দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কানাগাড়ি বাজারে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহাদুল ইসলাম (৫০) ঘোড়াঘাট উপজেলার ১ নম্বর বুলাকিপুর ইউনিয়নের শালিকাদহ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিএনপির ওই ইউনিয়নের সভাপতি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সকালে ব্যবসায়িক কাজে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে কানাগাড়ি বাজারের সরকারি খাদ্যগুদামে যাচ্ছিলেন শাহাদুল ইসলাম। বাজারের উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে খাদ্যগুদামে পৌঁছাতে তিনি দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন।

এ সময় গোবিন্দগঞ্জ থেকে দিনাজপুরগামী কাভার্ড ভ্যানটি শাহাদুলের মোটরসাইকেলকে জোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কায় তিনি ছিটকে পড়ে যান এবং কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, কানাগাড়ি বাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় শাহাদুল ইসলাম নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হলেও ঘটনার পর চালক পালিয়ে গেছেন। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের ভিডিওটি সন্দ্বীপের

মঞ্চে বসে ‘পাকিস্তান পাকিস্তান, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান ধরছেন এক বক্তা। সমবেত জনতা সেই স্লোগানে কণ্ঠ মেলাচ্ছে, এমন একটি ভিডিও আজ সোমবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের একটি অনুষ্ঠানে ধারণ করা বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত কোরআন তিলাওয়াত সম্মেলনের এক বক্তা এমন স্লোগান দেন। উপস্থিত দর্শকদের একজন সেটির ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন।

ভাইরাল হওয়া ২০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, মঞ্চে বসে এক বক্তা দুই হাত ওপরে তুলে স্লোগান ধরেছেন, ‘পাকিস্তান পাকিস্তান’, এরপর সামনে উপস্থিত দর্শকেরা সমস্বরে বলছেন, ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’। বক্তা আবার বলছেন, ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’। সমবেত ব্যক্তিরা তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলছেন, ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।’ এরপর বক্তা স্লোগান ধরেন ‘নারায়ে তাকবির’।

কোরআন তিলাওয়াত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাইটভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা নুরনবি রুমি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গতকাল মাইটভাঙ্গার সাউথ সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে এই স্লোগান দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। সম্মেলনটি ছিল কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতার। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নেন। পাকিস্তান থেকে আগত এক ইসলামি বক্তা মঞ্চে আসার পর সঞ্চালক এমন স্লোগান ধরেন।

সম্মেলনে উপস্থিত আরও এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেছেন, মূলত ইরান, মিসর, ফিলিপাইন ও পাকিস্তানের প্রতিযোগীরা সম্মেলনে অংশ নেন। যখন যে দেশের প্রতিযোগী মঞ্চে এসেছে, সেই দেশের নামে সঞ্চালক স্লোগান ধরেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একই অনুষ্ঠানের আরেকটি ভিডিওতে এর সত্যতা মেলে। সেখানে দেখা যায়, মিসরের বক্তা মঞ্চে ওঠার পর ‘মিসর জিন্দাবাদ’ স্লোগানে তাঁকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।

ভাইরাল ভিডিওটির বিষয়ে জানতে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সাওতুল কোরআন ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাফেজ তাওহিদের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সন্দ্বীপের মুক্তিযোদ্ধারা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোলায়মান বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘“পাকিস্তান জিন্দাবাদ” স্লোগান দেওয়া ধৃষ্টতা। এর নিন্দা জানাই। কেবল নিন্দা নয়, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি জানিয়ে দিতে চাই, এমন স্লোগান আমরা সহ্য করব না।’

জানতে চাইলে সন্দ্বীপের নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিডিওটি দেখিনি, কেউ আমার নজরেও আনেনি। যদি এমনটি হয়, তা দুঃখজনক। আমি বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করব।’

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘এমন বিষয় আমার জানা নেই। কেউ যদি এমন স্লোগান দিয়ে থাকেন, তাহলে আমরা খতিয়ে দেখব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ