনো পাকাপোক্ত হয়নি, তবে অনেক পরিবর্তন আসছে। আমাদের আলোচনা হয়েছে। যেসব প্রস্তাব আমরা দিয়েছি, যেগুলো আমরা একসেপ্ট করেছি, সেগুলো আইএলও-কে (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) বলা হয়েছে। সেগুলো ফাইনালাইজ করতে হবে। আরো অনেক কিছু আছে,” বলেন তিনি।
কবে নাগাদ শ্রমিকরা নতুন আইনের বিষয়ে ‘সুখবর’ পাবেন, তার কোনো দিনক্ষণ না জানালেও সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত করা হবে।”
অবশ্য কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রচলিত শ্রমিকদের পাশাপাশি অপ্রচলিত খাতের শ্রমিকদেরও স্বার্থ রক্ষার উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।
তৈরি পোশাকখাতসহ সব শিল্পখাতের শ্রমিকদের বিষয়ে কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, শ্রম আইনে শিল্পের উদ্যোক্তাদের ‘মালিক’ এর বদলে ‘নিয়োগ কর্তা’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। কোনো শ্রমিককে এক দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলেও চুক্তিপত্র বা পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
সব খাতের শ্রমিকদের পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে শ্রম আইন ‘সর্বজনীন’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সারা দেশের শ্রমিকদের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার গঠনের কথা বলেছে কমিশন।
সুপারিশমালা বলা হয়েছে, সেবা খাতে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে স্ব-উদ্যোগে নিয়োজিতরা তথ্য ভাণ্ডারের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন এবং এই নিবন্ধনই শ্রমিক হিসেবে তার পরিচয়পত্র হবে।
মৎস্যজীবী, রিকশাওয়ালা, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক ও হকারের মতো স্বাধীন শ্রমজীবীদেরও একইভাবে নিবন্ধন করে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব বলে কমিশন মত দিয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখার এক স্মারকে শ্রমিককে চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং মহান মে দিবসে কারখানা বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে, গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আরএমজি-বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি বিষয়ক টিসিসি) ২০তম সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ব্যতীত শ্রমিক চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করার পূর্বে স্থানীয় প্রশাসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং বিজিএমইএর ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা না হলে, মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো রয়েছে, মহান মে দিবসে সকল কারখানা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশে মহান মে দিবসে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য সেফটি দিবস’ পালন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বর্ণাঢ্য র্যালি করবে, যেটি উদ্বোধন করবেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হবে এই র্যালি।
মে দিবসে ঢাকার নয়া পল্টনে দুপুর ২টায় শ্রমিক সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বললেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
ঢাকা মহানগরের বাইরে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মে দিসবের শ্রমিক সমাবেশে যোগ দেবেন বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে পুরানা পল্টন মোড়ে শ্রমিক সমাবেশের করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেখানে কথা বললেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার সঙ্গে থাকবেন নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। বড় পরিসরে এই সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত।
মেহনতি মানুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা: প্রধান উপদেষ্টা
মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে বিশেষ বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বাণীতে তিনি বলেছেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান মে দিবস-২০২৫’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রম, ন্যায্য মজুরি ও শ্রমের মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটে শ্রমিকদের রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক ও শ্রমের মর্যাদা সম্মানের সঙ্গে বিশ্বময় স্বীকৃতি লাভ করে। এ দিবসে আদায় হয়েছে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার।
“সে প্রেক্ষাপটে এটি শুধু একটি সাধারণ দিবস নয়, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার ঐতিহাসিক এ দিনে যাদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে শ্রমিক অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে, তাদেরসহ দেশের সকল মেহনতি মানুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।”
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বছর মে দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’, আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”
“শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক, আর তাদের যৌথ প্রচেষ্টাই একটি শক্তিশালী, আত্মনির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পোশাক খাত, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ, পরিবহণ, প্রযুক্তি - প্রতিটি খাতের উন্নতির পেছনে রয়েছে শ্রমিক এবং মালিকের মেধা ও প্রাণান্তকর পরিশ্রম,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার পরিবেশ সুদৃঢ় করার আহ্বান রেখে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা যদি ঐক্য ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখি, তাহলে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তব হয়ে উঠবে।”
তিনি বলেন, “এ বছর মহান মে দিবসের পাশাপাশি একইসঙ্গে আমরা ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ পালন করছি। শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা শুধু শ্রমিকদের অধিকারই নয়, এটি শিল্প ও অর্থনীতির উন্নয়নের অন্যতম শর্ত।”
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “একইসঙ্গে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণ পুরো শিল্পখাত এবং দেশের অর্থনীতিতে প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন-যাত্রায় শ্রমিক ও মালিকের অংশীদারিত্বে দেশের অগ্রগতি আরো ত্বরান্বিত হবে মর্মে আমার বিশ্বাস। আমি ‘মহান মে দিবস-২০২৫’ এবং ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।”
ঢাকা/এএএম/রাসেল