রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুইপক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছাত্রদল কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে জিয়া পরিবারের ছবি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে।  

হামলার ঘটনায় আটজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাজ্জাদ, সিয়াম, জুবায়ের, আব্দুল্লাহ, সায়েম, জুবায়ের শাহরিয়ার নাসিম ও গোলাম মাওলা নয়নের নাম জানা গেছে।

তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের হোড়গাঁও চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার প্রভাব বিস্তার এবং এলাকার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ মাওলা বিন মিজানসহ তার লোকজনের সঙ্গে অপর ছাত্রদল নেতা রাকিব হাসানসহ তার লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল।

সাজ্জাদ মাওলা বিন মিজান বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে রাজনীতি করেন। অপরদিকে রাকিব হাসান অপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর রাজনীতি করেন। 

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল কার্যালয় ও কার্যালয়ে থাকা জিয়া পরিবারের ছবি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে অন্তত আট জন আহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় পুলিশের সামনেই বিচার চেয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হামলার শিকার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ ঘটনায় পুরো এলাকায়  আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ মাওলা বিন মিজান অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার রাতে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। সেখানে ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

রাতেই প্রতিপক্ষ রাকিব হাসান ও তার লোকজন ওই কার্যালয়ে এসে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের ছবি নামিয়ে রাখা এবং কার্যালয় খালি করে দেওয়ার জন্য বলে আসে।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে রাকিব হাসান, শাহাবুদ্দিন, নজরুল, মোশারফ, বাবু, আরিফ বকুলসহ ৩৫ থেকে ৪০ জনের একদল সন্ত্রাসী পিস্তল ও দাড়ালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ৮ নং ওয়ার্ডের ছাত্র দলের কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলাকারীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সহ কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের ছবি ফেলে দিয়ে ভাঙচুর করে। শুধু তাই নয় ওই কার্যালয়ে থাকা টিভি ও আসবাবপত্রসহ মালামাল ভাঙচুর করে। 

বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাকেসহ সাজ্জাদ মাওলা বিন সিয়াম, জুবায়ের হোসেন, আব্দুল্লাহ, সায়েম, জুবায়ের শাহরিয়ার নাসিম ও গোলাম মাওলা নয়নকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বিএনপির দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রাকিব হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই কার্যালয়ে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে গ্রামবাসী হামলা করেছে।

ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ য় উর রহম ন ছ ত র দল ছ ত রদল ন ত র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার আরও চার আসনে প্রার্থী দিল বিএনপি, ফাঁকা রইল তিনটি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকার ২০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৩টিতে আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বিএনপি। যে সাত আসন ফাঁকা রাখা হয়েছিল, এবার এর চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। তবে ঢাকার তিনটি আসনে এখনো বিএনপির প্রার্থী নেই।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আরও ৩৬টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে গত ৩ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি।

প্রথম দফায় ঢাকার লালবাগ, চকবাজার, বংশাল, কামরাঙ্গীরচর (আংশিক) ও কোতোয়ালি (আংশিক) এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭; সবুজবাগ, খিলগাঁও ও মুগদা এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯; ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১০; মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরেবাংলা নগর (আংশিক) নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৩; ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও গুলশান-বনানী এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭; বৃহত্তর উত্তরা ও বিমানবন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৮ এবং ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত ঢাকা-২০ সংসদীয় আসন ফাঁকা রেখেছিল বিএনপি।

আজ ঢাকা-৭, ঢাকা-৯, ঢাকা-১০ ও ঢাকা-১৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এরপর বিএনপি ফাঁকা রাখল ঢাকা-১৩, ঢাকা-১৭ ও ঢাকা-২০ আসন। এর মধ্যে ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এবং ঢাকা-১৭ আসনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থকে বিএনপি সমর্থন দিচ্ছে। তাঁরা দুজন ইতিমধ্যে বিএনপির ‘সবুজসংকেত’ পেয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও শুরু করেছেন।

ঢাকা-২০ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী চারজন। তাঁরা হলেন ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তমিজ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের ঢাকা জেলা সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস (মুরাদ), জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ এবং ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান (অভি)। কিন্তু এই আসনে এখনো বিএনপি প্রার্থী দেয়নি।

ঢাকার চার আসনে যাঁদের নিয়ে আলোচনা ছিল

ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান। আসনটি বিএনপি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হককে ছেড়ে দিতে পারে বলে আলোচনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে বিএনপির সমঝোতা হয়নি। মামুনুল হকের দল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আট দলের অভিন্ন কর্মসূচির আন্দোলনে সক্রিয় আছে।

ঢাকা-৯ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ। এ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী। মির্জা আব্বাসকে ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এবার বিএনপির এক পরিবার থেকে একজনকে প্রার্থী করার ‘নীতির’ কারণে আফরোজা আব্বাস বাদ পড়তে পারেন বলে আলোচনা ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাও ঢাকা-৯ আসন থেকে নির্বাচন করছেন। এ আসন যখন বিএনপি ফাঁকা রেখেছিল, তখন এ আলোচনা সামনে এসেছিল যে তাঁর জন্যই বিএনপি আসনটি ফাঁকা রেখেছে কি না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৩৬ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ