নেসলের প্রথম ‘গাট হেলথ সামিট’: অংশ নিলেন দেশ-বিদেশের গবেষক, বিশেষজ্ঞ
Published: 4th, December 2025 GMT
নেসলে বাংলাদেশের আয়োজনে নিউট্রিশন সায়েন্সের অগ্রগতি ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘দ্য গাট নেক্সাস’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৪ ও ৫ নভেম্বর রেডিসন ব্লু ঢাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের ২৫০ জনের বেশি গবেষক, বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। গাট মাইক্রোবায়োমের বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব ও মানুষের সার্বিক সুস্থতার সঙ্গে এর নিবিড় সম্পর্ক তুলে ধরাই ছিল সম্মেলনের মূল লক্ষ্য।
মানুষের পেটে থাকা ‘গাট মাইক্রোবায়োম’ বা উপকারী জীবাণুগুলো হজমশক্তি থেকে শুরু করে মানসিক সুস্থতা ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসহ অসংখ্য উপকারী ভূমিকা রাখে। ওই ওয়ার্কশপে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সেশন, প্রেজেন্টেশন, ইন্টারঅ্যাকটিভ আলোচনা এবং হাতে–কলমে শেখার নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা এসবের মাধ্যমে গাট হেলথ–সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর আধুনিক গবেষণা ও বাস্তব প্রয়োগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করেন।
বিশেষজ্ঞের মতামত এবং বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি
আন্তর্জাতিক আলোচকদের মধ্যে ছিলেন শ্রীলঙ্কার অধ্যাপক ড.
শামান রাজেন্দ্রজিথ বলেন, ছোটবেলা থেকে সঠিক মাইক্রোবায়োম গড়ে উঠলে জীবনের নানা পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আরও শক্তিশালী হয়।
নেদারল্যান্ডসের অধ্যাপক ড. মার্ক এ বেনিঙ্গা অনুষ্ঠানে শিশুদের কলিক সমস্যা এবং গাটের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যহীনতার ওপর তাঁর গবেষণা বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেন। বেনিঙ্গা বলেন, ব্যাকটেরিয়ার সুষম উপস্থিতি বিঘ্নিত হলে শিশুদের পেটে অস্বস্তি, ব্যথা অনুভব হয়। ফলে শিশুদের কান্নার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সঠিক প্রোবায়োটিক গ্রহণে এ সমস্যা সমাধান হতে পারে।
বাংলাদেশিদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টিবিষয়ক বাস্তবতা সামনে রেখে বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল হোসেন। তিনি গাটবান্ধব খাবার, প্রিবায়োটিক, প্রোবায়োটিক ও সিনবায়োটিক গ্রহণের সুবিধা এবং শিশুদের পুষ্টি উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বায়োটিকস যুক্ত হলে হজমশক্তি ও সার্বিক সুস্থতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে, যা জীবনমানকে দীর্ঘমেয়াদি উন্নত করতে সহায়তা করবে।’
গবেষণা ও প্রদর্শনী
কর্মশালায় গাট হেলথ–সম্পর্কিত আধুনিক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি বিভিন্ন সায়েন্টিফিক প্রদর্শনী করা হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা প্রোবায়োটিক ও সিনবায়োটিকের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সরাসরি পরিদর্শনের সুযোগ পান, যা নেসলে বাংলাদেশের গবেষণানির্ভর নিউট্রিশনবিষয়ক উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতি আরও স্পষ্ট করে।
কর্মশালাটির সার্বিক বিষয়বস্তু এবং সহযোগিতামূলক মনোভাব ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করে এবং বাস্তব চিত্র সামনে এনে উৎসাহিত করার মাধ্যমে নেসলে বাংলাদেশ পুষ্টিবিষয়ক শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনে বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে তাদের ভূমিকা আরও সুদৃঢ় করেছে।
জনস্বাস্থ্যের প্রতি অঙ্গীকার
এই উদ্যোগটি নেসলে নিউট্রিশন ইনস্টিটিউটের বৃহত্তর উদ্দেশ্যকে প্রতিফলিত করে, যা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বব্যাপী গাট হেলথ–সম্পর্কিত এডুকেশনকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। গবেষণা ও জ্ঞানচর্চামূলক প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের মাধ্যমে নেসলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থতা নিশ্চিত করতে এবং বিজ্ঞাননির্ভর সমাধানের মাধ্যমে আরও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তরুণ পেশাজীবীদের জন্য জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি, করুন আবেদন
আবারও শুরু হয়েছে তরুণ পেশাজীবী ও উদ্ভাবকদের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ কর্মসূচি ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট এসডিজি ইনোভেশন অ্যাকসেলারেটর। প্রোগ্রামটি জাতিসংঘের গ্লোবাল কমপ্যাক্টের একটি উদ্যোগ। এটির মূল লক্ষ্য হলো তরুণ পেশাজীবীদের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক সমাধান তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করা।
প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য
এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও টেকসই ব্যবসা পরিচালনার প্রশিক্ষণ পাবেন। পাশাপাশি তাঁরা বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তরুণ পেশাজীবীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করে বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধান বের করতে পারবেন।
অংশগ্রহণের যোগ্যতা
—বয়স হতে হবে ৩৫ বছরের নিচে।
—টেকসই উন্নয়ন, উদ্ভাবনী ব্যবসা মডেল এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে।
—প্রতি মাসে কমপক্ষে চার ঘণ্টা শেখার কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে হবে।
—প্রোগ্রামের অন্তত চারটি পূর্ণ দিবসের ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।
অংশগ্রহণকারীদের জন্য সুবিধা
—অনলাইন ও সরাসরি ওয়ার্কশপ, কেস স্টাডি, কোম্পানি ভিজিট এবং আলোচনা ফোরামে অংশগ্রহণের সুযোগ।
—ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পেশাজীবীদের সঙ্গে যৌথভাবে শিল্পভিত্তিক উদ্ভাবনী প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ।
—মেন্টরিং, কোচিং ও নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি।
—টেকসই উন্নয়ন, নেতৃত্ব ও উদ্ভাবন বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ।
—বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির তরুণ পেশাজীবীদের নিয়ে গঠিত গ্লোবাল নেটওয়ার্কের অংশ হওয়ার সুযোগ।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা: ভিসা–জটিলতা এড়াতে শিক্ষার্থীদের যে নতুন নির্দেশনা০৩ ডিসেম্বর ২০২৫এ প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য হলো তরুণ পেশাজীবীদের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক সমাধান তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করা