নওগাঁ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 4th, November 2025 GMT
নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল বারীর (টিপু) মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মান্দায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত এম এ মতিনের অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করা হয়।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে নওগাঁ-৪ আসনে মান্দা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল বারী মনোনয়ন পান। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মতিন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন এম এ মতিনের অনুসারীরা। বিক্ষোভে শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন। এতে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে মান্দায় ইকরামুল বারীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা তৃণমূল বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে এম এ মতিনকে প্রার্থী হিসেবে পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপজেলার ভালাইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, পরানপুর ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, কসব ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হাশেম, সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, কাশোপাড়া ইউনিয়নের সভাপতি সোহানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী নাজিম উদ্দিন, কালিকাপুর ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, গণেশপুর ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, মান্দা ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মতিন ত্যাগী, পরীক্ষিত ও বারবার কারা নির্যাতিত নেতা। তাঁর নেতৃত্বেই মান্দা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। অথচ তৃণমূলের মতামত অগ্রাহ্য করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে। এম এ মতিনকে প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে তৃণমূল বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে গোটা মান্দা অচল করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ইকরামুল বারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’
মনোনয়নবঞ্চিত এম এ মতিন বলেন, ‘দলের নিবেদিত কর্মী হিসেবে হাইকমান্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, আমি তা মেনে নিয়েছি। গতকালই আমি নেতা-কর্মীদের ইকরামুল বারীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছি। তারপরও দলের কিছু নেতা-কর্মী ও আমার কিছু সমর্থক আমাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় কষ্ট পেয়েছে। তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তারা বিক্ষোভ করেছে। তবে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইকর ম ল ব র ল ইসল ম ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ রাজনীতিতে অনৈক্য ও বিভক্তি বাড়িয়েছে: রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর
এত দিন ধরে আলোচনা ও দলগুলোর স্বাক্ষরের পরেও কেন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রস্তাব এল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারপারসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উপস্থাপিত বিষয়গুলোর বেশ কটির বিষয়ে ন্যূনতম ঐকমত্য হয়নি। তারা সেগুলোর প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যাও হাজির করেন না। তাদের সুপারিশ রাজনীতিতে অনৈক্য ও বিভক্তি বাড়িয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি মিলনায়তনে ‘প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫: নাগরিক প্রত্যাশা ও জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এ কথা বলেন। গোলটেবিলের আয়োজন করে ‘নাগরিক কোয়ালিশন’ নামের একটি সংগঠন। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, রাজনীতিতে অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নিজেরা কতটা সংস্কারপন্থী সেটা জাহির করছে। সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে, নিজেদের মধ্যে আলাপ–আলোচনা করে একমত হতে আহ্বান জানিয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ রাজনৈতিক বিষয় রাজনীতিগতভাবে মীমাংসা না করে, অন্যভাবে মীমাংসা করার একটা বিষয়ও এর মধ্যে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, কমিশন দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু এই যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নেই। এটি গণতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা। গণভোট বিষয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাব এতটাই জটিল যে সাধারণ ভোটারের পক্ষে এগুলো বোঝা কঠিন হবে।
‘চাপিয়ে দেওয়াটা গণতান্ত্রিক হবে না’
বৈঠকে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর ‘কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে’ জটিলতা সৃষ্টি করেছে। এতে এমনটি প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে যে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হতে পারে না। তিনি মনে করেন, যাঁরা দেশ চালাবেন, সেই রাজনৈতিক দলগুলোরই উদ্যোগ নিয়ে একটি সমাধানের জায়গায় পৌঁছানো দরকার।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ঐকমত্য কমিশন কেন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ রাখল, তা এখনো বোধগম্য নয়। ব্যাখ্যা না দিয়ে কিছু চাপিয়ে দেওয়াটা গণতান্ত্রিক হবে না।
রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর