শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ বেসামরিক পদকে ভূষিত হলেন মোদি
Published: 5th, April 2025 GMT
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মর্যাদাপূর্ণ ‘মিত্র বিভূষণ’ পদকে ভূষিত করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। পদকটি দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মোদিকে এই পদকে দেওয়া হয় বলে পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে।
২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে এই পদক প্রবর্তন করেন।
মোদির আগে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইউম এবং ফিলিস্তিনের প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতকেও মরণোত্তর এই পদকে ভূষিত করেছিল শ্রীলঙ্কা।
কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই পদক তুলে দেন।
পদক পাওয়ার পর মোদি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কা মিত্র বিভূষণ পদক গ্রহণ করা আমার জন্য সম্মানের। পাশাপাশি এটি ১৪০ কোটি ভারতীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও সম্মানের।’ নরেন্দ্র মোদি এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ২২টি পুরস্কার পেয়েছেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, ‘মিত্র বিভূষণ’ পদকের গায়ে একটি কলস আঁকা আছে। এ ছাড়া এতে ধানের পাতা দেখা যায়, যা সমৃদ্ধির লক্ষণ। এ ছাড়া এর ওপর খচিত রয়েছে ৯টি রত্ন। পদকটিতে চাঁদ ও সূর্যের ছবি রয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাস নির্দেশ করে। অর্থাৎ দুই দেশের সম্পর্ক অতীত থেকে বর্তমান এবং বর্তমান থেকে ভবিষ্যতে দীর্ঘদিন সৌহার্দ্যপূর্ণ থাকবে।
থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন শেষে গতকাল শুক্রবার রাতেই শ্রীলঙ্কায় পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।