রূপগঞ্জে ছাত্রদলের কার্যালয়ে হামলা, জিয়া পরিবারের ছবি ভাঙচুর : আহত ৮
Published: 4th, December 2025 GMT
রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুইপক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছাত্রদল কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে জিয়া পরিবারের ছবি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় আটজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাজ্জাদ, সিয়াম, জুবায়ের, আব্দুল্লাহ, সায়েম, জুবায়ের শাহরিয়ার নাসিম ও গোলাম মাওলা নয়নের নাম জানা গেছে।
তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের হোড়গাঁও চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার প্রভাব বিস্তার এবং এলাকার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ মাওলা বিন মিজানসহ তার লোকজনের সঙ্গে অপর ছাত্রদল নেতা রাকিব হাসানসহ তার লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল।
সাজ্জাদ মাওলা বিন মিজান বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে রাজনীতি করেন। অপরদিকে রাকিব হাসান অপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর রাজনীতি করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল কার্যালয় ও কার্যালয়ে থাকা জিয়া পরিবারের ছবি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে অন্তত আট জন আহত হয়েছেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় পুলিশের সামনেই বিচার চেয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হামলার শিকার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ মাওলা বিন মিজান অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার রাতে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। সেখানে ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
রাতেই প্রতিপক্ষ রাকিব হাসান ও তার লোকজন ওই কার্যালয়ে এসে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের ছবি নামিয়ে রাখা এবং কার্যালয় খালি করে দেওয়ার জন্য বলে আসে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে রাকিব হাসান, শাহাবুদ্দিন, নজরুল, মোশারফ, বাবু, আরিফ বকুলসহ ৩৫ থেকে ৪০ জনের একদল সন্ত্রাসী পিস্তল ও দাড়ালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ৮ নং ওয়ার্ডের ছাত্র দলের কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলাকারীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সহ কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের ছবি ফেলে দিয়ে ভাঙচুর করে। শুধু তাই নয় ওই কার্যালয়ে থাকা টিভি ও আসবাবপত্রসহ মালামাল ভাঙচুর করে।
বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাকেসহ সাজ্জাদ মাওলা বিন সিয়াম, জুবায়ের হোসেন, আব্দুল্লাহ, সায়েম, জুবায়ের শাহরিয়ার নাসিম ও গোলাম মাওলা নয়নকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বিএনপির দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রাকিব হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই কার্যালয়ে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে গ্রামবাসী হামলা করেছে।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ য় উর রহম ন ছ ত র দল ছ ত রদল ন ত র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন যাচ্ছেন যারা
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর অথবা শুক্রবার সকালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এসব তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
আরো ৩৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা: এভারকেয়ারের সামনে থেকে গুজবের ছড়াছড়ি
দেশ ও দেশের বাইরের বেশ কয়েকজন চিকিৎসকসহ ১৪ জন খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন বলেও জানান ডা. জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার তদারকি করছেন। তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়েছেন।”
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন হলেন— পুত্রবধূ সৈয়দা শামীলা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. ফখরউদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নূরুদ্দিন আহমদ, ডা. জাফর ইকবাল ও আল মামুন। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) সদস্য হাসান শাহরিয়ার ইকবাল ও সৈয়দ সামিন মাহফুজ। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী আব্দুল হাই মল্লিক ও সহকারী একান্ত সচিব মাসুদার রহমান।
এছাড়া গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রূপা সিকদারও খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ায় তার অবস্থা সংকটময় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার থেকে খালেদা জিয়াকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিয়ে চিকিৎসকরা নিবিড়ভাবে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। এই বোর্ডে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরাও রয়েছেন। এছাড়া গতকাল বুধবার এই মেডিকেল বোর্ডে যুক্তরাজ্য এবং চীন থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দুইটি দল যোগ দিয়েছে।
ঢাকা/এসবি