অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, কেন বললেন নেহা
Published: 11th, April 2025 GMT
২০২০ সালের ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’- প্রতিযোগী নিদ্রা দে নেহা মডেলিং দিয়েই ক্যারিয়ার শুরু করেন। বিজ্ঞাপন, নাটক, ওটিটির গণ্ডি পেরিয়ে নাম লিখিয়েছেন সিনেমায়। গেল বছর মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ‘শরতের জবা’ সিনেমা। শাকিব খানের পরবর্তী সিনেমা ‘তাণ্ডব’-এ অভিনয়ের কথা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ শোনা যায়, এই ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাকে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সব সময় শিল্প, সংস্কৃতি, অভিনয়-এসবের সঙ্গেই জড়িত থাকতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমার অভিনয়ের প্রতি যে ভালোবাসা ছিল তা প্রতিনিয়ত অন্যায় আর অবমূল্যায়নের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমি আর এই নোংরা পরিবেশের অংশ হতে চাই না।’
নেহা লিখেছেন, ‘গত ৫ বছর ধরে নিজেকে একজন ভালো অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তুলতে পরিশ্রম করেছি। কিন্তু যেসব অন্যায় আমার সঙ্গে হয়েছে, তার কারণে এখন কোনো কাজেই নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে পারছি না। এই মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আমার আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেধা আর পরিশ্রমের সঠিক মূল্য দেওয়া হয় না।’
তিনি যোগ করেন, ‘যারা পেশাদার, যোগ্য, নিষ্ঠাবান এবং কাজের প্রতি আন্তরিক, তাদের ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। শুধু তাদের জনপ্রিয়তা বা ফলোয়ার কম বলে, বা তারা কোনো সিন্ডিকেটের অংশ নয় বলে। কখনো তারা নতুন বলে, কখনো প্রযোজকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না থাকার কারণে, তারা চাপা পড়ে যায়। আমি সবসময় মন থেকে কাজ করতে চেয়েছি, সততা আর ভালোবাসা দিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এসব জিনিস এখানে খুব একটা মূল্য পায় না।’
শেষে তিনি বলেন, ‘আমার হাতে কিছু কাজ আছে। তবে আমি কোনও ধরণের কাজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার মতো সুস্থ মানসিক অবস্থায় নেই।’
নেহার পোস্ট দেখে ভক্তরা বলছেন, সিন্ডিকেট করেই নেহাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে নিজের কষ্টেক কথা প্রকাশ্যে বলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
তার পোস্ট কমেন্টে করেছেন অভিনয় জগতের অনেকেই। অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ লিখেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। তোমার ক্যারিয়ারের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েই এই সত্যটি বুঝতে পেরেছো! এর জন্য লড়াই করো! শুভকামনা!’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।