পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠির ফলাইবুনিয়া গ্রামে বিএনপি নেতা আব্দুল হাই রাঢ়ীর বাড়ি এক মাস আগে পুড়িয়ে দেয় দলটির কর্মীরা। অভিযোগ, তাঁর দুই ছেলে ঢাকায় যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত।

এ ঘটনার এক মাসেও আব্দুল হাইয়ের স্ত্রীর অভিযোগ কাউখালী থানা এজাহার হিসেবে নেয়নি। উল্টো হামলাকারীদের মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। হামলাকারীদের দফায় দফায় মানববন্ধন ও সমাবেশের কারণে ফলাইবুনিয়া গ্রামের রাঢ়ী বাড়িসহ শতাধিক পরিবার আতঙ্কে দিন পার করছে।

গত ২৮ মার্চ রাতে রাঢ়ী বাড়িতে হামলা হয়। সম্প্রতি এ গ্রামে গেলে নজর রাখছে বলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দা জানান, প্রথমে আব্দুল হাইয়ের ছেলে রহমতউল্লাহকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক তারিকুল ইসলাম সুমন, তাঁর ভাই আওয়ামী লীগ কর্মী মো.

নাসিরউদ্দিন। তাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী শিয়াকাঠি গ্রামে।

জানা যায়, আব্দুল হাইয়ের ছেলে ব্যবসায়ী রহমতউল্লাহ যুবলীগের কর্মী ও ছোট ছেলে রাসেল রাঢ়ী কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে বিরোধ বাধে দু’পক্ষের। রাজধানীতে আশ্রয় নেওয়া রাসেলকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মারধরও করে। আর ঈদুল ফিতরে গ্রামে এলে রহমতকে অপহরণের চেষ্টা করেন সুমন।

গ্রামবাসী জানান, বাজারে চা খাচ্ছিলেন রহমত। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে আসা ৮-১০ যুবক তাঁকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। রহমতের চিৎকারে বাজারের লোকজন ও মসজিদে তারাবি নামাজ শেষ করে বের হওয়া মুসল্লিরা অপহরণকারীদের ধাওয়া দেন। এ সময় তারা অটোচালকসহ পাঁচ-ছয়জনকে মারধর করে। ঘণ্টাখানেক পর অস্ত্রধারী শতাধিক ব্যক্তি রহমতের বাবা আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয়।

পরে ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে প্রচার চালানো হয়– ফলাইবুনয়িা বাজারে ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার লাগানোর সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা চালায়। এতে বিক্ষুব্ধরা আগুন দিয়েছে। পরে এ গল্প প্রতিষ্ঠা করতে শিয়ালকাঠিতে দু’বার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে সুমন ও তাঁর অনুসারীরা।

রাঢ়ী বাড়ির বাসিন্দা গৃহবধূ শিউলি বেগম ও কলেজছাত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আমরা প্রাণ বাঁচাতে বাগানে লুকিয়েছিলাম। তিন দিন পরে বাড়ি ফিরতে পারি। ঘটনার এক মাস পরও আতঙ্কে রয়েছি। হামলাকারীরা প্রায় বাড়ির সামনে মিছিল-সমাবেশ করছে।’

বিএনপি নেতা আব্দুল হাইয়ের দাবি, বাড়িতে রাখা ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা, জাকাতের কাপড়, আসবাবসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার সরঞ্জাম খোয়া গেছে। ঘরে নুনের বাটি পর্যন্ত পুড়ে গেছে। মামলা করতে গেলে পুলিশ নেয়নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হামলাকারীরা।

কাউখালী উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, সুমনের বড় ভাই জসিমউদ্দিন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর অনুরোধে আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে যেতে তারা বাধ্য হয়েছেন।

জানতে চাইলে তারিকুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘রাঢ়ী বাড়ির সবাই আওয়ামী লীগ করে। ২৮ মার্চ রাতে আমার বড় ভাই জসিমউদ্দিনের ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার লাগাতে গেলে আব্দুল হাইয়ের ছেলে রহমত ও রাসেল কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মানুষ তাদের বাড়িতে হামলা করে।’

শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ‘আব্দুল হাই ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি ছিলেন। তাঁর মেজ ছেলে রফিক ও বড় ছেলে শহিদ বিএনপি করে। তবে অন্য দুই ছেলে– রহমত ও রাসেল যুবলীগ-ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত। সুমনরা দাবি করেছেন, পোস্টার লাগানোর সময় তাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নাকি বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।’

কাউখালী থানার ওসি মু. সোলায়মান জানান, ২৮ মার্চের ঘটনায় একটি মামলায় তারা একজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। তবে যাদের বাড়ি পুড়ে গেছে, তারা কোনো অভিযোগ দেননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আতঙ ক আগ ন দ য বল গ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সড়ক সংস্কারের দাবিতে ফতুল্লায় মানববন্ধন

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটি মোড় সংস্কার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ফতুল্লাবাসী। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ মানববন্ধন করা হয়। সচেতন নাগরিক সমাজ ফতুল্লার ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। মানববন্ধনে শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন। 

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। খানাখন্দের কারনে প্রতিদিন ঘটছে দূর্ঘটনা। মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে বসে থাকে। জ্যামের কারনে শিক্ষার্থীরা সময় মতো ক্লাসে অংশ নিতে পারে না। আমরা দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানাই। 

বক্তারা আরো জানান, এ ইউনিয়নে রয়েছে বিসিক শিল্পনগরী। যেখানে লাখ মানুষ চাকরি করে। শ্রমজীবী মানুষগুলো ভাঙ্গা সড়কের কারনে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারে না। যার কারনে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে শ্রমিক ও গার্মেন্ট মালিকদের। 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন, ফতুল্লা থানার পফিসার ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম, হাফিজুল হক, সালাউদ্দিন মামুন, মেজবাউল হক মারুফ, সুমন আহম্মেদ, মোশারফ হোসেন, ব্রাদার্স ক্লাবের এডমিন সাইফুল ইসলাম সজিব, বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম বিপ্লব, মোস্তাফিজুর রহমান পাপ্পু, মুরাদ হাসান, নুসরাত হাজান কলি, রাফিনা তাহের প্রমুখ। 

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন আয়োজকরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাথর লুট বন্ধ করে সাদাপাথর রক্ষার দাবিতে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন
  • খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ যত অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে গ্রেপ্তার আলমগীরের বিরুদ্ধে
  • পিতামাতার জন্য ৩টি সুন্দর দোয়া
  • ইসলামী ছাত্রী সংস্থার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অভিযোগ জবি ছাত্রদলের
  • গাজীপুরে সাংবাদিক হ`ত্যার বিচারের দাবিতে বেরোবিতে মানববন্ধন
  • অগ্রণী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালুর দাবি
  • কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে নির্যাতনের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
  • সড়ক সংস্কারের দাবিতে ফতুল্লায় মানববন্ধন
  • বন্দরে স্কুল ছাত্রী হুমায়রা অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার ১
  • সুরা আর-রহমান: সারকথা ও ফজিলত