বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মারজুকের পদ স্থগিত
Published: 21st, May 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনার নয় মাস পর প্রশ্নবিদ্ধ মামলার অভিযোগে বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব মারজুক আব্দুল্লাহর পদ স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে রোববার তাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
বুধবার সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সোহাগ ও সদস্যসচিব এস এম ওহাহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকায় মারজুকের পদ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
১৪ মে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মারজুক আব্দুল্লাহ ২৪৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত প্রায় তিনশ’ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি তালিকায় নাম রাখা ও বাদ দেওয়া নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
মামলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং জেলে ও কৃষকসহ অনেক নিরীহকে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মামলাটি নিয়ে নগরীতে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
মারজুক আব্দুল্লাহ অবশ্য দাবি করেছেন, মামলার কোনো আসামির কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার ঘটনা সত্য নয়। তিনি মামলা করায় দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা তাকে বাহবা দিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল আসছে
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি যাচাই করতে শিগগির যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্–নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল আসছে। ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি প্রতিনিধিদল সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলেছে।
ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনেও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক আসবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কৃচ্ছ্রসাধন রীতি অনুসারে তহবিল কাটছাঁটের কারণে আগামী বছরের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের কলেবরটি ছোট হতে পারে।
বিকেলে আইআরআইয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ক্রিস্টোফার ফাসনারের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেখা করে। প্রতিনিধিদলে যুক্ত ছিলেন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সোসাইটির (সিএনএএস) ইন্দো–প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ ফেলো লিসা কার্টিস। প্রসঙ্গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের আমলে তাঁর বিশেষ উপসহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে (এনএসসি) মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার জ্যেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে লিসা কার্টিস কাজ করেছেন।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণকে সামনে রেখে প্রাক্–নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই। তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। আগামী মাস দেড়েকের মধ্যে প্রাক্–নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের আসার কথা রয়েছে। মূলত আগামী নির্বাচন সামনে রেখে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আইআরআইয়ের প্রতিনিধিদলটির মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে।
মার্কিন প্রশাসন, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবিরের বিশেষ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত লিসা কার্টিসের আইআরআইয়ের সঙ্গে যুক্ততা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, তহবিলের সংকটের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তাই বাংলাদেশের নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে সামনের দিনগুলোতে এমন আরও একাধিক মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসবে বলে বাংলাদেশকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে গত আগস্টে বাংলাদেশ সফর করেছিল আইআরআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল। ওই সময় প্রতিনিধিদলটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে আলোচনা করে। এর পাশাপাশি আইআরআই প্রতিনিধিদল ওই সময় বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় করে।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আট সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে এসেছিল আইআরআই ও এনডিআইয়ের একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। ওই দল সংসদ নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচনের পরে সীমিত পরিসরে নির্বাচনী সহিংস পরিস্থিতির কারিগরি মূল্যায়ন করেছিল। আইআরআই ও এনডিআইয়ের ওই নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলে ছিলেন পাঁচজন নির্বাচনী বিশ্লেষক।