রাজধানীর লালবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে নজরুল ইসলাম (৪৩) নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত নজরুল ইসলামের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে লালবাগ থানা–পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে নজরুলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নজরুল পুরান ঢাকার ইমামবাগে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শাখায় চাকরি করতেন। লালবাগের জমজম টাওয়ারের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি খুলনার আড়ংঘাটা ইউনিয়নের তেলিগাতী গ্রামে।

লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

হানিফ মুন্সি আজ শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, লালবাগের জমজম টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্নের পাশাপাশি শরীরের কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবারের কেউ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহত নজরুলের ভাই নুরুল ইসলাম জানান, নজরুল ইসলাম তাঁর স্ত্রী ফাহিমা শারমিন, দুই সন্তান, মা ও শাশুড়িকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন। তাঁর অভিযোগ, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

তবে এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসিম উদ্দিন আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেই আত্মহত্যা করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক কর মকর ত র ল ইসল ম উদ ধ র নজর ল মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব

অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্‌যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।

নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।

আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।

অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।

লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।

সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।

শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব