পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
Published: 29th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, ১২ মাইল টিকটিকিপাড়া ও মসলেমপুরের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, ব্যক্তিগত, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ পাউবোর বেড়িবাঁধ।
গতকাল রোববার নদী ভাঙনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা মুন্সিপাড়ার বাসিন্দারা মানববন্ধন করেছেন। তারা পৈতৃক ভিটা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা গিয়াস মুন্সি বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে একরের পর একর কৃষিজমি বিলীন হয়েছে। তিন গ্রামের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন চলছে। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়, ভাঙন স্থান থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বেড়িবাঁধের দূরত্ব মাত্র ৪০ মিটার। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে তিন গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষ।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আনোয়ার আলী বলেন, বসতভিটা বাদে অনেকেই সব হারিয়ে ফেলেছেন। তাই প্রশাসন ও পাউবোর কাছে জোর দাবি,
বিভিন্ন নিয়মনীতির বেড়াজালে না থেকে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিন।
ইউএনও রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীও তাদের কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন। সেটি পাউবো বরাবর পাঠানো হয়েছে। দ্রুত তারা ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা ইতোমধ্যে যোগাযোগ করেছেন। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা যাবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।