অধ্যাপক ইউনূসের রোম সফর নিয়ে নানা আলোচনার কোনটি কতটুকু ঠিক
Published: 18th, October 2025 GMT
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের (ডব্লিউএফএফ) এক ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে অংশ নিতে ইতালি সফর করে এলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ইভেন্টটি ছিল রোমে, তাই সফরও ছিল এই শহরে। ১২ অক্টোবর তিনি ইতালি রওনা হন, দুই দিনের সফর শেষ করে গত বুধবার তিনি ফিরেও এসেছেন।
অধ্যাপক ইউনূসের ঘন ঘন বিদেশ সফর নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ইতালি যাওয়ার পরপরই তাঁর এই সফর নিয়ে নানা খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শুরু হয় নানা আলোচনা। এর কোনো কোনোটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় নানা বিভ্রান্তিও তৈরি হয়। দেখা যাক, এই খবরগুলোর কোনটি কতটুকু ঠিক।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক কি নির্ধারিত ছিলরোমে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি বলে খবর ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
আসলে কি এমন কোনো বৈঠক হওয়ার কথা ছিল? এ খবরের উৎস খুঁজতে গিয়ে গণমাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এ প্রতিবেদনগুলো তথ্যের উৎস হিসেবে দেখিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসকে।
প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, সফরসূচি অনুযায়ী অধ্যাপক ইউনূস ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের মূল অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
দাবি করা সংবাদের লিংক: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
সংবাদটি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসে যে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন না।
দাবি করা লিংক: এখানে, এখানে, এখানে
বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিজের ফেসবুক পেজে একটি ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘কিছু সংবাদপত্র এবং রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বিএসএস বলেছে যে প্রধান উপদেষ্টা রোম সফরের সময় ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বিএসএস বা কোনো সংবাদপত্রই এই সফর নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেনি।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আমি বুধবার (৮ অক্টোবর) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এবং পরে দুটি টিভি স্টেশনে বলেছিলাম যে প্রধান উপদেষ্টা রোমে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম সভায় অংশ নিতে যাচ্ছেন। আমি বলেছিলাম, সফরকালে তিনি আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন। এই সংবাদ সম্মেলনগুলোয় আমি কোথাও বলিনি যে প্রধান উপদেষ্টা ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। আসলে এমন কোনো বৈঠক নির্ধারিতই ছিল না। আমি আশা করি, সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের প্রতিবেদনগুলো সংশোধন করবে।’
প্রেস সচিবের সংবাদ ব্রিফিংয়ের লিংক—ইউটিউবে, ফেসবুকে
প্রেস সচিবের এ পোস্টের পর দেখা যায়, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) তাদের প্রকাশিত সংবাদ সংশোধন করেছে এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের অংশটি সরিয়ে নিয়েছে। তবে কিছু সংবাদমাধ্যম এখনো প্রথম সংস্করণের প্রতিবেদন, অর্থাৎ ‘ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন’—এই তথ্যসহ সংবাদটি রেখেছে।
লিংক—এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
সংবাদ থেকে তথ্য সরিয়ে নিলেও তার কোনো ব্যাখ্যা বাসস দেয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কথায় স্পষ্ট, জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের নির্ধারিত কোনো বৈঠক ছিল না।
অধ্যাপক ইউনূস কি গুরুত্ব কম পেয়েছেনপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রাজধানী রোমে পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ টি এম রকিবুল হক। এ ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০২৩ সালের রোম সফরের তুলনা।
বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়, ‘একই প্রোগ্রামে’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালে রোমে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি নিজে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন।
দাবি করা লিংক: এখানে, এখানে, এখানে
তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালিতে পৌঁছালে তাঁকে স্বাগত জানান তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো.
লিংক: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
এ ছাড়া ইতালির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২৫ জুলাই ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি রোমের পালাজো চিজিতে (ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সরকারি কার্যালয়) শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান।
লিংক: এখানে
অর্থাৎ বিমানবন্দরে নয়, বরং ইতালির সরকারপ্রধান তাঁর দপ্তরে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন।
লিংক: এখানে
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো তথ্যে স্পষ্ট, অধ্যাপক ইউনূসের ইতালি সফরটি দ্বিপক্ষীয় সফর ছিল না। জাতিসংঘের সংস্থা এফএওর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এক ফোরামে আমন্ত্রিত হয়ে রোম যান তিনি এবং মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন; পাশাপাশি একাধিক বৈঠকেও অংশ নেন।
লিংক: এখানে
অন্যদিকে শেখ হাসিনা তাঁর ২০২৩ সালের সফরে গিয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে ইউএনএফএসএস+২ সম্মেলনে যোগ দিতে। তবে ওই সফর দ্বিপক্ষীয় সফরে রূপ পেয়েছিল। তাই তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছিলেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে দুটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়।
লিংক: এখানে
আবার শেখ হাসিনা যে অনুষ্ঠানে অংশ নেন, তার আয়োজক ছিল জাতিসংঘ এবং অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন মূলত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান।
লিংক: এখানে
অন্যদিকে অধ্যাপক ইউনূস আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে অংশ নেন জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে। এতে অংশ নেন বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও তরুণ নেতারা।
লিংক: এখানে
ফলে শেখ হাসিনা ও অধ্যাপক ইউনূস একই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি এবং তাঁদের সফরের মাত্রাও ছিল ভিন্ন।
রোমের মেয়র কি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন
রোম সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রোমের মেয়র রবের্তো গুয়ালতিরির বৈঠক হয়। তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক তৈরি হয় এই বলে যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস প্রটোকল ভেঙে মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাঁর অফিসে।
প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ‘Chief Adviser GOB’-এ একটি পোস্টে লেখা হয়, ‘Mayor of Rome Roberto Gualtieri meets Chief Adviser Professor Muhammad Yunus in Rome on Monday.’
এর বাংলা অনুবাদ দাঁড়ায়, ‘রোমের মেয়র রবের্তো গুয়ালতিরি সোমবার রোমে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।’
লিংক: এখানে
এ বাক্য দেখে অনেকেই ধারণা করেন, রোমের মেয়র প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, অর্থাৎ সাক্ষাৎটি মেয়রের উদ্যোগে হয়েছিল।
লিংক: এখানে
বাসসের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোমে অবস্থানকালে ১৩ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোমের মেয়র রবের্তো গুয়ালতিরির সঙ্গে রোম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।
লিংক: এখানে
অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা মেয়রের অফিসে গিয়ে দেখা করেন—মেয়র তাঁর কাছে আসেননি।
এ সাক্ষাতের একাধিক ছবি অনলাইনে পাওয়া গেছে, যেখানে দেখা যায়, মেয়র নিজ কার্যালয়ের প্রধান আসনে বসে আছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা পাশের সোফায় বসে আলোচনা করছেন।
প্রসঙ্গত, ইংরেজি বাক্য ‘Mayor of Rome meets Chief Adviser’ ব্যাকরণগতভাবে নিরপেক্ষ হলেও এতে কে কার কাছে গিয়েছেন, তা পরিষ্কার নয়।
তবে সরকারি সংস্থার প্রতিবেদন ও ছবির ভিত্তিতে স্পষ্ট, প্রধান উপদেষ্টাই মেয়রের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন, মেয়র তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেননি।
‘ইতালিতে আওয়ামী লীগপন্থীদের বিক্ষোভে অধ্যাপক ইউনূস হতবাক’—দাবিটি কি সত্য
প্রধান উপদেষ্টা ইতালি থাকাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘ইতালিতে আওয়ামী লীগপন্থী সমর্থকদের বিক্ষোভের পর অধ্যাপক ইউনূস হতবাক।’
ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যাপক ইউনূস বলছেন, ‘আজকে হতবাক, এ রকম একটা কাণ্ড ঘটতে পারে, আমরা কেউ কল্পনা করিনি।’
এ বক্তব্যের ভিত্তিতে অনেক ধারণা করেন, এটি রোমে সংঘটিত কোনো সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতিক্রিয়া।
লিংক: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি সাম্প্রতিক নয় এবং ইতালির কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিতও নয়। ভিডিওটির মূল উৎস হলো মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত জুলাই মাসে দেওয়া একটি শোকবার্তা, যেখানে অধ্যাকপ ইউনূস বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন।
লিংক: এখানে, এখানে, এখানে
মূল ভিডিওতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমার মতো সারা দেশের মানুষ আজ হতবাক। এ রকম একটা কাণ্ড ঘটতে পারে, আমরা কেউ কল্পনা করিনি। কারও ধারণার মধ্যে ছিল না। কিন্তু এ অবিশ্বাস্য জিনিস আমাদের হঠাৎ করে গ্রহণ করতে হলো।’
অর্থাৎ ‘হতবাক’ শব্দটি অধ্যাপক ইউনূস কোনো রাজনৈতিক ঘটনায় নয়, বরং মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার শোকবার্তায় ব্যবহার করেছিলেন।
‘আমি ১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াই, ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছি’—অধ্যাপক ইউনূস কি বলেছিলেন
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া এক বক্তব্যকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, ‘অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, আমি ১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াই, ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছি।’
লিংক: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
বাসসের তথ্য অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস রোমে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বৈশ্বিক খাদ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনে ছয় দফা প্রস্তাব দেন।
বাসস তার বক্তব্যে দিয়েছে এভাবে, ‘তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা ১৭ কোটির বেশি মানুষকে খাওয়াই, পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সহায়তা দেই।’
লিংক: এখানে, এখানে
বাংলাদেশের দুটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি ও যমুনা তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের ভিডিওটি আপলোড করে। সেখানে দেখা যায়, প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘Bangladesh is a small country. Half the size of Italy. But we are feeding 170 million people, as well as sheltering 1.3 million Rohingya refugees who have fled violence in Myanmar.’
লিংক: এখানে
লিংক: এখানে
প্রধান উপদেষ্টার পুরো বক্তব্যটি নিউইয়র্ক মর্নিং সংবাদমাধ্যমে ‘Bangladesh is feeding 170 million people, sheltering 1.3 million’ শিরোনামে প্রতিবেদন আকারেও আসে।
লিংক: এখানে
অধ্যাপক ইউনূস বক্তব্যে ‘we’ (আমরা) শব্দটি ব্যবহার করেছেন, তিনি ‘I’ (আমি) বলেননি। অর্থাৎ ভাষান্তরের ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ষ ৎ কর ২০২৩ স ল প রক শ ত ফ সব ক প আমন ত র ইউন স ব সফর ন য় র ম সফর অন য য় অর থ ৎ করব ন সরক র হতব ক
এছাড়াও পড়ুন:
মাদাগাস্কারে তরুণদের গণ-অভ্যুত্থানের সুবিধভোগী কি তাহলে সেনাবাহিনী
‘এটি কোনো অভ্যুত্থান নয়।’ কথাটি মাদাগাস্কারের সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনার। তিনি ১২ অক্টোবর মাদাগাস্কারে ‘অভ্যুত্থান’ ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছেন। সিএপিএসএটি নামে একটি বিশেষ সামরিক ইউনিটের কর্নেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা ১৪ অক্টোবর নিজেকে মাদাগাস্কের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেছেন, মালাগাসি জনগণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। মালাগাছি বলতে মাদাগাস্কারের নাগরিকদের বোঝানো হয়।
কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা গতকাল শুক্রবার মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
কয়েক সপ্তাহ ধরে মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোতে তরুণেরা প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। দেশটিতে বিদ্যুৎ ও পানির সংকটের কারণে প্রথমে সড়কে নেমেছিলেন তরুণেরা। ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া বিক্ষোভ সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে দমন করা হয়।
দেশটিতে বিক্ষোভ দ্রুত রূপ নেয় দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, মৌলিক সেবার অভাবসহ বৃহত্তর অসন্তোষের এক গণ–অভ্যুত্থানে। এ বিক্ষোভকে নেপাল, মরক্কোসহ অন্যান্য দেশে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্ষোভের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গত শনিবার সমর্থন দেয় সিএপিএসএটি নামের সেনা ইউনিট। পরদিন এই ইউনিটের পক্ষ থেকে মাদাগাস্কারের পুরো সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
রাজধানী আন্তানানারিভোর ১৩ মে স্কয়ারে হাজারো বিক্ষোভকারী নেচেগেয়ে স্লোগান দিতে দিতে রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে মিছিল করেন। দ্বৈত নাগরিকত্ব ও সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সমর্থন পাওয়ায় মাদাগাস্কারকে ‘ফরাসি দালাল’ বলে আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা নানা ব্যানারও প্রদর্শন করেন। অনেক বিক্ষোভকারীর হাতে ছিল মাদাগাস্কারের জাতীয় পতাকা ছিল।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সিএপিএসএটির কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা মঞ্চে উঠে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনারা কি সামরিক হস্তক্ষেপ মেনে নিতে প্রস্তুত?’ এরপরই জনতা উল্লাসধ্বনিতে ফেটে পড়ে।
কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা