আগামী ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ। দীর্ঘ সময় সংস্কারের পর ঢাকা স্টেডিয়ামে আবারও ফিরছে ফুটবল ম্যাচ। এই ম্যাচে বাড়তি পাওয়া হামজা চৌধুরী। প্রথমবার বাংলাদেশের মাটিতে খেলতে যাচ্ছেন হামজা। জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে হামজাদের ম্যাচ দেখতে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহ তুঙ্গে।

কিন্তু টিকিট কাটতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ফুটবলপ্রেমীদের। অনলাইনে টিকিট ছেড়েছিল বাফুফে। এজন্য টিকিফাইকে (tickify.

live) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফের। ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ায় ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল। যদিও শঙ্কা কাটিয়ে আজ সোমবার রাত ১০টা থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম। এ খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল।

সোমবার (২৬ মে) কুল-বিএসজেএ ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল। টুর্নামেন্টের উদ্বোধন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বাফুফে সভাপতি বলেন, “বাফুফে সব সময় ইনোভেটিভ কাজ করে থাকে। প্রথমবার ভুল-ত্রুটি হতে পারে, এটা স্বীকার করে নিয়েছি। দুটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে সাইবার আক্রমণ হয়েছে। এজন্য সার্ভার ডাউন ছিল। টিকিট সংগ্রহ পর্যায় থেকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ পর্যন্ত আমরা নজরদারি রাখব। আমরা আশাবাদী আজ আবার রাত ১০টা থেকে সাইট ও প্ল্যাটফর্ম অন হবে, সীমিত পরিসরে হলেও।”

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে ফিফার অনুমতি পেলেন শমিত

কালবৈশাখী ঝড়ের পর আলোকস্বল্পতায় স্থগিত ফেডারেশন কাপের ফাইনাল

সংস্কারের পর ২২ হাজার দর্শক একসঙ্গে বসে মাঠে খেলা দেখতে পারবেন। ধারণা করা যাচ্ছে, প্রায় ২৫ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত থাকবেন।

স্টেডিয়ামের বাইরে বাফুফের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে জানালেন তাবিথ আউয়াল, “স্টেডিয়াম গ্যালারি ১৮ হাজার। এর বাইরে হাজার দুয়েক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাস্তবতা হলো—অনেক সমর্থককে সীমিত আসনের জন্য স্টেডিয়ামের বাইরে থাকতে হবে। তাদের জন্য আমরা বাইরে ব্যবস্থা করব। বাফুফের পক্ষ থেকে আটটি বিভাগীয় শহরে ফ্যান জোন করা হচ্ছে। অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগেও করছে।”

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে প্রতি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন মূল পর্বে খেলতে পারবে। বাংলাদেশের গ্রুপে ভারত, সিঙ্গাপুর ও হংকং—চার দলেরই সমান এক পয়েন্ট এবং গোল ব্যবধানও শূন্য। তাই ১০ জুনের ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বাফুফে সভাপতি।

তার মতে, বাংলাদেশের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে এশিয়ান কাপ খেলার, “আমি আশাবাদী এখনো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে। আমাদের গ্রুপটি বেশ কঠিন। প্রতি দলেরই এক পয়েন্ট ও গোলও শূন্য। সিঙ্গাপুর ম্যাচের পর টেবিলের অবস্থান নিশ্চয়ই বদলাবে। আমি সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী।”

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার উদ্যোগে স্বস্তি আগাম দরখাস্তে সংশয়

স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের জন্য প্রথমবারের মতো নিয়োগপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে দরখাস্ত চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। গতকাল বুধবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত ফরমে ২২ জুনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে দরখাস্ত জমা দিতে বলা হয়েছে।

একই বিজ্ঞপ্তিতে পূর্বের দরখাস্তকারীদের নতুন করে দরখাস্ত জমা না দিতেও বলা রয়েছে। এতে বিজ্ঞপ্তি জারির আগেই দরখাস্ত জমা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সার্বিকভাবে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে দেশের বিচার বিভাগের জন্য ‘স্বচ্ছতা ও কাঠামোবদ্ধতার নতুন দিগন্ত’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট আইনজ্ঞসহ নিয়োগপ্রত্যাশীরা। 

তারা বলছেন, অতীতে বিচারপতি নিয়োগে দলীয় আনুগত্য ও রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ থাকলেও এবার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একটি ইনক্লুসিভ ও মেধাভিত্তিক প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে। এর উদ্দ্যেশ্য ব্যাহত হয় এমন কিছু করা উচিত হবে না। এমনটি হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন হবে। তবে কেউ কেউ নিয়োগ 
প্রক্রিয়ার কিছু অসংগতির দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। তারা মনে করেন, ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনের মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করা সম্ভব।

গত ২১ জানুয়ারি ‘সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করে সরকার। এর আওতায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৭ সদস্যের সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠন করা হয়। 

এদিকে, গণবিজ্ঞপ্তি জারির আগেই বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের তত্ত্বাবধানে দরখাস্ত জমা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে সম্মত হননি। সুপ্রিম কোর্ট-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের দরখাস্তগুলো কাউন্সিল পর্যালোচনা করবে। সংবিধান ও অধ্যাদেশের আলোকেই নিয়োগ সম্পন্ন হবে।

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্‌দীন মালিক সমকালকে বলেন, ‘গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নিঃসন্দেহে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার অত্যাবশ্যক অংশ। বিচারপতি নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া গোপনে সম্পন্ন হতো। এবার একটি স্বচ্ছ ও কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা অবশ্যই ইতিবাচক। কারণ গোপন প্রক্রিয়ার চেয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বরাবরই শ্রেয়। এটি প্রথমবারের মতো কার্যকর হচ্ছে। তাই কিছুটা এলোমেলো হতে পারে। আশা করছি, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের একটি কাউন্সিল দরখাস্ত যাচাই-বাছাই করে যোগ্যতম ব্যক্তিদেরই নিয়োগ দেবেন।’

শাহ্‌দীন মালিক আরও বলেন, ‘অতীতে রাজনৈতিক তদবিরের মাধ্যমে অনেক নিয়োগ হয়েছে। সেই সংস্কৃতি ভেঙে গেলে রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের মধ্যে কেউ কেউ হতাশ বা ক্ষুব্ধ হতে পারেন। তবে নিয়োগ কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে এবার যে কাঠামো তৈরি হয়েছে, তা একটি প্রতিনিধিত্বমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ কাঠামো। এতে প্রধান বিচারপতি, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, আইনের অধ্যাপক, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিও রয়েছেন।’ 

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সমকালকে বলেন, বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে গত দুই যুগে অনেক প্রশ্ন ছিল। যোগ্যতা নিয়েও বিতর্ক ছিল। নতুন অধ্যাদেশে নিয়োগ হলে বিতর্ক হওয়ার সুযোগ কমে যাবে। কারণ নিয়োগপ্রত্যাশীদের কিছু মানদণ্ড বজায় রেখে ভাইভার মুখোমুখি হতে হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে কাউন্সিলে রাখা হয়েছে। তাদের না রাখা হলে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হতো।

মনজিল মোরশেদ আরও বলেন, কাউন্সিলকে অবশ্যই সংবিধান ও আইনের আলোকে যোগ্যতা, সততা ও নৈতিকতাসম্পন্ন প্রার্থীদেরই বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে; রাজনীতিকে নয়। তাহলে অবশ্যই বিচার বিভাগ উপকৃত হবে এবং বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল সমকালকে বলেন, ‘অতীতে বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে দলীয় আনুগত্যকেই নিয়োগের মাপকাঠি হিসেবে ধরা হতো। এবার গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে দরখাস্ত আহ্বানের মাধ্যমে একটি কাঠামোবদ্ধ এবং ইনক্লুসিভ পদ্ধতির সূচনা হয়েছে, যা সৎ, মেধাবী, যোগ্য ও কর্মনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিচার বিভাগে আগ্রহী করে তুলবে।’

রুহুল কুদ্দুস কাজল আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে কোনো অসৎ, দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য বা দলবাজ ব্যক্তি বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। আমরা সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানাব, আবেদনকারীদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করে জনগণের মতামত গ্রহণের একটি ব্যবস্থা রাখা হোক। এতে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা আগেভাগেই জানা যাবে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকরা মেরুদণ্ড সোজা করে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।’

নিয়োগপ্রত্যাশী পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক অধস্তন আদালতের এক জেলা জজ সমকালকে বলেন, ‘গণবিজ্ঞপ্তি জারির আগেই কাউন্সিল দরখাস্ত গ্রহণ করেছে– এমন তথ্য বিজ্ঞপ্তিতেই উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ কাউন্সিলের সঙ্গে আগেভাগে কারও কারও যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে, যা বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের মূল স্পিরিটের পরিপন্থি।’ ওই জেলা জজ আরও বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা, গণবিজ্ঞপ্তি জারির আগে যেসব দরখাস্ত জমা পড়েছে, সেগুলোর তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করে ঘোষণামূলক বাতিল করা হবে। অন্যথায় পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক ও প্রশ্ন উঠতে পারে।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেঞ্চুরি ছাড়াই ইংল্যান্ডের ৪০০, ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথমবার
  • স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার উদ্যোগে স্বস্তি আগাম দরখাস্তে সংশয়
  • প্রথমবার চীনে গেল আম
  • অ্যাকশন ছবিতে বুবলীর নায়ক সজল
  • প্রথমবারের মতো আজ চীনে আম রপ্তানি হচ্ছে, যাবে সাতক্ষীরা ও যশোরের আম
  • চীনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি আম রপ্তানি শুরু আজ