কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ভিজিএফ প্রকল্পের প্রায় সাড়ে সাত টন চাল জব্দ করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল বুধবার উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নে পরিষদের আশপাশের কয়েকটি দোকানের গুদামে ও বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে সন্তোষপুর ইউনিয়নের ৭ হাজার ৯৬৯ দুস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ভিজিএফ প্রকল্পের আওতায় ১০ কেজি করে প্রায় ৮০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব চাল গতকাল বিতরণের কথা ছিল। অভিযোগ আছে, অতি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হলেও এসব চালের স্লিপ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। পরে ব্যবসায়ীরা এসব স্লিপে চাল উত্তোলন করে পরিষদের আশপাশের বিভিন্ন গুদামে মজুত করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে জানালে গতকাল বিকেলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের স্টোরম্যান ও চাল বিতরণের সঙ্গে নিয়োজিত ইউপি সদস্যরা পালিয়ে যান। পরে ইউনিয়ন পরিষদের আশপাশে কয়েকটি দোকানের গুদাম থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের সিল দেওয়া প্রায় ২০০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে পদত্যাগ করলে একই ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি গ্রেপ্তার হলে গত ১২ নভেম্বর সংরক্ষিত মহিলা সদস্য খাদিজা বেগমকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। খাদিজা বেগমের তত্ত্বাবধানে এসব চাল বিতরণ চলছিল।

অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান খাদিজা বেগম বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে ঠিকমতোই চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাইরে ইউপি সদস্যরা কী করেছেন, আমি তা জানি না।’

এ ঘটনায় আজ উপজেলার ট্যাগ কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রায়হান কবীর বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। যেসব ব্যক্তির দোকান ও বাড়ি থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়েছে, মামলায় এমন সাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, জব্দ করা ভিজিএফ চাল থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

তদন্তের পর দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ল ব তরণ এসব চ ল ভ জ এফ সদস য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’

ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ