ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
Published: 17th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) এলাকায় আগুন লাগা সাততলা ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি জানান।
তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফায়ার সেফটি প্ল্যানের (অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা) আবেদন করা হয়েছে কেবল। তবে নিয়ম অনুযায়ী এখনো পরিদর্শন হয়নি। তাঁর আগেই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে।’
ভবনটিতে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে জানিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ভবনের দুই পাশ দিয়ে আগুন নেভানোর সুযোগ ছিল না। অন্য দুই পাশ থেকে চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ভবনের আশপাশে যে ন্যূনতম জায়গা রাখতে হয়, সেটি দুই দিকে ছিল না।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে সিইপিজেডের একটি সাততলা ভবনে আগুন লাগে। ভবনের সাততলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত। সেখানে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড এবং জিহং মেডিকেল প্রোডাক্টস (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড নামে দুটি কারখানার গুদাম ছিল। অ্যাডামস তোয়ালে, ক্যাপ এবং জিহং মেডিকেল সার্জিক্যাল গাউন তৈরির কারখানা। সাততলার গুদাম থেকে পরে পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর আজ ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২৫টি ইউনিট এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৪টি ইউনিট কাজ করেছে।
ধসে পড়েছে ছাদআগুন লাগার পর শুরুতে ভবনের দক্ষিণ পাশে আগুনের তীব্রতা ছিল বেশি। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে পশ্চিম ও উত্তর পাশেও ছড়িয়ে পড়ে। সাড়ে সাতটার দিকে ভবনের নিচের দিকে ছড়াতে থাকে আগুন। এরপর মুহূর্তেই পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ধসে পড়ে ভবনের কিছু দেয়াল ও ছাদ।
রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় ভবনের একপাশ। এরপরও আগুনের তীব্রতা কমেনি। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি উৎস খুঁজতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। আশপাশের বিভিন্ন কারখানায় অনুরোধ করা হয় রিজার্ভার থেকে পানি দেওয়ার জন্য।
একপর্যায়ে রাতে ভবনটির পাশে থাকা একই প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন আরেকটি তিনতলা ভবনের ছাদেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। উপায় না দেখে আশপাশের ভবনগুলোতে আগে থেকে পানি ছিটাতে থাকে ফায়ার সার্ভিস। রাত সাড়ে নয়টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে আগুনের নিয়ন্ত্রণের আশা দেখা দেয়। তবে বৃষ্টি কিছুটা কমলে আবারও তীব্রতা বাড়ে আগুনের। মুষলধারে বৃষ্টির পরও আগুনের তীব্রতা ছিল বেশি।
আজ সকাল আটটায় সরেজমিন দেখা যায়, ভবনের একপাশে দেয়াল ধসে গেছে। আগুনের তাপে গলে গেছে লোহা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তখনো ভবনে পানি ছিটাতে দেখা যায়। স্থানীয় একটি কারখানার নিরাপত্তাকর্মী আবদুল্লাহ বলেন, সারা রাত আগুন জ্বলেছে। ছাদ ভেঙে পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সকাল সাতটার দিকে আগুনের ভয়াবহতা কিছুটা কমে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। আজ সকালে চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল ম চ আগ ন র ত আগ ন ন স ততল ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত
মুন্সীগঞ্জের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের গুলিতে আরিফ মির (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নিহতের চাচাতো ভাই ইমরান। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
কাটা গলা নিয়ে রিকশাচালিয়ে ৩ কিলোমিটার, হাসপাতালে মৃত্যু
বগুড়ায় অটোরিকশা চালক হত্যায় জড়িত ২ জন গ্রেপ্তার
নিহতের স্ত্রী পারুল বেগম ও এলাকাবাসী জানান, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিক মল্লিক ও মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ওহিদ মোল্লার অনুসারী শাহ কামাল গ্রুপের সঙ্গে ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সহ-সভাপতি আওলাদ হোসেনের অনুসারী নিহত আরিফ গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আজ সকালে আরিফ ও ইমরান বাড়ির সামনে গেলে শাহ কামালের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি তাদের ওপর হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরিফ ও ইমরানকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বিরোধ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। যে ঘটনাটি ঘটেছে তা তাদের নিজেদের বিষয়। এর দায়ভার বিএনপি নেবে না।”
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রুহুল আমিন জানান, দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনেন স্থানীয়রা। তাদের মধ্যে আরিফ হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। আহত ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা/রতন/মাসুদ