রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) পাম্প ঘরগুলো থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির হিড়িক পড়েছে। এ অবস্থায় পাম্প এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে ওয়াসা। এরপর রাতেই আরো দুটি পাম্প ঘরে চুরির ঘটনা ঘটেছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডে ওয়াসার পাম্প ঘর রয়েছে ১২৩টি। এসব পাম্পের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে নগরবাসীর জন্য সরবরাহ করা হয়। পাম্পগুলো থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ করেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা। সবশেষ সোমবার দিবাগত রাতে নগরের কাজলা এবং খোজাপুর গোরস্থান সংলগ্ন পাম্প ঘর থেকে তার চুরির ঘটনা ঘটেছে।

রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, আগে বছরে দুয়েকটি পাম্পঘর থেকে এভাবে বৈদ্যুতিক তার চুরি হতো। ইদানিং চুরি হচ্ছে নিয়মিত। কয়েকমাস আগে রাজশাহী শারীরিক শিক্ষা কলেজের পাম্প ঘরে প্রথম তার চুরির ঘটনা ঘটে। এরপর বিসিক পাম্প ঘরে চুরি হয়। এছাড়া গত ১১ অক্টোবর বুধপাড়া বাইপাস পাম্প ঘর, ১৬ অক্টোবর দায়রাপাক মোড়ের পাম্প ঘর ও ১৯ অক্টোবর খলিল সরকারের মোড়ের পাম্প ঘরে তার চুরি হয়।

এ অবস্থায় পাম্প ঘর এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়ে ওয়াসার সচিব সূবর্ণা রানী সাহা সোমবার আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে চিঠি দেন। এ চিঠির সঙ্গে চুরি হওয়া পাম্পগুলোর তালিকা এবং শহরের মোট ১২৩টি পাম্প ঘরেরই ঠিকানা দেওয়া হয়। এরপর রাতেই নগরের কাজলা ও খোজাপুর গোরস্থান সংলগ্ন পাম্পে আবারও তার চুরির ঘটনা ঘটে।

ওয়াসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের জনবল সংকট রয়েছে। তাই রাতে পাম্প ঘরে চালক থাকেন না। এ সুযোগে চোরেরা তার চুরি করছে। চোর কখনও তালা ভেঙে ঢুকছে। আবার পাম্প ঘরের ছাদ ফুটো রয়েছে ভূ-গর্ভস্থ পাইপ কিংবা পাম্প তোলার জন্য। সেখানে স্ল্যাব থাকলেও তা সরিয়ে চোরেরা ঢুকে পড়ছে। এরপর বোর্ড থেকে পাম্প পর্যন্ত থাকা সাবমারসিবল তার ও টেন-আরএম তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে পাম্প বন্ধ হয়ে পানি সরবরাহ থেমে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে ওয়াসা কার্যালয়ে তার চুরির বিষয়টি অবহিত করতে এসেছিলেন খলিল সরকারের মোড়ের পাম্প ঘরের চালক মো.

চাঁদ। 

তিনি জানান, গত রবিবার দিবাগত রাতে তার পাম্প ঘর থেকে তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। নতুন তার না লাগানো পর্যন্ত পাম্প বন্ধ অবস্থায় ছিল।

দুপুরে খোজাপুর গোরস্থান পাম্প ঘরে নতুন তার লাগানোর কাজ করছিলেন বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি জয়নাল আবেদিন। তিনি জানান, প্রায়ই বিভিন্ন পাম্পে তার চুরির ঘটনা ঘটছে। ইদানিং এটা বেড়ে গেছে। দামি এসব তার চুরি করে মাদকাসক্তরা কেজিদরে বিক্রি করছে বলে তার ধারণা।

খোজাপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘রাতে তার চুরির পর থেকেই পাম্প বন্ধ। এখন দুপুর গড়িয়ে গেল। নতুন তার লাগানোর কাজ শেষ হয়নি। পাম্পও চালু হয়নি। তাই এখন আমাদের এলাকায় পানি নেই। এটা তো গোটা এলাকার মানুষের জন্য দুর্ভোগ। চুরি ঠেকাতে পাম্প ঘরে লোক থাকা প্রয়োজন। তা না হলে অরক্ষিত জিনিস এভাবে চুরি হবেই।’’

রাজশাহী ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘‘রাতে পাম্প চলে না। এজন্য অপারেটররা সেখানে থাকে না। আর আমাদের কোনো নৈশপ্রহরীও নেই। তাই রাতে চুরির ঘটনা ঘটছে। এসব চুরির ঘটনায় আমরা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দিচ্ছি। পাশাপাশি ১২৩টি পাম্প ঘরের তালিকাসহ পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছি যেন তারা এসব এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি করেন। এর পাশাপাশি স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে কোনোভাবে পাম্প ঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় কি না তা ভাবছি।’’

আরএমপির মুখপত্র গাজিউর রহমান বলেন, ‘‘পাম্পগুলো রাতে অরক্ষিত থাকে। এই সম্পদ ওয়াসার। তাই তা রক্ষা করার পরিকল্পনাও তাদের থাকা দরকার। তবে আমরা চুরির যেসব অভিযোগ পেয়েছি সেগুলোর তদন্ত চলছে। চোর চক্রকে ধরার চেষ্টা চলছে। ওয়াসা যে ঠিকানাসহ তালিকা দিয়েছে সেসব এলাকায় এরইমধ্যে পুলিশের রাত্রীকালীন টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’’

ঢাকা/কেয়া/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র চ র র ঘটন প ম প ঘর র র প ম প ঘর টহল ব দ ধ এল ক য় প সরবর হ এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ 

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। 

সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী  মো. আবু বকরকর সিদ্দিক।

তিনি জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটের গভর্নর ভাল্ব স্টিম সেন্সরের চারটি টারবাইন নষ্ট হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ১ নম্বর ইউনিটটি গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বন্ধ হয়ে গেছে।

মো. আবু বকরকর সিদ্দিক বলেছেন, বিকল হয়ে যাওয়া ইউনিটগুলো মেরামতের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। আশা করছি, বিকল যন্ত্রাংশ ঠিক করে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরবরাহ করতে পারব। 

প্রতিদিন বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটে ৫০ মেগাওয়াট এবং ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ১৬০ থেকে ১৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সাল থেকেই বন্ধ আছে। 

ঢাকা/মোসলেম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভেজাল তেলে গাড়ির ক্ষতি, খরচ বাড়ছে মালিকদের
  • সততা জাতির অগ্রযাত্রার চালিকা শক্তি: সিনিয়র সচিব 
  • বড়পুকুরিয়ায় সব ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ, ৮ জেলায় বিদ্যুৎ–বিভ্রাট
  • চীনের আধিপত্য মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার বিরল খনিজ চুক্তি
  • শেরপুরে পোস্ট অফিস থেকে জাল টাকা সরবরাহ, গ্রেপ্তার ২
  • ঠাকুরগাঁওয়ে সার সংকট নিরসনে এনসিপির স্মারকলিপি
  • বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ 
  • ৩ দিন বিদ্যুৎহীন মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
  • তেল চুরি শুরু জাহাজ থেকে