এক ব্যক্তিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘ধমক দেওয়ার’ ১১ সেকেন্ডের একটি ভাইরাল ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করার পর পদ হারিয়েছেন ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের এক নেতা। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের তথ্য জানিয়েছে।

পদ হারানো ওই নেতার নাম খাইরুল ইসলাম ওরফে রোমান (৩২)। তিনি ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ভিপি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। খায়রুল জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম রোমানকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম (রাকিব) ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন (নাছির) আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের খাইরুলের সঙ্গে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

এ বিষয়ে খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মহাসচিব এক ব্যক্তিকে ধমক দেন। আজ (রোববার) দুপুরের দিকে আমি ওই ভিডিওটি আমার ফেসবুকে শেয়ার করেছিলাম। এটাই আমার অপরাধ।’

খাইরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘রাজনীতিতে সহনশীলতা–পরমত সহিষ্ণুতার কোনো বিকল্প নেই। ওই ব্যক্তিও (যাঁকে ধমক দেওয়া হয়েছে) তো আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। সেই ব্যক্তি বা কর্মীকে ধমক দেওয়া আমাদের দলের ইমেজ ক্ষুণ্ন করে। তাঁদের ভোটেই তো আমরা নির্বাচিত হব। এ জন্য তাঁদের প্রতি আমাদের সহনশীল থাকা উচিত।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

রুই ও ভেটকি চাষে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাকৃবিতে গবেষণা শু

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ মিঠাপানি ও সামুদ্রিক মাছের জন্য জলবায়ু-সহনশীল মৎস্য চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাড়তি তাপমাত্রা, লবণাক্ততা ও চরম আবহাওয়ার প্রভাব মোকাবিলা করে অভিযোজিত, টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক মৎস্য চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন। 

আরো পড়ুন:

বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়েছে ২১ কেজির পোয়া, দাম উঠেছে লাখ টাকা

খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে রেকর্ড বৃষ্টি, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ইউজিসি ও বিশ্বব্যাংক সমর্থিত হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং (হিট) প্রকল্পের অর্থায়নে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। 

কর্মশালায় প্রকল্পের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আল ইমরান। তিনি জানান, এটি ৩ বছর মেয়াদী একটি গবেষণা প্রকল্প। এতে চারটি প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- রুই মাছের খাদ্যে উপকারী মাইক্রোব, মাইক্রোঅ্যালজি, ভিটামিন–ই ও সেলেনিয়াম সংযোজন করে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার ক্ষতিকর প্রভাব কমানো; রুই মাছের তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা সহনশীলতা মূল্যায়ন করে উপকূলীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনা যাচাই; ভেটকি (সি-বাস) মাছ চাষের উপযোগী প্রযুক্তি তৈরি করে দেশব্যাপী বাণিজ্যিকভাবে চাষ সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি এবং রুই ও ভেটকি মাছের জলবায়ু সহনশীল চাষাবাদ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

কর্মশালায় ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. কাইজার আহমেদের সুমনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সারদার, উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক ও ইউজিসি-এটিএফ সেক্রেটারিয়েটের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দিন ভূঁঞা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড সালেহা খান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “ইউজিসি ও বিশ্বব্যাংক সমর্থিত হিটের নয়টি প্রকল্পের মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ স্কোরারদের একজন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে—এটি বাকৃবির জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। সহকর্মীদের কঠোর পরিশ্রম, দক্ষতা ও নিষ্ঠার ফলস্বরূপ এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। স্বাদুপানির রুই এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় ভেটকি মাছকে অন্তর্ভুক্ত করে জলবায়ু সহনশীল মাছচাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন একটি সত্যিই বড় উদ্যোগ।”

তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাছ চাষ পদ্ধতিতে ব্যাপক উন্নয়ন আনা জরুরি। কোন প্রযুক্তি ও কোন ধরনের ফিশ-কালচার মডেল ভবিষ্যতের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে—তা এই প্রকল্পে সুস্পষ্টভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমি চাই, প্রকল্পে স্নাতক পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হোক, যাতে তারা হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে এবং গবেষণায় আগ্রহী হয়ে ওঠে।”

এ প্রকল্পের প্রধান হিসেবে আছেন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান। তার সহকারী হিসেবে আছেন ড. মো. আল ইমরান এবং সদস্য হিসেবে আছেন অধ্যাপক ড. সালেহা খান।

প্রকল্পের প্রধান পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহজাহান বলেন, “বর্তমানে স্বাদুপানির মাছচাষ—বিশেষ করে তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস—জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লাভজনকতা হারাচ্ছে। যেখানে প্রতি কেজি মাছ উৎপাদনে ১০০ টাকা খরচ হয়, কৃষকরা নামমাত্র মুনাফা পান। তাই বিকল্প হিসেবে আমরা সামুদ্রিক ভেটকি মাছকে রিসার্কুলেটরি অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেমে (আরএএস) অভিযোজিত করার কাজ করছি।”

তিনি আরো বলেন, “যদি ভেটকি মাছ সফলভাবে আরএএস প্রযুক্তিতে উৎপাদন সম্ভব হয়, তবে প্রতি কেজি উৎপাদন খরচ ২০০ টাকা হলেও বাজারদর ৬০০ টাকা। ফলে কৃষকরা কেজিপ্রতি প্রায় ৪০০ টাকা লাভ পাবে, যা বর্তমান স্বাদুপানির মাছচাষের তুলনায় বহুগুণ বেশি লাভজনক। ইতোমধ্যে ছোট স্কেলে মডেলটি সফল হয়েছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ‘খাঁচায় চাষ’ ও আরএএস সিস্টেমে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চলছে।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের কৃষিতে যেভাবে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে
  • রুই ও ভেটকি চাষে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাকৃবিতে গবেষণা শু