২০০৪ সালে ‘রান’ ছবির এক বিশেষ নাচের দৃশ্য দিয়ে বলিউডে বাঙালি কন্যা মৌনি রায়ের প্রথম উপস্থিতি। তবে অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ হয় টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কিউকি সাস ভি কভি বহু থি’-তে। এরপর একের পর এক টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যান তিনি। সব ছাপিয়ে ভৌতিক থ্রিলার ধারাবাহিক ‘নাগিন’ তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। সম্প্রতি জিও হটস্টারের ‘সলাকার’ সিরিজে দাপুটে চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। এভাবে বিনোদন জগতে কেটে গেছে প্রায় দুই দশক। তবু আজও একটি ভালো চরিত্র পাওয়ার জন্য তাঁকে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় দুই দশক কাটানোর পরও নিজেকে একজন বহিরাগত বলেই মনে করেন তিনি। সম্প্রতি এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মৌনি।

অয়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান’ ছবিতে ‘জুনুন’ নামের খলনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন মৌনি। সলাকার ওয়েব সিরিজে ‘সৃষ্টি চতুর্বেদী’ নামের এক গোয়েন্দার চরিত্রে তাঁর পরিমিত ও সাবলীল অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে। আবারও এক চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে মৌনি প্রমাণ করেছেন যে তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি।

মৌনি রায়। ইনস্টাগ্রাম থেকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চর ত র

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ