অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যাবেন তারা। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন– দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।  

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ড, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বাল্যবিবাহের ৪ বছর পর রেজিস্ট্রির সময় আবারও যৌতুক দাবি, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে রেজিস্ট্রি করা হবে—এই শর্তে বাল্যবিবাহ হয়েছিল। তখন বরকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছিলেন মেয়ের বাবা। চার বছর পর মেয়ের বিয়ের বয়স হয়। এখন বিয়ে রেজিস্ট্রি করার সময় ছেলেপক্ষ থেকে আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করা হয়। এ নিয়ে চলছিল মনোমালিন্য। এরই মধ্যে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আটঘরিয়া গ্রামে। মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম মনিষা খাতুন (১৮)। খবর পেয়ে বাঘা থানার পুলিশ শয়নকক্ষ থেকে মনিষার মরদেহ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গৃহবধূর স্বামীর নাম আজাদ আলী। তাঁর বাড়ি উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের আটঘরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবু জিহাদ আলী। ঘটনার পর থেকে আজাদ আলী পলাতক।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে মেয়ে মনিষা খাতুনের সঙ্গে আজাদ আলীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ওই কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। সম্প্রতি কাজিরা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ে রেজিস্ট্রি করছেন না। এ কারণে মৌখিকভাবে কালেমা পড়িয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। মেয়ের বয়স পূর্ণ হলে রেজিস্ট্রি করা হয়। মনিষার বিয়েও সেভাবেই হয়েছিল। ইতিমধ্যে তাঁর একটি কন্যাসন্তান হয়েছে। তাঁর বয়স হয়েছে আড়াই বছর। দেড় মাস আগে তিনি প্রাপ্তবয়স্ক হন। তবে যৌতুকের দাবি না মেটানোয় এখনো রেজিস্ট্রি হয়নি।

মনিষার বাবা মুনসাদ আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘বিয়ের সময় আমার মেয়ের বয়স কম ছিল। তখন ছেলের পরিবারকে দুই লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দিয়েছি। কিন্তু দেড় মাস আগে মেয়ের বিয়ের বয়স হওয়ায় বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে চাইলে আবার ছেলের মামা দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।’ মনিষাকে নির্যাতনের পর হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মা রুবিনা বেগম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজাদের মামা শহিদুল ইসলাম যৌতুকের টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘রেজিস্ট্রির সময় টাকা হিসেবে নয়, তাদের জামাইকে উপঢৌকন হিসেবে একটি মোটরসাইকেল দেওয়ার কথা ছিল। টাকা চাওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।’

মনিষার মামা সাদ্দাম হোসেন জানান, রাত আড়াইটার দিকে তাঁর বোন ফোন করে জানান, তাঁর ভাগনি গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন। পরে ভোরে তিনি ওখানে এসে ৯৯৯ কল করে পুলিশকে জানান। তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি ওই ছেলে বেশ কিছুদিন আগে আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করে বিয়ে করেছে। মাঝেমধ্যেই মনিষাকে (ভাগনিকে) ওই মেয়ে কল করে আজাদের স্ত্রী দাবি করে বলে যে সে বাড়ির বউ হয়ে আসবে।’

আজাদের মা শরিফা বেগমের ভাষ্য, ‘সোমবার সন্ধ্যায় ছেলে আর ছেলের বউয়ের ঝগড়া হয়। বিষ খেয়ে মারা যাব বলে আজাদ (ছেলে) বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর আমি ছেলেকে খুঁজতে বের হই। পরে রাত ১১টার দিকে ঘরে গিয়ে দেখি (আজাদের স্ত্রী) ছেলের বউ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে।’ তাঁর ছেলের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে দ্বিতীয় কোনো বিয়ে করেননি।

বাঘা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোজাম্মেল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ