৬ দিনে অজয়-রাকুলের সিনেমা কত টাকা আয় করেছে?
Published: 20th, November 2025 GMT
পরিচালক আকিব আলী নির্মিত হিন্দি সিনেমা ‘দে দে পেয়ার দে’। সিনেমাটিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন অজয় দেবগন, টাবু ও রাকুল প্রীত সিং। ২০১৯ সালের ১৭ মে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এটি। বক্স অফিসেও দারুণ সাড়া ফেলেছিল সিনেমাটি।
দীর্ঘ ছয় বছর পর নির্মিত হয়েছে ‘দে দে পেয়ার দে টু’। আকিব আলীর পরিবর্তে দ্বিতীয় পার্ট পরিচালনা করছেন অংশুল শর্মা। নির্মাতা বদলে গেলেও সিনেমাটিতে ৩৫ বছর বয়সি রাকুলের সঙ্গে ফের জুটি বেঁধেছেন ৫৬ বছর বয়সি অজয়। তবে সিনেমাটিতে নেই টাবু। গত ১৪ নভেম্বর বিশ্বের সাড়ে ৩ হাজার পর্দায় মুক্তি পেয়েছে ‘দে দে পেয়ার দে টু’। শুরুতে বক্স অফিসে যাত্রাটি ভালো হলেও সময়ের সঙ্গে তাতে ভাটা পড়েছে। চলুন জেনে নিই, ৬ দিনে কত টাকা আয় করেছে সিনেমাটি।
আরো পড়ুন:
জুটি বেঁধে পর্দায় ফিরছেন সাই পল্লবী-ধানুশ!
প্রতারণার অভিযোগে যশের মায়ের মামলা
বলি মুভি রিভিউজ জানিয়েছে, মুক্তির প্রথম দিনে ‘দে দে পেয়ার দে টু’ সিনেমা ভারতে আয় করে ৯.
স্যাকনিল্প এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৬ দিনে ‘দে দে পেয়ার দে টু’ সিনেমা ভারতে আয় করেছে ৫২.৭৫ কোটি রুপি। বিদেশে আয় করেছে ১৫.৭৫ কোটি রুপি। বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির আয় দাঁড়িয়েছে ৬৮.৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা)।
‘দে দে পেয়ার দে টু’ সিনেমা মুক্তির পর দর্শক-সমালোচকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের চলচ্চিত্র সমালোচক শুভ্রা গুপ্তা বলেন—“সিনেমাটির দৈর্ঘ্য আমাকে অস্থির করে ফেলেছে।” পাঁচে আড়াই রেটিং দিয়েছেন তিনি। ইন্ডিয়া টুডের বিনীতা কুমার বলেন, “দে দে পেয়ার দে টু’ একটি মজাদার, হালকা রম-কম, যা হাস্যরস, পারিবারিক নাটকীয়তাকে একত্রিত করেছে। কাস্টিং কিছুটা অস্বস্তিকর হলেও সিনেমাটি নিরাশ করেনি।” পাঁচে ৩ রেটিং দিয়েছেন তিনি।
‘দে দে পেয়ার দে’ সিনেমার গল্প যেখানে শেষ হয়েছিল, সেখান থেকেই শুরু দ্বিতীয় পার্টের গল্প। এতে ২৮ বছর বয়সি আয়েশার প্রেমে পড়বেন ৫২ বছর বয়সি আশীষ। এ দুটো চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাকুল প্রীত সিং ও অজয় দেবগন।
সিনেমাটির দ্বিতীয় পার্টের বিভিন্ন চরিত্রে দেখা যাবে—আর মাধবন, জাভেদ জাফেরি, ইশিতা দত্ত, সঞ্জীব শেঠ প্রমুখ। প্রথম পার্ট নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৭৮ কোটি রুপি, আর দ্বিতীয় পার্টে ব্যয় হয়েছে ১০০ কোটি রুপি। এটি প্রযোজনা করেছেন লাভ রঞ্জন, অঙ্কুর গার্গ, ভুষণ কুমার, কৃষ্ণ কুমার।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র অজয় দ বগন বছর বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে বাঘের পেটে গেছেন রহিমের দাদা-চাচা, এবার নিজে বন্য প্রাণীর আক্রমণে আহত
সুন্দরবনের জীবন তাঁর রক্তে-মাংসে মিশে আছে। বাঘে খেয়েছে তাঁর দাদা আর চাচাকে। তবু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণই তাঁদের জীবিকা। সেই সুন্দরবনেই এবার বন্য শূকরের আক্রমণে মারাত্মকভাবে আহত হলেন শ্যামনগরের তরুণ জেলে আবদুর রহিম গাজী (২৮)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চারতলার বারান্দায় একটি শয্যায় ব্যথায় কাতর হয়ে শুয়ে আছেন রহিম গাজী। শয্যার পাশে বসে ছেলের জন্য প্রার্থনা করছেন বাবা আরশাদ আলী গাজী।
গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের বাসিন্দা রহিম বলেন, ‘গত রোববার সুকালে বন অফিসের অনুমতি (পাস) লিয়ে বাবাসহ আমরা ছয়জন বাদায় গেলাম কাঁকড়া ধরতি। রাত্রি গোলবক্স খালে লৌকায় থাকলাম। পরদিন সুকালে রান্নার কাঠ আনতি বাদায় গেলাম। দুই ধারি ঘন বন। হঠাৎ দেখতি পেলাম কিছু একটা লড়ছে। বুঝতি পারার আগেই বন্য শূকর ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমার শরীর কামড় দে ছিন্নভিন্ন করে দিল।’
রহিম আরও বলেন, সামনে তিনি, পেছনে তাঁর বাবা আরশাদ আলী ও সহযোগী কাসেম কয়াল। বাদার কামান (সরু) পথে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ শূকর আক্রমণ করে ঊরুতে কামড় দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে জ্ঞান ফিরলে দেখেন তিনি নৌকায়। বাবা তাঁকে আশ্বস্ত করছিলেন, ‘ভয় পাসনে, গেরামে যাচ্ছি, তোরে হাসপাতালে নে ডাক্তার দেখাব নে।’
পঞ্চাশোর্ধ্ব আরশাদ আলী গাজীর চোখ-মুখে গভীর কষ্টের ছাপ। ছেলের শয্যার পাশে বসে তিনি বলেন, ‘রাত্রি বুড়িগোয়ালিনীতে আসি পৌঁছাই। রাত্রি দুইটোর দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিয়ে আসি। মঙ্গলবার ওর অপারেশন হয়েছে। ডাক্তার বলেছে তাড়াতাড়ি সারে উঠবে নে।’
চার দশক ধরে সুন্দরবনে কাজ করছেন আরশাদ আলী। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবা আনসার আলী গাজীর সঙ্গে প্রথম বাদায় যাওয়া। তিনি বলেন, ‘এই বনেই আমার চাচা জব্বার গাজীকে ত্রিশ বছর আগে বড় মামা (বাঘ) খাইছে। চাচাতো ভাই ছাত্তার গাজীও বাদার তালপাটিতে বাঘের খোরাক হইছে ১৫ বছর আগি। তবু বাদার কাজ ছাড়তি পারছিনে। এলাকায় কোনো কাজকাম লেই, খাবু কী।’
ছেলে রহিমকে বনজীবন থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অভাবই তাঁকে বাধ্য করেছে আট বছর আগে ছেলেকে নিয়েও বনে নামতে। তিনি বলেন, ‘ছেলে সারে উঠলি আবার বাদায় যাবু। মাছ-কাঁকড়া ধরতি হুবে, মধু কাটতি হুবে। উপায় কী? বাদায় বাঘ, দস্যু-কুমির—সবকিছুর ঝুঁকি মধ্যি এহানের মানুষ বেচি থাকি।’
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মুসফিকুর রহমান বলেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। রোগী এখন স্থিতিশীল, আশা করা হচ্ছে দ্রুত সেরে উঠবেন।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর ইসলাম বলেন, ‘গাবুরার এক জেলে বন্য শূকরের আক্রমণে আহত হয়েছেন—এ তথ্য আমরা পেয়েছি। তাঁর সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তাঁদের কেউ বন বিভাগে যোগাযোগ করেননি, তবে আমরা খোঁজ রাখছি।’