গাজায় দিনে ত্রাণ দরকার হাজার ট্রাক, যাচ্ছে ১০০টি
Published: 16th, August 2025 GMT
ইসরায়েলের অবরোধের কারণে চরম মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন গাজার বাসিন্দারা। উপত্যকাটিতে প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার ট্রাক ত্রাণসহায়তা প্রয়োজন। তবে দিনে কমবেশি ১০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। এটি প্রয়োজনের মাত্র ১০ শতাংশ।
গাজায় দৈনিক ত্রাণের প্রয়োজনীয়তা ও সরবরাহ নিয়ে এ তথ্য দিয়েছেন ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল। গত বৃহস্পতিবার তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, গাজায় প্রতিদিন প্রবেশ করা এই ১০০ ট্রাক ত্রাণের বেশির ভাগই ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাচ্ছে। ফলে উপত্যকাটির বাসিন্দাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
২২ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে ২ মার্চ গাজায় নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। টানা ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর মে মাসের শেষের দিক থেকে উপত্যকাটিতে খুবই সীমিত পরিসরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে দেশটি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনও (জিএইচএফ) ত্রাণ দিচ্ছে। তবে সংস্থাটির কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেন, শিশু ও নারীসহ সবাইকে অনাহারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় ১ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। খাবার সংকটের কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী আড়াই লাখ শিশুর জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। পাশাপাশি ১৮ বছরের কম বয়সী ১২ লাখ শিশু চরম খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে অনাহারে ২৫১ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েও হত্যার শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া মোট ১ হাজার ৭৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬১ হাজার ৮২৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জন।
এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহকারী শতাধিক সংস্থা অভিযোগ করে বলেছে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তবে বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান (এনজিও) ২ মার্চ থেকে জীবনরক্ষাকারী ত্রাণসামগ্রীর একটি ট্রাকও উপত্যকাটিতে প্রবেশ করাতে পারেনি।
ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) কর্মকর্তা নাতাশা দাভিয়েস বলেন, ‘গাজা সীমান্তে ত্রাণ আটকা পড়ে আছে। তবে সেগুলো প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা মাত্র কয়েকটি ট্রাক প্রবেশ করাতে পেরেছি। এটি সাগরে এক ফোঁটা পানির মতো।’
আরও পড়ুনইসরায়েলি বসতি স্থাপন পরিকল্পনা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণাকে ‘কবর’ দেবে: স্মোত্রিচ১৪ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের দাফু পাম্প ও মোটর নিয়ে এল ন্যাশনাল পলিমার
বাংলাদেশের বাজারে আসছে চীনের পাম্প প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দাফুর পাম্প ও মোটর। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এখানকার বাজারে আসতে চলেছে চীনা কোম্পানিটি। আগামী সেপ্টেম্বরে দেশের বাজারে দাফু গ্রুপের মোট ৩০ ধরনের পানির পাম্প ও মোটর পাওয়া যাবে।
এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি হয় এবং পাম্প ও মোটর বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। ন্যাশনাল পলিমার দেশের বাজারে পাইপ ফিটিংস, পিভিসি ও ডব্লিউ পিভিসি ডোর ও পানির ট্যাংক পাওয়া যায়। নতুন করে তারা এবার দাফুর পরিবেশক হিসেবে পাম্প ও মোটর সরবরাহ করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনপলি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রিয়াদ মাহমুদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাফু গ্রুপের পরিচালক মি. টিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনপলি গ্রুপের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা লোকমান হাকিম, বিজনেস বিভাগের প্রধান শেখর সাহা ও বিপণন প্রধান রকিব আহমেদসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পরিবেশকেরা।
অনুষ্ঠানে দাফুর তৈরি সারফেস পাম্প, সাবমার্সিবল পাম্প, সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, সোলার ওয়াটার পাম্পসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য প্রদর্শনী করা হয়।
ন্যাশনাল পলিমার গ্রুপের এমডি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘গুণগত মান ও দীর্ঘমেয়াদি আস্থার ফলে দাফুর তৈরি মোটর ও পাম্প বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য দেশের পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনা। এতে শিল্প ও কৃষি উভয় ক্ষেত্রেই উৎপাদনশীলতা বাড়বে।’
দাফু গ্রুপের পরিচালক মি. টিম বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাম্প তৈরি করব। এ জন্য ভবিষ্যতে বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের চীনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশে পাম্পের বাজার এখন বেশ বড়। পাম্পের চাহিদাও অনেক। তাই আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে আমাদেরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ–ব্যবস্থাও উন্নত হয়েছে। ফলে এ দেশের মানুষ আরও বেশি কার্যক্ষম, সাশ্রয়ী ও স্মার্ট পণ্য চাইছেন। আমরা তা সরবরাহের চেষ্টা করব।’
ন্যাশনাল পলিমারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, ‘পাইপ, ট্যাংক ও দরজার পাশাপাশি আমরা এখন পাম্পের মাধ্যমে পানির নিরবচ্ছিন্ন উৎস নিশ্চিত করব। নতুন এই পণ্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দিতে আমাদের প্রায় ৪ হাজার পরিবেশক, ২৫ হাজার খুচরা বিক্রেতা ও ৮৫০ জন দক্ষ বিক্রয়কর্মী প্রস্তুত রয়েছেন।’