ইংল্যান্ড সফরে ভারতের টেস্ট দলে রানা
Published: 18th, June 2025 GMT
আসন্ন ইংল্যান্ড সফরের জন্য ভারতীয় টেস্ট দলে ফিরেছেন তরুণ পেসার হর্ষিত রানা। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) নিশ্চিত করেছে, রানা হেডিংলেতে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্ট ম্যাচের আগে ইতোমধ্যেই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
২৩ বছর বয়সী হর্ষিত সম্প্রতি ভারত ‘এ’ দলের হয়ে ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিপক্ষে একটি অনানুষ্ঠানিক টেস্ট খেলেন। যেখানে তিনি বল হাতে একটি উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও চমক দেখান। রেহান আহমেদের বলে দুইটি ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন তিনি।
এর আগে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের হয়ে অভিষেক হয়েছিল এই পেসারের। অভিষেক টেস্টেই পার্থে ৪ উইকেট নিয়ে ২৯৫ রানের বড় জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন রানা। তার আগ্রাসী বোলিং ও কার্যকর অলরাউন্ড দক্ষতা এবার ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ভারতীয় বোলিং আক্রমণে বাড়তি শক্তি যোগাবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরো পড়ুন:
বড় হারে ইংল্যান্ড হোয়াইটওয়াশ
গিল-আয়ার-কোহলির ব্যাটে তৃতীয় ওয়ানডেতে ভারতের রান পাহাড়
ভারতের পেস বিভাগে এবার থাকছেন অভিজ্ঞ জাসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, আর্শদীপ সিং, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, আকাশ দীপ এবং নতুন সংযোজন হর্ষিত রানা। এদের সঙ্গে আছেন অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর ও নিতীশ কুমার রেড্ডি।
এই সিরিজ দিয়েই শুভমন গিল ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করছেন। তবে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বে। বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় এবার তাদের ছাড়া মাঠে নামছে টিম ইন্ডিয়া।
আগামী শুক্রবার (২০ জুন) হেডিংলেতে শুরু হচ্ছে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। এটি হবে ২০২৫–২৭ ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের প্রথম সিরিজ ভারতের জন্য। গত বছর ভারতের মাটিতে দুই দলের পাঁচ টেস্টের সিরিজ ৪–১ ব্যবধানে জিতেছিল ভারত। যেখানে প্রথম ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। এবার ইংল্যান্ডের মাটিতে সেই সাফল্য ধরে রাখতে চাইবে নতুন নেতৃত্বের ভারত। অন্যদিকে, রানাসহ তরুণদের কাছে এটি নিজেকে প্রমাণ করার বড় মঞ্চ।
ভারতের টেস্ট স্কোয়াড:
শুভমন গিল (অধিনায়ক), ঋষভ পন্থ (উইকেটকিপার), যশস্বী জয়সওয়াল, লোকেশশ রাহুল, সাই সুদর্শন, অভিমন্যু ঈশ্বরণ, করুণ নাইয়ার, নিতীশ কুমার রেড্ডি, রবীন্দ্র জাদেজা, ধ্রুব জুরেল (উইকেটকিপার), ওয়াশিংটন সুন্দর, শার্দুল ঠাকুর, জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, আকাশ দীপ, আর্শদীপ সিং, কুলদীপ যাদব ও হর্ষিত রানা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার আসল কারণ জানালো তদন্তকারী সংস্থা
ভারতের আহমেদাবাদে গত মাসে ২৬০ যাত্রী নিয়ে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, উড্ডয়নের তিন সেকেন্ড পরেই বিমানটির ইঞ্জিনের জ্বালানি সুইচগুলো প্রায় একইসঙ্গে ‘চালু’ অবস্থা থেকে ‘বন্ধ’ অবস্থায় চলে যায়। ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। খবর সিএনএনের।
শনিবার (১২ জুলাই) ভারতের এভিয়েশন দুর্ঘটনা তদন্তকারীদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণে বোয়িং–৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির গতি দ্রুত কমতে শুরু করে এবং নিচের দিকে নামতে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটি ১৮০ নট গতিতে পৌঁছানোর পর মাত্র ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইটি ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে এক পাইলটকে অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, তিনি কেন জ্বালানি বন্ধ করেছেন। জবাবে ‘অপর পাইলট বলেন, তিনি জ্বালানি বন্ধ করেননি।’
আরো পড়ুন:
সংসার ভাঙছে নয়নতারার?
লর্ডসে ব্যতিক্রমী ধৈর্য, রুটের ৯৯ রানে ভর করে লড়াইয়ে ইংল্যান্ড
এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করা হলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়। ইঞ্জিন রিস্টার্টের প্রক্রিয়ায় থাকতেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সেসময় বিমানের র্যাম এয়ার টারবাইন (আরএএম) চালু হয়ে যায়, যা জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার অংশ। বিমানটি রানওয়ে পার হয়ে খুব দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে ফেলে এবং পাশের বিজে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হোস্টেলে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।
তদন্তকারীরা বিমানের ব্ল্যাক বক্স থেকে উদ্ধার করা ৪৯ ঘণ্টার ফ্লাইট ডেটা ও দুই ঘণ্টার ককপিট অডিও বিশ্লেষণ করে এই তথ্য খুঁজে বের করতে সমর্থ হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যে, সেগুলো সহজে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ডেভিড সোসি বলেন, “এই সুইচগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নাড়াচাড়া করার জন্য তৈরি। দুই ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল।”
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ফ্লাইট ‘এআই ১৭১’-এ ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক। এছাড়াও, মাটিতে থাকা বেশ কয়েকজন লোক নিহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের বাসিন্দা। সব মিলিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬০ জনে।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “এআই ১৭১ ফ্লাইট দুর্ঘটনায় যেসব পরিবার প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছি।”
ঢাকা/ফিরোজ