জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বসিত খালেদা জিয়া: বদিউল আলম মজুমদার
Published: 16th, October 2025 GMT
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘অত্যন্ত আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তাঁরা দুজন আজ বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার হাতে আগামীকালের জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্যও আলাদা আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে, যা চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরে বদিউল আলম মজুমদার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে আমরা এসেছি আগামীকাল যে “জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫” স্বাক্ষরিত হবে, সেই অনুষ্ঠানের দাওয়াত পৌঁছে দিতে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সালাম পৌঁছে দিয়েছি এবং আমরা সবাই ওনার আরোগ্য কামনা করি, তিনি যেন দ্রুতই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তিনিও অধ্যাপক ইউনূসকে সালাম জানিয়েছেন এবং আমাদের অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করেছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা যেটা দেখেছি এবং তিনি যতটুকু বলেছেন, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন এবং তিনি এটাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এটা বাংলাদেশের জন্য একটা নতুন মাইলফলক এবং বাংলাদেশের জন্য একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করার ব্যাপারে এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। খালেদা জিয়া অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন, সনদ স্বাক্ষরের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, আমার শরীর ভালো থাকলে আমি অবশ্যই সেখানে সশরীরে যেতাম। কারণ, এ রকম একটা ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত হতে পারাটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। যেহেতু তিনি হাসপাতালে, তাঁর পক্ষে হয়তো সম্ভব হবে না যাওয়া। তিনি এটার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি তাঁর যে সমর্থন এবং তাঁর যে দোয়া, তিনি সেটা আমাদের কাছে পুনঃপ্রকাশ করেছেন।’
মনির হায়দার জানান, খালেদা জিয়া বলেছেন এই সংস্কার প্রচেষ্টার সঙ্গে সর্বাত্মকভাবে তিনি এবং তাঁর দল আছে।
কোনো রাজনৈতিক দল সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে না গেলে এ আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মনির হায়দার বলেন, ‘প্রথম কথা হলো আমরা কোনো কিছু নেগেটিভ ভাবতে চাই না এবং ভাবার সে রকম কোনো অবকাশও আমরা দেখি না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হবেন এবং স্বাক্ষর করবেন। এটাই আমাদের প্রত্যাশা এবং আমাদের বিশ্বাস।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন ষ ঠ ন র উপস থ ত র বল ন আম দ র আমন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মিরপুরে আগুনের ঘটনায় শ্রমিকেরা ‘সেফ এক্সিট’ পাননি
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হওয়ার এক দিন পরও পুলিশ এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বুধবার রাতে নিহত পোশাকশ্রমিক ছানোয়ার হোসেনের ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে আলম রাসায়নিকের গুদামের মালিক শাহ আলমসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে রূপনগর থানায় মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এজাহারভুক্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ‘আলম কেমিক্যাল গোডাউন’ নামের ওই রাসায়নিকের গুদামের ব্যবস্থাপক আকরাম, এভারগ্রিন কালার প্রিন্ট ফ্যাক্টরির মালিক, ব্যবস্থাপক, এনআরএস-ওয়াস ফ্যাক্টরির মালিক, এনআরএস-ওয়াস ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপক, শাহ আলী ওয়াস ফ্যাক্টরি মালিক, শাহজালী ওয়াস ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপক। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রূপনগর থানায় হওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়, শাহ আলম আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য শিয়ালবাড়ি আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অনুমোদনহীন ভবনে দাহ্য পদার্থ মজুত করেন। গত মঙ্গলবার এই গুদামে আগুন লাগলে তা দ্রুত আশপাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পাশের ভবনে থাকা এভারগ্রিন কালার প্রিন্ট ফ্যাক্টরি, এনআরএস ওয়াস ফ্যাক্টরি ও শাহ আলী ওয়াস ফ্যাক্টরিতেও আগুন লাগে। আগুনের ভয়ে এসব কারখানার শ্রমিকেরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করেন।
শ্রমিকেরা ভবনগুলো থেকে নামার কোনো সেফ এক্সিট পাননি। আবার কয়েকটি ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগানো ছিল। শ্রমিকেরা প্রাণ বাঁচাতে ভবনের ছাদে গিয়েও বের হতে পারেননি। সেখানেও তালা লাগানো ছিল। মামলার আসামিরা আবাসিক এলাকার ভবনগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা মাথায় না রেখে কারখানা পরিচালনা করে আসছিলেন। ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ–ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এতে আগুনে পুড়ে ১৬ জন শ্রমিক নিহত হন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কারখানার যন্ত্রাংশ, কাঁচামালসহ বিভিন্ন রাসায়নিক এবং ঘটনাস্থলের পাশে থাকা ৩টি মোটরসাইকেল, ১৫টি গ্যাস সিলিন্ডার, রাস্তায় থাকা পিকআপের সামনের অংশসহ ২টি রিকশা পুড়ে যাওয়ায় প্রাথমিকভাবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
১৬ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্নশিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে নিহত ১৬ জনের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। তাঁদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুখলেছুর রহমান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার ছয় মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তাঁরা হলেন মাহিরা আক্তার (১৪), নার্গিস আক্তার (১৮), নুরে আলম (২৩), সানোয়ার হোসেন (২২), আবদুল্লাহ আল-মামুন (৩৯) ও রবিউল ইসলাম রবিন (১৯)।
বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়া ১০ মরদেহের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন মুনা আক্তার সামিরা (১৪), ফারজানা আক্তার (১৫) ও মুক্তা আক্তার (৩০)। বাকি এক নারী ও ছয় পুরুষের পরিচয় পাওয়া যায়নি।