বড়পুকুরিয়ার কয়লা বিক্রি করে মুনাফা করছে খনি, কিনে লোকসানে বিদ্যুৎেকন্দ্র
Published: 3rd, December 2025 GMT
আমদানি করা কয়লা কিনতে যেখানে প্রতি টনে গড়ে খরচ পড়ছে ৭৫ ডলার, সেখানে দেশের একমাত্র খনি বড়পুকুরিয়া থেকে উত্তোলিত কয়লার দাম ধরা হয়েছে ১৭৬ ডলার। এই বাড়তি দামে কয়লা বিক্রি করে টানা তিন অর্থবছর বিপুল মুনাফা করেছে সরকারি কয়লা কোম্পানি। সেই মুনাফার অংশও পাচ্ছেন কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। আর এ দাম শোধ করে নিয়মিত লোকসান করছে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র।
মুনাফার উৎস খনি, লোকসানের বোঝা বিদ্যুৎকেন্দ্রে
জ্বালানি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) একটি কোম্পানি বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি। চীনের ঠিকাদারের মাধ্যমে তারা খনি থেকে কয়লা তুলে বিক্রি করে। পাশেই অবস্থিত বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন থাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই কয়লা কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে বড়পুকুরিয়ায় কয়লার দাম প্রতি টনে ১৩০ থেকে বাড়িয়ে ১৭৬ ডলার করা হয়। এরপর কোম্পানির মুনাফা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। প্রতিবছর এই মুনাফার ১০ শতাংশ করে নেন কয়লা কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। বেতন–ভাতার বাইরে বছরে ১০ লাখ টাকা আয় করেন তাঁরা।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে বড়পুকুরিয়ায় কয়লার দাম প্রতি টনে ১৩০ থেকে বাড়িয়ে ১৭৬ ডলার করা হয়। এরপর কোম্পানির মুনাফা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। প্রতিবছর এই মুনাফার ১০ শতাংশ করে নেন কয়লা কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেতন-ভাতার বাইরে বছরে ১০ লাখ টাকা আয় করেন তাঁরা।বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, বড়পুকুরিয়ার কয়লা ব্যবহার করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিইআরসির নির্ধারিত দামে বিক্রি করে পিডিবি। এতে টানা তিন অর্থবছরে বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র আরও বলেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পাশে থাকা পিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে এই খনির কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য। কেন্দ্রটির যন্ত্রপাতিও সে হিসেবেই বসানো। এখন চাইলেও বাইরে থেকে কয়লা আমদানি করে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব নয়।
তবে গত বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রের লোকসান কিছুটা কমে এসেছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, গত জানুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়া সূচক দরে কয়লার দাম পরিশোধের সিদ্ধান্ত দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। ওই বৈঠকে পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এতে আপত্তি করেননি। এ হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়ে ৯৯ দশমিক ৫৮ ডলার করে পরিশোধ করা হয়েছে। এতে লোকসান কমেছে। যদিও ১৭৬ ডলার দাম ধরে পরিশোধ করা হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঘাটতি হতো ১ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা।
বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর মকর ত কয়ল র দ ম বড়প ক র য় র কর ম উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত, চীন, রাশিয়া ও জাপান চার মাসে ঋণের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয়নি ভারত, চীন, জাপান ও রাশিয়া। এর মানে হলো, গত চার মাসে এই চারটি দেশের অর্থে কোনো প্রকল্প নেওয়া চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই চারটি দেশ নতুন করে প্রতিশ্রুতি না দিলেও আগে নেওয়া ঋণের অর্থ ছাড় অব্যাহত রেখেছে।
এ ছাড়া এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকও (এআইআইবি) ঋণের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
আজ রোববার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জুলাই-অক্টোবর মাসের বিদেশি ঋণ পরিস্থিতির হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের ৪ মাসে সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ১২১ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫৮ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে। আর বিশ্বব্যাংকের কাছে সোয়া এক কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। অন্যান্য দাতা সংস্থা ও দেশ এই চার মাসে সাড়ে ৬১ কোটি ডলার দেবে বলে জানিয়েছে।
গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সাড়ে ২৫ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল যা এবারের চেয়ে প্রায় ১০০ কোটি ডলার কম।
কারা কত দিলচলতি অর্থবছরের চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সবচেয়ে বেশি ঋণ ছাড় করেছে রাশিয়া। দেশটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ৪০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে। এরপরে আছে বিশ্বব্যাংক। এই সংস্থা দিয়েছে ৪০ কোটি ৫২ লাখ ডলার। আর এডিবি দিয়েছে প্রায় ২৫ কোটি ডলার। চীন ও ভারত ছাড় করেছে যথাক্রমে ১৯ কোটি ডলার ও ৮ কোটি ডলার। জাপান দিয়েছে ৮ কোটি ডলার।
ছাড় ১৬৬ কোটি ডলার, শোধ ১৮৫ কোটি ডলারইআরডির প্রতিবেদন অনুসারে, গত চার মাসে সব মিলিয়ে ১৬৬ কোটি ডলার ছাড় করেছে দাতা সংস্থা ও দেশগুলো। অন্যদিকে আগের নেওয়ার ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে খরচ হয়েছে ১৫৮ কোটি ডলার। এর মধ্যে ১০২ কোটি ডলার আসল ও সুদ ৫৬ কোটি ডলার। দিন দিন ঋণ পরিশোধের পাল্লা ভারী হচ্ছে।