বিএনপিকে নিয়ে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের বক্তব্য বিএনপিসহ ‘সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে আঘাত’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে গুম ও শহীদ’ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী। ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। এ আয়োজনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ফরহাদ মজহার সাহেব গতকাল বিএনপি সম্পর্কে যে কথা বলেছেন, এটা বিএনপি নয় শুধু, সারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে। তাঁর বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, এ দেশে তাঁর ‘নমিনেটেড’ (মনোনীত) লোক শুধু আন্দোলন করেছে, আর কেউ আন্দোলন করেনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি, যারা এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, করেছিল, ফরহাদ মজহারের বক্তব্যে তারা সুযোগ পাচ্ছে। এ সুযোগ আমরা দেব না, ইনশা আল্লাহ। আমার বিশ্বাস, যারা শহীদ পরিবারের তারা কোনো দিনও এ সুযোগ দেবে না। কারণ, তারা প্রায়োরিটি বেসিসে (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) বিচার চেয়েছে।’

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমি আজকে অভয় দিতে চাই, এ সরকার শিগগিরই একটি নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে এবং এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর সে সরকারের নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।’ তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে অনুরোধ করব, বিগত ১৫-১৬ বছরে যাঁরা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি করবেন না।’

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি, তখন থেকে পতন শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, আজ হোক, কাল হোক তারা হারিয়ে যাবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরে মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অন্তর্গত মাদারীপুর এলাকায় অবাধে মাদকের ব্যবসা দিনদিন বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে মাদারীপুর এলাকাবাসী মাদকের কবল থেকে মুক্তি ও নিরাপত্তা চেয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদারীপুর জামে মসজিদের পশ্চিম পাশের রাস্তাসহ আশপাশের এলাকায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা করছে। ফলে পুরো এলাকায় বিরাজ করছে চরম উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তাহীনতা।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় সাবেক এমপির ছেলে আটক, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার

কালীগঞ্জে মাদকবিরোধী সমাবেশ 

স্থানীয়দের দাবি, প্রতিদিন অসংখ্য মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী এ এলাকায় এসে জড়ো হন। পাশাপাশি, মাদারীপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে মাদক ব্যবসা পরিচালনা ও টাকার ভাগ-বাটোয়ারা হয়। এই বাড়িটি আগে স্থানীয় মফিজ সাহেবের মালিকানায় ছিল। বর্তমানে সেটা স্থানীয় টুনু সাহেবের ছেলে গাফফার দখল করে রেখেছেন।

তারা জানান, বরিশুর ২৩ ও ২৪ নম্বর এবং ব্রাহ্মণকিত্তা ১ ও ২ নম্বর পিলার ঘিরে প্রতিদিনই চলে মাদকের লেনদেন। এ কারবারে জড়িত রয়েছেন বেশ কয়েকজন স্থানীয়ভাবে পরিচিত ব্যক্তি। তাদের মধ্যে ব্রাহ্মণকিত্তা ১ নম্বর পিলারের পাশে বসবাসকারী শামসুদ্দিনের ছেলে আলম, খোয়েজনগরের সালাউদ্দিনের ছেলে রবিন, ড্রাইভারের ছেলে মাহবুব, পটকাজোরের হাকিমের ছেলে অপু এবং মাদারীপুরের জুম্মনের ভাই হিসেবে পরিচিত সোলায়মান অন্যতম।

তবে অভিযুক্তদের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা সেলিম রেজা বলেন, “এ এলাকায় মাদক সমস্যা এখন মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।”

স্থানীয় মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “এখানে শুধু মাদক ব্যবসাই নয়, এর ফলে এলাকায় চুরি, দস্যুতা, ছিনতাই বেড়ে গেছে। আমরা কেউই নিরাপদ নই। দিনের পর দিন এই অবস্থা চললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না।”

অপর এক স্থানীয় আবু বকর বলেন, “আমরা একাধিকবার স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু মাদক চক্র এতটাই শক্তিশালী যে, কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এখন একমাত্র ভরসা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, “এই এলাকাটি একসময় শান্তিপূর্ণ ছিল। এখন সন্ধ্যার পর রাস্তায় বের হওয়াটাও আতঙ্কের বিষয়। প্রতিদিন নতুন মুখ, মাদকসেবী ও অপরাধীদের আনাগোনা। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।”

এদিকে, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল হক ডাবলু বলেন, “মাদকবিরোধী কার্যক্রমে আমরা সবসময়ই তৎপর। যে এলাকাটি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, আমরা সেটি সম্পর্কে অবগত এবং নিয়মিত সেখানে আমাদের টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জারি রয়েছে। আজও ওই এলাকা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদক নির্মূলে আমরা সবসময় সতর্ক ও দায়বদ্ধ।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ