লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের কাইজ্জালীপুর এলাকায় রাস্তায় গাছ রোপণ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শুধু বেড়া নয়, মাটি কেটে একাধিক গর্ত করা হয়েছে ওই রাস্তায়। এতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে ৩৫টি পরিবার। 

এদিকে, চলাচলের রাস্তা ফিরে পেতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। সেখানে চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন—ওই এলাকার মৃত ছেলামতের ছেলে মমিন উল্লাহ, মমিন উল্লাহর ছেলে মো.

আজিম, মো. আরিফ হোসেন ও মো. রাকিব হোসেন। 

ভুক্তভোগী হাফিজ উল্লাহ বলেছেন, “৭০ বছরের বেশি সময় ধরে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতাম আমরা। কখনো মমিন উল্লাহরা বাধা দেয়নি। এখন হঠাৎ করে ৬ লাখ টাকা দাবি করছে। টাকা না দেওয়ায় রাস্তাটি জোরপূর্বক বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে গাছের চারা রোপণ, বেড়া এবং একাধিক গর্ত করেছে। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।” 

অন্য ভুক্তভোগী ছালেহ আহমেদ বলেছেন, “রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। জরুরি প্রয়োজনে অন্যের জমি দিয়ে হাঁটাচলা করছি। মমিন-আরিফরা আমাদের রাস্তায় গর্ত করে রেখেছে। এতে বাধা দেওয়ায় আমাদের মারধরের চেষ্টা করে। বিভিন্ন হুমকি- দিচ্ছে। চাঁদাও দাবি করছে।” 

অভিযুক্ত মমিন উল্লাহর ছেলে মো. আরিফ হোসেন বলেছেন, “এই জমিটি আমাদের। হাফিজরা জোরপূর্বক রাস্তা তৈরি করে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলাচল করছে। মানবিকতার কথা ভেবে জমিটি (পথের) তাদের কাছে বিক্রি করতে চেয়েছি। কিন্তু, তারা সেটি মানেনি। আগের মতো জোরপূর্বক চলাচল করতে চায়। ওই জমিতে আমরা ঘর নির্মাণ করব। তাই, বেড়া দিয়ে জমি পুনরুদ্ধার করেছিলাম।” 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা বলেছেন, “অভিযোগ পেয়ে চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/লিটন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণবার্ষিকী আজ

বর্ষা ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় ঋতু। বর্ষাতেই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরলোকে যাত্রা করেছিলেন বাঙালি মনন–সৃজনের এই অসাধারণ প্রতিভা। আজ ২২ শ্রাবণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণবার্ষিকী। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর পৈতৃক বাড়িতে তাঁর জীবনাবসান হয়েছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখালেখি শুরু করেছিলেন মাত্র আট বছর বয়সে। বিচিত্র তার বিষয়, বিপুল তার পরিমাণ। তাঁর সৃজনপ্রতিভা বাংলা কাব্য, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ, চিঠিপত্র, শিশুসাহিত্যসহ বাংলা সাহিত্যকে স্বর্ণময় উজ্জ্বলতা দান করেছে। গীত রচনা ও সুরস্রষ্টা হিসেবে তিনি নিজেই নিজের তুলনা। চিত্রকলা নতুন মাত্রা লাভ করেছে তাঁর প্রতিভায়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষাবিস্তার, সাংগঠনিক কর্ম ও সমাজকল্যাণমূলক কাজেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি কৃষক ও পল্লি উন্নয়নের জন্য চালু করেছিলেন কৃষিঋণব্যবস্থা। নতুন ধরনের শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠান। জালিয়ানওয়ালাবাগে দেশবাসীর ওপর ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সেনাদের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে তিনি ত্যাগ করেছিলেন নাইটহুড খেতাব।

দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা সুন্দরী দেবী দম্পতির ১৫ সন্তানের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ১৪তম। কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের জোড়াসাঁকোর বাড়িতে তাঁর জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ। ঠাকুর পরিবার তখন ছিল মর্যাদা ও সংস্কৃতিচর্চায় বিশেষ খ্যাতির অধিকারী। সেই পরিবেশ শৈশবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনকে মুক্ত করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে বিশেষত বাংলার পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় নৌকায় ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তিনি নিসর্গ ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন, যার প্রভাব তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে পড়েছে।

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও কবির গান সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছে। তাঁর গান আমাদের জাতীয় সংগীত। সব মিলিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বাঙালির হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছেন।

বিশ্বকবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে রয়েছে ছায়ানটের অনুষ্ঠান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আয়োজনে হবে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে বিকেল চারটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ