বাংলাদেশে তৈরি পণ্যে মিলল ২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ
Published: 20th, April 2025 GMT
মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে বড় অঙ্কের রপ্তানি আদেশ পেয়েছে রিমার্ক এলএলসি ইউএসএর মেডিকেটেড স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড সিওডিল। এর মধ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত সিওডিল পণ্যে প্রায় ২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। ১৪ থেকে ১৬ এপ্রিল দুবাইয়ের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ‘দুবাই ওয়ার্ল্ড ডার্মাটোলজি অ্যান্ড লেজার কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন’ বা ‘দুবাই ডার্মা’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
রিমার্ক বাংলাদেশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, দুবাই ডার্মা নামের এই প্রদর্শনীতে ১১৪টি দেশের ২৫ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এবং ১ হাজার ৮৭৫টি ব্র্যান্ড অংশ নেয়। রিমার্ক বাংলাদেশ এবারই প্রথম দেশে উৎপাদিত কোনো বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে এ ধরনের প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। প্রতিদিনই সিওডিলের স্টলে দর্শনার্থী, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও আমদানিকারকেরা ভিড় করেন। সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বেশ কয়েকটি কোম্পানি রিমার্কের পণ্যের জন্য অন স্পট আমদানি আদেশ দেয়। তারা সেখানে রিমার্কের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রদর্শনীতে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, নেপাল, ভারত ও লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা রিমার্কের তৈরি পণ্য আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখান।
সিওডিলের হেড অব বিজনেস সুকান্ত দাস বলেন, ‘আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পেয়েছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের লোকসভায় হট্টগোল, স্থগিত শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন
প্রত্যাশিতভাবে ভারতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হলো হইচইয়ের মধ্য দিয়ে। পণ্ডও হয়ে গেল লোকসভার প্রথম দিনের অধিবেশন। এমনই যে হতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত গতকাল রোববারই মিলেছিল সর্বদলীয় বৈঠকে।
রোববারের সেই বৈঠকেই বিরোধী নেতারা জানিয়েছিলেন, বিহারে ভোটচুরি, দেশজুড়ে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) নামে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ‘যথেচ্ছাচার’, দিল্লির বায়ুদূষণ, দিল্লির সাম্প্রতিক বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তাঁরা আলোচনার দাবি জানাবেন।
ওই বৈঠকের পরই সরকারপক্ষ বুঝিয়ে দিয়েছিল, সংবিধান স্বীকৃত সংস্থার (ইসি) অধিকার–সংবলিত বিষয় নিয়ে আলোচনায় তারা রাজি নয়। সরকার চায়, সংসদের নিয়ম মেনে বিরোধীরা গঠনমূলক আলোচনা করুক। ফলে যা হওয়ার, সেটাই হয়েছে। লোকসভার অধিবেশন শুরু হলেও স্বাভাবিক কাজ হয়নি। দফায় দফায় সভা বসলেও বিরোধীপক্ষের স্লোগান ও সরকারপক্ষের অনমনীয় মনোভাবের দরুণ অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়।
রাজ্যসভার চিত্র অবশ্য ছিল ভিন্ন। উপরাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। তিনিই সভার পরিচালক। জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার পর ওই পদে নির্বাচিত হয়েছেন সিপি রাধাকৃষ্ণন। আজ সোমবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে সব দলের নেতারা রাধাকৃষ্ণনকে নতুন দায়িত্বের জন্য অভিনন্দন জানান। যদিও সেখানে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে উতোর–চাপানের অন্ত ছিল না। বিরোধীদের লক্ষ্য ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।
প্রথা মেনে সংসদীয় অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী মোদি বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষ করেন। বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, সংসদ নাটক (ড্রামা) করার জায়গা নয়। সংসদে ডেলিভারি করতে হয়। যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হয়। পরিষেবা দিতে হয়। বিরোধীরা নাটকবাজি না করে সেই চেষ্টাই বরং করুন।
সংসদে আলোচনার ওপর জোর দিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাটক করার অনেক জায়গা আছে। স্লোগান দেওয়ারও জায়গা আছে অনেক। স্লোগানের জন্য পুরো দেশ পড়ে আছে। সেখানে যত খুশি স্লোগান দেওয়া যায়, কিন্তু সংসদে নয়।
বিহার নির্বাচনে বিরোধীদের পরাজয়ের প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, বিহারের ভোট গণতন্ত্রের উজ্জ্বল উদাহরণ। কিছু বিরোধী দল এখনো তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারেনি। তাদের ধারাবাহিক হার সংসদে আলোচনার বিষয় হতে পারে না। ১০ বছর ধরে যারা হেরে চলেছে, তাদের দলের পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রয়োজনে তিনি কিছু টিপস দিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, বিরোধীদের কৌশল বদলানো উচিত। কী করা উচিত, বিরোধীরা চাইলে সে বিষয়ে কিছু টোটকা তিনি বাতলাতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীরে ওই কটাক্ষ ফিরিয়ে দিতে বিরোধীরা দেরি করেনি। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র সংসদ ভবন চত্বরে এই প্রসঙ্গে বলেন, এসআইআর বা দূষণ নিয়ে আলোচনার দাবি তোলা নাটকবাজি নয়। জনস্বার্থ নিয়ে আলোচনার দাবি জননেতাদেরই তুলতে হবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যখন জনস্বার্থ নিয়ে কথা বলতে দেওয়া হয় না, সেটাই তখন নাটকবাজি হয়ে ওঠে।
রাজ্যসভায় নতুন চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানিয়ে বিরোধী নেতা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখানে উপস্থিত আছেন। তিনি সভার বাইরে বিরোধীদের উদ্দেশে অনেক কিছুই বলেছেন। তার জবাব তাঁরা ঠিক সময়েই দেবেন।
সংসদের এই অধিবেশন চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কর্মদিবস মোট ১৫ দিন। বিজেপি আমলে ক্রমেই সংসদের কাজের দিন কমিয়ে আনা হচ্ছে। সে জন্যও বিরোধী নেতারা সরকারের সমালোচনা করেন।