পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এই তাপমাত্রা রেকর্ড করে।

দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘‘উত্তরের হিমেল বায়ু আজ থেকে আবারো কিছুটা সক্রিয় হচ্ছে। ফলে দিনাজপুরসহ আশপাশের জেলায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

দেশের কয়েকটি জেলার আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা- দিনাজপুর ১৫.

৬, রংপুর ১৭.৭, সৈয়দপুর ১৭.২, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) ১৬.০, ডিমলা (নীলফামারী) ১৬.০, বদলগাছি (নওগাঁ) ১৬.৬, রাজশাহী ১৫.২, বগুড়া ১৭.৬, চুয়াডাঙ্গা ১৫.৩, কুষ্টিয়া ১৬.৫ ও শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকা/মোসলেম/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনে বাঘের পেটে গেছেন রহিমের দাদা-চাচা, এবার নিজে বন্য প্রাণীর আক্রমণে আহত

সুন্দরবনের জীবন তাঁর রক্তে-মাংসে মিশে আছে। বাঘে খেয়েছে তাঁর দাদা আর চাচাকে। তবু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণই তাঁদের জীবিকা। সেই সুন্দরবনেই এবার বন্য শূকরের আক্রমণে মারাত্মকভাবে আহত হলেন শ্যামনগরের তরুণ জেলে আবদুর রহিম গাজী (২৮)।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চারতলার বারান্দায় একটি শয্যায় ব্যথায় কাতর হয়ে শুয়ে আছেন রহিম গাজী। শয্যার পাশে বসে ছেলের জন্য প্রার্থনা করছেন বাবা আরশাদ আলী গাজী।

গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের বাসিন্দা রহিম বলেন, ‘গত রোববার সুকালে বন অফিসের অনুমতি (পাস) লিয়ে বাবাসহ আমরা ছয়জন বাদায় গেলাম কাঁকড়া ধরতি। রাত্রি গোলবক্স খালে লৌকায় থাকলাম। পরদিন সুকালে রান্নার কাঠ আনতি বাদায় গেলাম। দুই ধারি ঘন বন। হঠাৎ দেখতি পেলাম কিছু একটা লড়ছে। বুঝতি পারার আগেই বন্য শূকর ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমার শরীর কামড় দে ছিন্নভিন্ন করে দিল।’

রহিম আরও বলেন, সামনে তিনি, পেছনে তাঁর বাবা আরশাদ আলী ও সহযোগী কাসেম কয়াল। বাদার কামান (সরু) পথে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ শূকর আক্রমণ করে ঊরুতে কামড় দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে জ্ঞান ফিরলে দেখেন তিনি নৌকায়। বাবা তাঁকে আশ্বস্ত করছিলেন, ‘ভয় পাসনে, গেরামে যাচ্ছি, তোরে হাসপাতালে নে ডাক্তার দেখাব নে।’

পঞ্চাশোর্ধ্ব আরশাদ আলী গাজীর চোখ-মুখে গভীর কষ্টের ছাপ। ছেলের শয্যার পাশে বসে তিনি বলেন, ‘রাত্রি বুড়িগোয়ালিনীতে আসি পৌঁছাই। রাত্রি দুইটোর দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিয়ে আসি। মঙ্গলবার ওর অপারেশন হয়েছে। ডাক্তার বলেছে তাড়াতাড়ি সারে উঠবে নে।’

চার দশক ধরে সুন্দরবনে কাজ করছেন আরশাদ আলী। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবা আনসার আলী গাজীর সঙ্গে প্রথম বাদায় যাওয়া। তিনি বলেন, ‘এই বনেই আমার চাচা জব্বার গাজীকে ত্রিশ বছর আগে বড় মামা (বাঘ) খাইছে। চাচাতো ভাই ছাত্তার গাজীও বাদার তালপাটিতে বাঘের খোরাক হইছে ১৫ বছর আগি। তবু বাদার কাজ ছাড়তি পারছিনে। এলাকায় কোনো কাজকাম লেই, খাবু কী।’

ছেলে রহিমকে বনজীবন থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অভাবই তাঁকে বাধ্য করেছে আট বছর আগে ছেলেকে নিয়েও বনে নামতে। তিনি বলেন, ‘ছেলে সারে উঠলি আবার বাদায় যাবু। মাছ-কাঁকড়া ধরতি হুবে, মধু কাটতি হুবে। উপায় কী? বাদায় বাঘ, দস্যু-কুমির—সবকিছুর ঝুঁকি মধ্যি এহানের মানুষ বেচি থাকি।’

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মুসফিকুর রহমান বলেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। রোগী এখন স্থিতিশীল, আশা করা হচ্ছে দ্রুত সেরে উঠবেন।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর ইসলাম বলেন, ‘গাবুরার এক জেলে বন্য শূকরের আক্রমণে আহত হয়েছেন—এ তথ্য আমরা পেয়েছি। তাঁর সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তাঁদের কেউ বন বিভাগে যোগাযোগ করেননি, তবে আমরা খোঁজ রাখছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ