রাতের সমস্ত ফিসফাস
গোধূলি রঙের শার্ট পরে নামছে আঁধার
চারপাশ ঘুমের আবহে জড়ানো, আর
ভাসমান পন্টুনে রসিক জোনাকিরা
একে অপরের স্বাস্থ্যগত ত্রাণ নিয়ে ব্যস্ত—
চায়ের আড্ডায় মধ্যরাত ঘুরে যায়
রাতের সমস্ত ফিসফাস একা হয়ে গেলে
তোমার সিঁদুর নিয়ে অনন্ত ভোর কেঁপে ওঠে—
ওদিকে রোদ ব্যাকরণমতেই ডুবে যাচ্ছে
ডাবগাছের রূপসী মেজাজে
উদ্বাস্তু শামুকের উড়ু উড়ু মন বেয়ে কে আসে দরজায়
কোনোই অপেক্ষা নেই, টোকা পড়ে দীর্ঘ আঙুলের—
শরীরের গোপন পাতায় টুকে রাখা রোদগুলো
পালানোর ছায়া ফেলে সরে যায় দূরে, আর আমি
নিজেরই কফিন কাঁধ থেকে নামিয়ে উঠোনে
মরণের চোখে-মুখে এঁকে ফেলি শখের ময়ূর
পথের অন্ধকারে কয়েকটি অন্ধ-খোড়া পথ
গন্তব্যের আঁকাবাঁকা ব্যাকরণ মেনে চলে যায়,
জানি না সে মায়াবী ময়ূর কোন দূর ঘাটের কিনারে
আঘাটার স্মৃতি নিয়ে বসে আছে একা—
তুমিও কি তোমারই কফিন টেনে টেনে সারা দিন
সূর্যাস্তের নরম তুলিতে
কাদায় আঁধার এঁকে, বলে যাচ্ছ কানে কানে—
আরেকটু কালো হও, আরেকটু নৈঃশব্দ্য মেখে
এসো হে তরঙ্গশ্যাম, এসো হে বিভ্রাট
খুব মজার একটা গ্রাম আছে, যা খুব সামান্য
কিছু কবি ছাড়া, আর কেউ দেখেনি।
সেই গ্রামের মানুষেরা অন্ধ হলেও, তারা হাতি পোষে।
হাতি নিয়ে রাতের বেলা তারা পাহাড়ে ওঠে
ওইখানে ওরা আলো জ্বালে, আর হাতিরা
পাহাড়ি গাছ–পাতা খেয়ে যখন আলোর সামনে এসে দাঁড়ায়,
অন্ধ মানুষেরা দৃষ্টি ফিরে পায়,
তারা দেখে—হাতিগুলোর ছায়ায় তাদের টানাপোড়েনের সংসার
এসে বসে আছে ছেঁড়া কাপড়ে—
হাতিরা তখন মা হয়ে ওঠে, আর ওই গ্রামের
মানুষেরা কবির জ্বলন্ত আঙুল দিয়ে সরিয়ে দেয়
আধপোড়া সংসারের পুঁজ-ক্ষত, সাদাকালো ছাই—
কেবল দু-একজন কবিই চেনে হাতিদের প্রশ্রয়ে জেগে থাকা
এই অন্ধ মানুষের গ্রাম
সেই রাতে বেজেছিল আলোর বেহালা
কটি বিষ তির উড়েছে আকাশে—
একটি নদীর খোলসে ঢুকে যাওয়া মানুষেরা
বুক দিয়ে টেনে নিচ্ছে
আকালে অধরা কিছু পালের নৌকো
গাংচিলের সাধনাপিঞ্জর—যেখানে লেগে আছে
ঝাউপাতার গতর এলানো পলিমার—
আমাদের পাড়ায় তখন লংমার্চ
মেয়েরা খোঁপায় গুঁজেছে আকাশ
গোপনে প্রেম ঝরছে আকাশের
ফুটো থেকে, আমরা ভিজে ভিজে
নদীর দিকে হাঁটছি, নদীর ওপারে
কয়েকটি ধূসর মাছ বিবর্ণ আঁশের সুরে
ডেকে যাচ্ছে স্রোতের ভাষায়
মৃত্যু ও দ্রোহ যেখানে নিবিড়, সেইখানে পড়ে আছে দাঁড়—
সারস্বত অন্ধকারে ওই যে আলোঘর, ওই যে দেহের কিনারে ধস
ওই যে কুয়াশার ঘুমের ভেতরে মাংসল বুনো হাঁস
ওই যে শকুনেরা হাড়ের ঝুমঝুমি নিয়ে সাঁঝবেলা.
একদিন শখের বৈঠায় থামেনি বয়স, তাই
দিঘির জলে হারানো ঝড় মাঝেমধ্যে ফিরে আসে সীমানায়।
নৈঃশব্দ্য চয়নে আজ ফিরে যাব রাজার বাগানে
ওই যে রাজা (আমাদের বন্ধু), যার রাজ্য নেই, কী এক ইশারা-ইঙ্গিতে
পশু-পাখি কাঁদায়, মুখস্থ করে গাছের কবিতা, পাতার আজান—
ভিন্ন ভিন্ন মোনাজাত নিয়ে যে যার ঈশ্বরের দিকে হাঁটছে
আর আমি ফুল ও মায়ার গন্ধে অন্ধ হয়ে বসে আছি
রাজার বাগানে কিংবা বিষাদের খাঁচায়...
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অভয়নগরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট কৃষক
যশোরের অভয়নগরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে আবুল কালাম (৫৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে অভয়নগর উপজেলার চেংগুটিয়ায় আলিপুর ব্রিজের কাছে যশোর-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আবুল কালাম অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাপাতলা গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, স্থানীয় আনোয়ার মেম্বারের ভাই কৃষক আবুল কালাম সকালে বাইসাইকেলে করে নওয়াপাড়া বাজারে সবজি বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। আলিপুর ব্রিজের কাছে পৌঁছালে খুলনাগামী একটি ট্রাক তার বাইসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি সড়কে ছিটকে পড়েন এবং ট্রাকটি তাকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে নওয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমান বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ঘাতক ট্রাকটি আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রফিক