মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে বড় অঙ্কের রপ্তানি আদেশ পেয়েছে রিমার্ক এলএলসি ইউএসএর মেডিকেটেড স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড সিওডিল। এর মধ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত সিওডিল পণ্যে প্রায় ২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। ১৪ থেকে ১৬ এপ্রিল দুবাইয়ের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ‘দুবাই ওয়ার্ল্ড ডার্মাটোলজি অ্যান্ড লেজার কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন’ বা ‘দুবাই ডার্মা’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

রিমার্ক বাংলাদেশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, দুবাই ডার্মা নামের এই প্রদর্শনীতে ১১৪টি দেশের ২৫ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এবং ১ হাজার ৮৭৫টি ব্র্যান্ড অংশ নেয়। রিমার্ক বাংলাদেশ এবারই প্রথম দেশে উৎপাদিত কোনো বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে এ ধরনের প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। প্রতিদিনই সিওডিলের স্টলে দর্শনার্থী, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও আমদানিকারকেরা ভিড় করেন। সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বেশ কয়েকটি কোম্পানি রিমার্কের পণ্যের জন্য অন স্পট আমদানি আদেশ দেয়। তারা সেখানে রিমার্কের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রদর্শনীতে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, নেপাল, ভারত ও লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা রিমার্কের তৈরি পণ্য আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখান।

সিওডিলের হেড অব বিজনেস সুকান্ত দাস বলেন, ‘আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পেয়েছি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চীন কি আরব আমিরাতে সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে, কী বলছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একটি সামরিক ঘাঁটিতে চীনের সামরিক সদস্যরা ছিলেন। কারণ, ওই ঘাঁটির একটি অংশে যুক্তরাষ্ট্রকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দুজন সাবেক উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, আবুধাবির জায়েদ মিলিটারি সিটিতে চীনের গণমুক্তি ফৌজের (পিএলএ) সদস্যদের ইউএই আতিথ্য দিচ্ছিল।

ওই কর্মকর্তারা জানান, ২০২০ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এমন ধারণা করেছিলেন।

ঘটনাটি সম্পর্কে জানেন এমন একজন কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন কর্মকর্তারা যখন জায়েদ মিলিটারি সিটির একটি অংশে প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিলেন, তখন তা নাকচ করা হয়েছিল। তারপরই যুক্তরাষ্ট্র ঘাঁটিটি সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে চীনা সামরিক সদস্যদের উপস্থিতির বিষয়টি জানতে পারল বা ওই ঘাঁটিতে তাদের কী ভূমিকা ছিল, সে সম্পর্কে সাবেক এ দুই কর্মকর্তার কেউ কিছু জানাননি।

দুই সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পিএলএ হয়তো জায়েদ মিলিটারি সিটি ব্যবহার করে আরব আমিরাতে থাকা মার্কিন বাহিনীর সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে।

আরব আমিরাতের আল–ধাফরা এয়ার বেজে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮০তম এয়ার এক্সপেডিশনারি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে এবং এটি আবুধাবি থেকে মাত্র ২০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত।

মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেছেন, আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে পূর্ব এশীয় কিছু দেশ পিএলএকে তাদের দেশে থাকার সুযোগ দিয়েছে বলে মার্কিন গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিলেন। আরব আমিরাতের জায়েদ মিলিটারি সিটিতে পিএলএর উপস্থিতির সঙ্গে এর মিল খুঁজে পায় যুক্তরাষ্ট্র।

আবুধাবির জায়েদ মিলিটারি সিটিতে চীনা সামরিক বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে এর আগে কোনো খবর প্রকাশিত হয়নি।

২০২১ সালে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চীন আবুধাবির কাছে একটি সামরিক বন্দর তৈরি করছে। ওই খবর প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পর অন্য একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে আরব আমিরাত সেই প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে।

চীন-আমিরাত সামরিক সম্পর্ক

বর্তমানেও পিএলএর সদস্যরা ওই ঘাঁটিতে আছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। চীন সামরিকভাবে আরব আমিরাতের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করায় যুক্তরাষ্ট্র বারবার তাদের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরব আমিরাতের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েনও রয়েছে।

২০২১ সালে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চীন আবুধাবির কাছে একটি সামরিক বন্দর তৈরি করছে। ওই খবর প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পর অন্য একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে আরব আমিরাত সেই প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে।

তবে ডিসকর্ড মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে বলা হয়েছে, এক বছর পর চীন সেই ঘাঁটিতে আবারও কাজ শুরু করেছে। এ খবর দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল।

আরব আমিরাত ও চীন তাদের সামরিক সম্পর্ক গোপন করছে না। ২০২৪ সালে তারা চীনের শিনজিয়াং অঞ্চলে বিমানবাহিনীর যৌথ মহড়া করেছিল।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মিডল ইস্ট আই ওয়াশিংটনে অবস্থিত আরব আমিরাত এবং চীনের দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিল। তবে কোনো পক্ষই সাড়া দেয়নি। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগও কোনো জবাব দেয়নি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান এবং বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল-খলিফা ‘রাবদান-শুয়াইমান’ শীর্ষক যৌথ সামরিক মহড়া পরিদর্শনে। ২২ নভেম্বর ২০২৫, বাহরাইনের মানামায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চীন কি আরব আমিরাতে সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে, কী বলছে যুক্তরাষ্ট্র