বাংলা: ১১ নম্বর প্রশ্ন

প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে ১১ নম্বর প্রশ্ন থাকবে অনুচ্ছেদ পড়ে প্রশ্ন তৈরি করার ওপর।

১.

বাংলাদেশের প্রায় সব লোক বাংলায় কথা বলে। তবে আমাদের দেশে যেমন রয়েছে প্রকৃতির বৈচিত্র্য, তেমনি রয়েছে মানুষ ও ভাষার বৈচিত্র্য। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোয় রয়েছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন। তাদের কেউ চাকমা, কেউ মারমা, কেউ মুরং, কেউ তঞ্চঙ্গ্যা ইত্যাদি। এ ছাড়া রাজশাহী ও জামালপুরে রয়েছে সাঁওতাল ও রাজবংশীদের বাস। তাদের রয়েছে নিজ নিজ ভাষা। একই দেশ অথচ কত বৈচিত্র্য। এটাই বাংলাদেশের গৌরব। সবাই সবার বন্ধু, আপনজন। এ দেশে রয়েছে নানা ধর্মের লোক।

হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান। সবাই মিলেমিশে আছে যুগ যুগ ধরে। এ রকম খুব কম দেশেই আছে। আবার আমাদের বাংলাদেশের বাইরেও অনেক বাঙালি আছে। বাংলাদেশের এই যে মানুষ, তাদের পেশাও কত বিচিত্র। কেউ জেলে, কেউ কুমার, কেউ কৃষক, কেউ আবার কাজ করে অফিস–আদালতে। আমরা সবাই পরস্পরের বন্ধু।

উত্তর

ক.

বাংলাদেশে কোন কোন ধর্মের লোক বাস করে?

খ. বাংলাদেশের প্রায় সবার মুখের ভাষা কী?

গ. সবাইকে ভালোবাসতে হবে কেন?

ঘ. ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন এ দেশের কোথায় বাস করে?

ঙ. এ দেশের সবাই কীভাবে বাস করে?

 

২.

১৮৯৭ সালে প্রচণ্ড এক ভূমিকম্প হয় আমাদের দেশে। ফলে মাঠঘাট, নদীনালা আর জনবসতি সবই প্রাকৃতিক কারণে বদলে যায়। এখনো তোমরা দেখে থাকো নদীর পাড়ের জমি, ঘরবাড়ি, গ্রাম আর রাস্তাঘাট ভাঙছে। আবার বিশাল নদীর অন্যদিকে বিস্তীর্ণ চর পড়ছে। শত শত বছর আগে থেকেই এভাবে চলে আসতে থাকে ভাঙাগড়া। মাটিচাপা পড়ে যায় একেকটি নগর–জনপদ। মাটি খুঁড়ে এমনি এক সুপ্রাচীন নগর–জনপদের দেখা পাওয়া গেছে বাংলাদেশে। নরসিংদী জেলার সেই স্থানের নাম উয়ারী–বটেশ্বর। উয়ারী–বটেশ্বর ঢাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে নরসিংদীর বেলাবো ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত। এটি একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।

উত্তর

ক. মাটি খুঁড়ে পাওয়া সুপ্রাচীন জনপদের নাম কী?

খ. মাঠঘাট, নদীনালা আর জনবসতি বদলে যায় কেন?

গ. কখন আমাদের দেশে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হয়?

ঘ. উয়ারী–বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত?

ঙ. সুপ্রাচীন নগর–জনপদের দেখা পাওয়া গেছে কীভাবে?

 

৩.

গ্রামের নাম আনন্দপুর। মামার বাড়ি। কথায় আছে, মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি। পড়া নেই, বাধা নেই, যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াও, যা খুশি খাও। এই তো মামার বাড়ি। গেল বছর পয়লা বৈশাখের ছুটিতে গিয়েছিলাম আনন্দপুর। সেখানে পয়লা বৈশাখে মেলা বসে।

মামা বললেন, তোমাদের মেলা দেখাতে নিয়ে যাব। আমরা ছিলাম চারজন, আমি, মামাতো বোন বৃষ্টি, সোহানা আর ছোট ভাই তাজিন। মেলা বসে সকালে। মামা বেশ মজার মানুষ। কাঁধে ঝোলানো একটা ব্যাগ। তাতে থাকে ছবি আঁকার জিনিস। থাকে একটা বাঁশি। পড়েন ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটে। মেলার একটু কাছে পৌঁছাতেই শুনতে পেলাম, নাগরদোলার ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ।

উত্তর

ক. মামার বাড়ি কোথায়?

খ. মামার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে কী থাকে?

গ. ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটে কে পড়েন?

ঘ. মেলার কাছে পৌঁছাতেই ওরা কী শুনতে পেল?

ঙ. আনন্দপুরে কখন মেলা বসে?

৪.

বাংলাদেশের দক্ষিণে রয়েছে প্রকৃতির অপার সম্ভার সুন্দরবন। সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই বিশাল বন। এখানে রয়েছে যেমন প্রচুর গাছপালা, কেওড়া ও সুন্দরীগাছের বন, তেমনি রয়েছে নানা প্রাণী, জীবজন্তু। বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা রাজকীয় বাঘের নাম।

এই বাঘ থাকে সুন্দরবনে। এ বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আবার ভয়ংকর। একসময় সুন্দরবনে ছিল চিতাবাঘ ও ওলবাঘ। কিন্তু এখন আর এসব বাঘ দেখা যায় না।

সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। এ বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে হবে।

উত্তর

ক. কে গোলপাতার বনে ঘুরে বেড়ায়?

খ. সমুদ্রের কোল ঘেঁষে কী গড়ে উঠেছে?

গ. সুন্দরবন বাংলাদেশের কোথায় অবস্থিত?

ঘ. রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে বিলুপ্তির হাত থেকে আমরা কীভাবে বাঁচাতে পারি?

ঙ. সুন্দরবনে এখন আর ওলবাঘ ও চিতাবাঘ দেখা যায় না কেন?

৫.

দুই বোন মা–বাবার আদরের ছায়ায় বড় হয়। স্কুলে যাওয়ার পথে বুনোফুল ছিঁড়ে বেণির সঙ্গে গেঁথে রাখে। ফড়িং ধরে। আবার আকাশে উড়িয়ে দেয়। ফুলের পাপড়ি ছিঁড়ে খাতার ভেতর চাপা দিয়ে রাখে।

জসীম মিয়া ওদের কপালে চুমু দিয়ে বলে, আমার মেয়েগুলোর অনেক বুদ্ধি।

অনেক বড় হ মা। চাইলে লেখাপড়ার জন্য তোদের আমি ঢাকা পাঠাব। দুই বোন খুশিতে হাততালি দেয়। মা–বাবা ওদের উৎফুল্ল মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। একদিন জসীম মিয়া বাজারে যায়। সেখান থেকে দুই সের চাল–ডাল কিনে বাড়ি ফিরে বারান্দায় ধপাস করে বসে পড়ে। ছুটে আসে রাহেলা বানু।

উত্তর

ক. জসীম মিয়া কে?

খ. স্কুলে যাওয়ার পথে দুই বোন বেণির সঙ্গে কী গেঁথে রাখে?

গ. কেন দুই বোন খুশিতে হাততালি দেয়?

ঘ. জসীম মিয়া লেখাপড়ার জন্য মেয়েদের কোথায় পাঠাতে চায়?

ঙ. দুই বোন কীভাবে বড় হয়?

মো. সুজাউদ দৌলা, সহকারী অধ্যাপক,রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দরবন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিলুপ্তির পথে সুন্দরী হাঁস

সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ মহাবিপন্ন বেঙ্গল টাইগার। কিন্তু বর্তমানে এর থেকেও বিলুপ্তপ্রায় হয়ে পড়েছে আরেকটি প্রাণী (পাখি)। কয়েক বছর আগেও বিশ্বব্যাপী মহাবিপন্ন পাখিটির সংখ্যা ছিল ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০। কিন্তু বর্তমানে ১০৮ থেকে ৩০৪টিতে এসে ঠেকেছে, যার ৮০ থেকে ১৬০টিই আমাদের সুন্দরবনের বাসিন্দা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই পাখি যদি সুন্দরবন থেকে হারিয়ে যায়, তাহলে পৃথিবী থেকেই হারিয়ে যাবে। কারণ, বাংলাদেশ ছাড়াও আরও যে দুটি দেশে ওরা নিশ্চিতভাবে বেঁচে আছে, তার মধ্যে কম্বোডিয়ায় ১২ থেকে ৬০টি ও মিয়ানমারে ১২ থেকে ৪০টি পাখি রয়েছে। যদিও ইদানীং সহজে চোখে পড়ছে না।

২৯ বছর ধরে সুন্দরবনে ঘুরলেও গোলবনের রহস্যময় মহাবিপন্ন পাখিটিকে খুঁজছি ২০১৪ সাল থেকে। কিন্তু ২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারির আগে ওকে খুঁজে পাইনি। সেদিন বাঘের বৈঠকখানাখ্যাত কচিখালী থেকে সকাল ১০টায় ‘বাঘের বাড়ি’খ্যাত কটকা রওনা হলাম। অভিজ্ঞ সারেং সগির ও মাঝি গাউসের পরামর্শে বড় কটকা খাল দিয়ে না গিয়ে ছিটা কটকা নামের ছোট খাল দিয়ে এগোতে থাকলাম। এই খালেই কয়েক বছর ধরে ওকে দেখা যাচ্ছে।

তখন ভাটা চলছিল। ক্যামেরা হাতে আমরা সাতজন টান টান দাঁড়িয়ে। খালের দুই পাশে গোলগাছের সারি, দৃষ্টি সবার গোলবনের পলিময় কাদার দিকে। কিন্তু ভারী ক্যামেরা তাক করে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায়? পরিশ্রান্ত সবাই কিছুক্ষণের জন্য ক্যামেরা নামালেন। তবে আমার দৃষ্টি গোলবনের কাদা থেকে সরল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে হাঁসের মতো কিন্তু অদ্ভুত এক পাখির চেহারা ভেসে উঠল। মন্ত্রমুগ্ধের মতো একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম। আর আমার আঙুল অজান্তেই শাটারে ক্লিক করে গেল। হঠাৎ বলে উঠলাম হাঁসপাখি! হাঁসপাখি!! পাখিটি দ্রুত গোলবনের কাদাময় পাড় থেকে পানিতে নেমে গেল। আমি এবং আরেকজন ছাড়া কেউ ওর ছবি তুলতে পারল না।

খানিক পর আরও দুটির দেখা পেলাম। পরদিন ভোরে কটকার কাছে সুন্দরী (হোমরা) খালে আরও চারটিকে দেখলাম। একযাত্রায় সাতটি হাঁসপাখির দেখা পাওয়া মহাভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু এরপর যতবার সুন্দরবনে গেছি, পলিমাটিতে পায়ের ছাপ দেখলেও পাখি দেখিনি। তিন বছর ধরে পায়ের ছাপও দেখছি না।

বাঘের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ সুন্দরবনের এই হাঁসপাখি কে? এ দেশের এক অতিবিরল ও মহাবিপন্ন পাখি সুন্দরী, গেইলো বা বাইলা হাঁস। জেলে-বাওয়ালি-মৌয়ালদের কাছে এ নামেই পরিচিত। তবে নামে হাঁসপাখি হলেও আদতে হাঁসের ধারেকাছের পাখিও নয় এটি; বরং জলমুরগি, অর্থাৎ ডাহুক-কোড়াদের নিকটাত্মীয়। ইংরেজি নাম মাস্কড/এশিয়ান ফিনফুট। গোত্র Helornithidae, বৈজ্ঞানিক নাম Heliopais personata। অতিলাজুক পাখিটিকে একসময় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ায় দেখা গেলেও বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারে দেখা যায়।

সুন্দরবনের খালপাড়ে জেলেদের পাতা চরপাটা জাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিরসরাই উপকূলে সুন্দরবনের গোলপাতা কীভাবে এল
  • আজ ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস
  • বিলুপ্তির পথে সুন্দরী হাঁস