নড়াইলে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা, শিক্ষক পলাতক
Published: 23rd, October 2025 GMT
নড়াইল সদর উপজেলায় শ্রেণিকক্ষে এক শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম।
এর আগে গত মঙ্গলবার ওই ঘটনায় শিক্ষকের বিচারের দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম তরিকুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, চলতি মাসের ১৫ তারিখ বিকেলে ছুটির পর একটি শ্রেণির চার শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন তরিকুল। এ সময় এক শিশুশিক্ষার্থী মায়ের কাছে বাইরে যায়। দুই শিক্ষার্থীকে জাতীয় পতাকা খুলতে পাঠান তরিকুল। ওই ছাত্রী কক্ষে একা হয়ে পড়ে। এই সুযোগে কক্ষের দরজা বন্ধ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান তরিকুল। এ সময় ওই শিশুর চিৎকার ও কান্নার শব্দে অন্য সহপাঠীরা ছুটে যায়। তারা দরজা ধাক্কা দিয়ে খুললে ওই শিশুশিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেন তরিকুল।
শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় কাউকে না জানানোর জন্য তাদের কাছে অনুরোধ করেন ওই শিক্ষক। ওই শিশুশিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে তার মাকে বিষয়টি জানায়। তবে সম্মানহানির ভয়ে তাঁরা চুপ থাকেন। ঘটনার তিন দিন পর ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারেন। বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তরিকুল স্থানীয় পর্যায়ে তদবির চালান। পরে ওই শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় একটি মামলা করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। মানববন্ধনে তাঁরা বলেন, ‘শিশুদের মানুষ করার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠান অভিভাবকেরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে যদি শিক্ষকের দ্বারা এমন ঘটনা ঘটে—এটি মানা যায় না। শিশুরা তাহলে কার কাছে নিরাপদ? কোন ভরসায় তাদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন অভিভাবকেরা?’
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সাত দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তরিকুল। মামলার হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। তবে মামলা হওয়ার আগে তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয়। তিনি নির্দোষ। ষড়যন্ত্র করে তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এ ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন তর ক ল ওই শ শ ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
৩ দফা দাবিতে ৪৪তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডারদের মানববন্ধন
ইকবাল হোসেন বেসরকারি ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে আস্থা রেখেছিলেন দেশের অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক সরকারি পরীক্ষায়। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতার কারণে এখন বেকার বসে আছেন তিনি। প্রায় একই রকম সমস্যায় পড়েছে ৪৪তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হাজারো চাকরিপ্রার্থী। চাকরি পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েও সরকারি লাল ফিতার দৌরাত্ম্য প্রায় চার মাস ধরে ঝুলে আছে তাঁদের নিয়োগপ্রক্রিয়া।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ের সামনে ৪৪তম বিসিএসে চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। তাঁরা দ্রুত গেজেট কার্যক্রম শুরু করা, রিপিট ক্যাডারের বিধি সংশোধনের ব্যাখ্যা এবং চলতি বছরের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একজন সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডার বলেন, ‘প্রথমত আমাদের মানবিক দিকটি সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। রিপিট ক্যাডারদের সম্মতির ভিত্তিতে তাঁদের বাদ দিয়ে মেধাক্রম অনুযায়ী পরবর্তী প্রার্থীদের সুপারিশ করা উচিত। ফলাফল প্রকাশের প্রায় চার মাস অতিবাহিত হয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে ১ হাজার ৬৯০ প্রার্থী নিদারুণ মানসিক চাপ নিয়ে দিন যাপন করছেন।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা জানান, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ইতিমধ্যেই তিন বছর সাত মাস পার হয়েছে। ইতিহাসের দীর্ঘতম বিসিএসের রূপ নিতে যাচ্ছে এই ৪৪তম বিসিএসের নিয়োগ কার্যক্রম। এটি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
প্রার্থীরা মানববন্ধন থেকে তিনটি দাবি জানিয়েছেন। এক, ফাইল গেজেট কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা; দুই, ফল প্রকাশের পর আটকে থাকা রিপিট ক্যাডারের বিধি সংশোধনের দ্রুত ব্যাখ্যা প্রদান; তিন, চলতি বছরের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা।