জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ২১টি পদে মোট ১৯৪ জন প্রার্থীর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী ১২ জন। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী ১১ জন।

গতকাল রোববার রাতে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সই করা এই খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়।

জকসু নির্বাচনে প্রার্থী হতে মোট ২৬৭ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন। জমা দেন ২১১ জন। ১৭ জনকে বাদ দিয়ে খসড়া তালিকা প্রকাশ হলো।

প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৩ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিষয়ক সম্পাদক পদে ৪ জন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ১৩ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৯ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৬ জন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে ৫ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ৮ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৫ জন, পরিবহন সম্পাদক পদে ৭ জন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে ১৪ জন, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ১০ জন এবং নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী ৬৮ জন।

ভিপি পদের প্রার্থীরা হলেন মাসরুফ আহমেদ, তাওসিন ইসলাম, জীবন চন্দ্র, ইয়াসিন আহমেদ, মাহমুদ হোসেন তানজীদ, রিয়াজুল ইসলাম, রাকিব হাসান, আল ইমরান হোসেন, কিশোয়ার আঞ্জুম সাম্য, গৌরব ভৌমিক, মো.

রাকিব ও চন্দন কুমার দাশ।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ২৬৭ জন, শেষ দিনে ২৩৬১৭ নভেম্বর ২০২৫

জিএস পদের প্রার্থীরা হলেন খন্দকার সালিল আলম, আরিফুজ্জামান টিংকু, উম্মে হানি সেবা, শাহ্ আহমেদ রেজা, ফয়সাল মুরাদ, আবদুল আলিম আরিফ, রাশিদুল ইসলাম, খাদিজাতুল কোবরা, উম্মে মাবুদা, এফ আর এম মেহেদী হাসান শুভ ও ইভান তাহসীভ।

এজিএস পদের প্রার্থীরা হলেন শাহরিয়ার রহমান আবির, শামসুল আলম মারুফ, ফাহিম ফয়সাল, মাসুদ রানা, গৌরাঙ্গ দাস, জহিরুল ইসলাম সোহাগ, শাহিন আলম, রিফাত ইসলাম, নাফিউ উদ্দীন জিসান, তামজিদ ইমাম, বি এম আতিকুল ইসলাম তানজিল, শরিফ হোসেন ও এস এম সরোয়ার হোসেন।

জকসুতে আগামী ২২ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ হবে। একই দিনে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশের কথা রয়েছে।

আরও পড়ুনআইনি প্রক্রিয়ায় আটকে আছে জকসু নির্বাচন১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির অঙ্গীকার খুব পরিষ্কার, স্বাধীন গণমাধ্যম তৈরি করতে চাই: মির্জা ফখরুল

বিএনপি স্বাধীন গণমাধ্যম দেখতে ও তৈরি করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিটমেন্ট খুব পরিষ্কার। আপনারা দেখেছেন যে আমরা ৩১ দফায় খুব পরিষ্কার করেই বলেছি যে আমরা একটা স্বাধীন গণমাধ্যম দেখতে চাই এবং আমরা সেটাকে তৈরি করতে চাই।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ক্ষমতায় গেলে গণমাধ্যম সংস্কারে কমিশন করার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। ইতিমধ্যে সেই কমিশন করা হয়েছে। তবে কমিশনের প্রতিবেদন তৈরি হলেও সেটি নিয়ে পরবর্তীকালে কোনো আলোচনা হয়নি।

বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সরকার পরিচালনার দায়িত্ব যদি জনগণের মাধ্যমে পাই, তাহলে আমরা নিঃসন্দেহে এটাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখব বলে বিশ্বাস করি।’

ফখরুল বলেন, সংস্কার যদি হৃদয়ে ধারণ না করা হয়, মনের মধ্যে না নেওয়া হয়, পরিবর্তন করতে না চাওয়া হয়, তাহলে কতটুকু সংস্কার করা সম্ভব হবে, সেটি জানা নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। চারটি পত্রিকা ছিল যেগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলেছে। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে একটা মুক্ত ও স্বাধীন সংবাদপত্রের ব্যবস্থা করেছেন। পরবর্তীকালে বিএনপি যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসেছে, তখনই গণমাধ্যমকে উন্নত বা উপযোগী করে তোলার জন্য অনেক ব্যবস্থা নিয়েছিল।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকদের অনেকগুলো ইউনিয়ন আছে। আবার দুই দলের দুই ভাগ–তিন ভাগ আছে। তারা নিজেরাই দলীয় হয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো কাউকে পকেটে নিতে চায় না। কিন্তু তারা যদি পকেটে ঢুকে যায়, সেটা বড় সমস্যা।

গত ১৫ বছর অনেক সাংবাদিক নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিকদেরও অঙ্গীকারের প্রয়োজন আছে, তাঁরা সেই জায়গা থেকে নিজেরা বাইরে থাকবেন এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা করবেন।

বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব ইলিয়াস হোসেন। মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।

মত‌বি‌নিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ক‌রেন বি‌জে‌সির নির্বাহী মিলটন আনোয়ার। বি‌জে‌সির ট্রাস্টিদের ম‌ধ্যে আলোচনায় অংশ নেন তালাত মামুন ও ফা‌হিম আহ‌মেদ। অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন।

বিজেসির আট দফা প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে—সম্প্রচারমাধ্যমের জন্য আলাদা আইন প্রণয়ন, একটি স্বাধীন জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠন, টিভি চ্যানেলগুলোকে পে-চ্যানেল ঘোষণা করা ও সম্প্রচারমাধ্যমকে শিল্প ঘোষণা এবং সম্প্রচার সাংবাদিকদের জন্য জবাবদিহিমূলক ‘কোড অব এথিকস’ প্রণয়ন; টিভি লাইসেন্স নীতিমালা ও মালিকানার ধরন নির্ধারণ, পরিচালনা পর্ষদে কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার মতো কাঠামোগত সংস্কার, স্বাধীন অ্যাক্রেডিটেশন কর্তৃপক্ষ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সাংবাদিকতার নীতিমালার প্রণয়ন ইত্যাদি।

গণমাধ্যম কমিশনের সুপারিশ ও সাংবাদিকদের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের অনিশ্চয়তায় পড়ে আছে বলে উদ্বেগও জানিয়েছে বিজেসি।

এই সুপারিশগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরবে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেবে বলে প্রত্যাশা করে বিজেসি।

অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা ছাড়াও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং গণমাধ্যমের উন্নয়নে কাজ করা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ