ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সিপিবির বৈঠক চলছে
Published: 13th, May 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) বৈঠক শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।
সকাল ১০টার দিকে এলডি হলে প্রবেশ করেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও অন্য সদস্যরা। সদস্যরা হলেন বদিউল আলম মজুমদার ও ইফতেখারুজ্জামান।
সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে প্রবেশ করেন সিপিবির নেতারা। দলটির ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে আছেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক এ এন রাশেদা, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন, রাগিব আহসান মুন্না, সাজেদুল হক রুবেল, আবিদ হোসেন ও অধ্যাপক ডা.
সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে বৈঠক শুরু হয়। সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে একটি জাতীয় সনদ, যাতে করে আমরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের পথরেখা কী রকম হবে, তার একটি ধারণা পেতে পারি, তার একটা অগ্রযাত্রার পথ চিহ্নিত করতে পারি।’
আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘এখন এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলোকে আরও সুনির্দিষ্ট করা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের পথ খুঁজে বের করাই হচ্ছে আমাদের কাজ।’
স্বাগত বক্তব্যে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা বারবার বলে এসেছি যে অন্তর্বর্তী সরকার রুটিন কাজের বাইরে যদি অনেক বড় কাজে হাত দিয়ে দেয়, তাহলে তার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। এই কঠিন কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় এমন কতগুলো বিতর্কের সম্মুখীন হতে পারে তার যে ন্যূনতম, অন্যতম যে কাজ একটি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া, সেটি সংকটে পড়তে পারে।’
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আন্দোলনে অনেকগুলো অনৈক্যের ধারা তৈরি হয়েছে। তিনি মনে করেন, এর ফলে ঐকমত্য কঠিন হবে।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা দেখলাম শুরুতেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কাউন্টার অ্যাপ্রোচ করে এমন কতগুলো কথা তৈরি করা হলো যেন তাকে রিপ্লেস করে ’৪৭-এর ধারাবাহিকতায় ’২৪।’ এ ধরনের বিতর্কগুলো বন্ধ করে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি আচরণবিধি করার প্রস্তাব করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘যদি ঐকমত্যের বড় সনদ না–ও করতে পারি, কিন্তু যদি ঐকমত্য হয়ে কোনো একটা আচরণবিধিও করতে পারি এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে আমরা যদি নির্বাচন করতে পারি...। প্রয়োজনীয় সংস্কার বলতে বোঝাচ্ছি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন সেসব। তাহলেও আমরা মনে করি একধাপ অগ্রগতি হব।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার বৈঠক সঞ্চালনা করছেন। শুরুতেই ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে সর্বশেষ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের আরোগ্য কামনা করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘কোনো বিষয়েই একমত হব না, এটাই যেন আলোচনার মূলনীতি’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ক্ষেত্রে মতৈক্য না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমরা কোনো বিষয়েই একমত হব না, এটাই যেন আমাদের আলোচনার মূলনীতি।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। আজ কমিশনে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়।
মজিবুর রহমান বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ক্ষেত্রে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা-সম্প্রীতি ও পক্ষপাতহীনতা—এই অভিপ্রায়গুলো যুক্ত করলে সব পক্ষের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে শুধু ভাষার হেরফেরের কারণে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান আকাঙ্ক্ষা হলো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। হাসিনার মতো একচ্ছত্র ক্ষমতাচর্চার সংস্কৃতি বজায় থাকলে সংস্কার বলতে কিছুই হবে না।’
মজিবুর রহমান বলেন, ‘সংস্কারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষ রাখার ব্যবস্থা করা এবং সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতিকে কঠিনতর করা। অতীতে শেখ হাসিনা নিজের ইচ্ছেমতো দলবাজ লোক নিয়োগ দিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছেন। এখনো যদি সেই ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষে কোনো দল মত দেয়, তাহলে বোঝা যাবে, তারা আসলে ফ্যাসিবাদী নীতি পরিবর্তনে অনিচ্ছুক।’
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত কমিটি গঠিত হলে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস পাবে, এমন ধারণা সঠিক নয়। বরং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গঠনপ্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে পারলে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।