গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ১৩ বছর আগে দুই অঙ্কের ঘরে ছিল বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি। ২০১০-১১ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয় ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি গত কয়েক মাস ধরে কমছে। গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এটি প্রায় তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করেছে বিবিএস। প্রতি মাসে মাঠ পর্যায় হতে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দামের তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে সংস্থাটি। প্রাপ্ত তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রণয়ন করা হয়। এ সূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটা বাড়ল তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি। এটির ১২ মাসের চলন্ত গড় হিসাব হচ্ছে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি।
বিবিএসের তথ্য অনুসারে, গত জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মে মাসে এটি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে দেখা যায়। তবে গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমে আসে। টানা তিন মাস কমার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ফের বাড়ে মূল্যস্ফীতি। এপ্রিল থেকে আবারও কমার ধারার ফিরে মূল্যস্ফীতি। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একটি বড় অংশ জুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকায় অর্থবছরটিতে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক অর্থবছর ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখা যাচ্ছে না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে বাস্তবতার আলোকে সে লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধন আনা হয়। গড় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ শতাংশ।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। ওই অর্থবছরে ৯ শতাংশের কিছু বেশি হয় গড় মূল্যস্ফীতি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা আরও বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ব এস ব ব এস বছর র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
কুবির ২ বিভাগে র্যাগিংয়ের ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিটি, ক্লাস-পরীক্ষা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নৃবিজ্ঞান ও বাংলা বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যাচ দুইটির সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: আবদুল হাকিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিপ্লব মজুমদার। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন–নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসেনা বেগম ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর
ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র
বাংলা বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুজ্জামান। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর ড. মুতাসিম বিল্লাহ।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে সুপারিশ পাঠিয়েছি। উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য স্বাক্ষর করলে এই কমিটি কার্যক্রমের জন্য অনুমোদন হবে। অনুমোদনের সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবে। এ সাতদিন অভিযুক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
গত ৫ জুলাই রাতে কুবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থী বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। এ সংক্রান্ত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ভুক্তভোগী এবং তার সহপাঠীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নৃবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে রাখা, ধূমপান করার জন্য চাপ দেয়া এবং সিনিয়র আপুকে প্রপোজ করার জন্য চাপর দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া হলে ডেকে নিয়ে মানসিক নির্যাতন এবং রাতের আঁধারে ক্যাম্পাসের দূরবর্তী তালতলা নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীকে মানসিক নির্যাতন করাও অভিযোগও পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ও তার সহপাঠীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী র্যাগিংয়ে অভিযুক্তরা হলেন- মুনতাসীর, ওলিউল্ল্যাহ, তিশা মনি, অরবিন্দু সরকার, রাফি ও হাসান।
অপরদিকে, বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে নিয়ে র্যাগিংয়ের সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হন। পরে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী